আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পুলিশের গুলিতে এক জন নিহত, জামাতকে দায়ী করলেন হুইপ সাগুফতা ইয়াসমিন এবং এম.পি রঞ্জন ঘোষ



মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশের গুলিতে মোসলেম (৩০) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। বুধবার সড়ক দুর্ঘটনায় এক স্কুলছাত্রের মৃত্যুর জের ধরে ছাত্র ও স্থানীয় বাসিন্দারা গতকাল ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় পুলিশ গুলি চালালে মোসলেম নিহত হন। আহত হন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২৫ জন। বিক্ষুব্ধ জনতা প্রায় সাত ঘণ্টা মহাসড়ক অবরুদ্ধ করে রাখলে দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

নিহত মোসলেমের বাড়ি কেয়াইন মধ্যচর গ্রামে। তাঁর বাবার নাম মো. এহসান। তিনি মাছ বিক্রি করে বাড়ি ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হন বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সিরাজদিখানের কুচিয়ামোড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র মেহেদী হাসান (১৪) বুধবার বিকেলে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে বাসচাপায় নিহত হয়। এর প্রতিবাদে স্কুলের শিক্ষার্থীরা ওই দিন বিকেলে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে।

পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সায়দুজ্জামান ফারুকী ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার একজন প্রতিনিধি গতিরোধক নির্মাণের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেয়। কিন্তু গতিরোধক নির্মাণের কাজ শুরু না হওয়ায় ছাত্ররা গতকাল দুপুরে আবার সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এলাকাবাসীও বিক্ষোভে যোগ দেয়। একপর্যায়ে তারা গাড়ি ভাঙচুর শুরু করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে বিক্ষোভকারীরা।

তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ গুলি ছুড়লে মোসলেম ঘটনাস্থলেই নিহত হন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সায়দুজ্জামান ফারুকী বলেন, 'বিক্ষোভকারীরা সিরাজদিখান থানার সেকেন্ড অফিসার মুসফিকুর রহমানকে আটকে রেখেছিল। অবস্থা এমন ছিল যে গুলি না করলে হয়তো তারা পুলিশকেই মেরে ফেলত। ' সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ ২০ রাউন্ড রাবার বুলেট, ২০ রাউন্ড রাইফেলের গুলি এবং কাঁদানে গ্যাসের ১২টি শেল নিক্ষেপ করে বলে জানান তিনি। আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উমা কান্ত বলেন, সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ ছাত্র ও সাধারণ মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়।

আহতদের মধ্যে আদর্শ স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র রনি ও উজ্জ্বল, নবম শ্রেণীর আল আমিন, আলমগীর, ইসরাফিল, দিল মোহাম্মদ, অষ্টম শ্রেণীর সাগর সাহা ও কান্তি রাজবংশী, স্কুলের আয়া জরিনা (৫৫) এবং কলেজ ছাত্র জাহাঙ্গীরকে (১৯) স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এএসপি সায়দুজ্জামান ফারুকী জানান, সিরাজদিখান থানার ওসি মিজানুর রহমানসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। মোসলেম নিহত হওয়ার পর বিক্ষুব্ধ জনতা মহাসড়কের ওপর লাশ রেখে মাইকিং করে লোক জড়ো করতে থাকে। এ সময় তারা দায়ী পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তাৎক্ষণিক সড়কের ওপর গতিরোধক নির্মাণের দাবি জানাতে থাকে। পরে জাতীয় সংসদের হুইপ সাগুফতা ইয়াসমিন এ্যামিলি ও সংসদ সদস্য সুকুমার রঞ্জন ঘোষ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।

তাঁরা জনতাকে বুঝিয়ে মোসলেমের লাশ সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করেন। এ ঘটনায় পুলিশের ভূমিকাকে দায়ী করে হুইপ বলেন, 'জামায়াত জোটের দলীয় অনেকে প্রশাসনে থেকে সরকারকে বিব্রত করছে। যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়া চলছে, সেই মুহূর্তে এ ঘটনা অনেক কিছুর ইঙ্গিত দেয়। ' তিনি ঘোষণা দেন, নিহত মোসলেমের পরিবারের দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী গ্রহণ করবেন। দোষীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ সময় সেখানে উপস্থিত মোসলেমের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী কান্নায় ভেঙে পড়েন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.