আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্ষণিকের প্রেম

সাধারন মানুষের অসাধারন কথা বলতে চেষ্টা করি স্যারের বাসা থেকে পড়ে আসছিল ছেলেটি! মেইন রোড থেকে খানিকটা দূরে বাসা, হেটেই এসেছিল এতটুকু। এসেই দেখে বাস এসে গেছে, কিন্তু সে জায়গায় দাঁড়িয়ে সে জায়গায় বাস থামছে না... হটাত কি মনে হল, চলন্ত বাসের পেছনে দৌড় লাগাল... বাসের গতি কমার কোন লক্ষনই নেই। ছেলেটির মনে ও রোখ চেপে গেল, সে ও উসাইন বল্টের গতিতে দৌড়াতে লাগলো। বাসের যাত্রি সব রদ্ধ শ্বাসে দেখছিল এক সময় বাসের গতিকে হার মানিয়ে বাসে লাফ দিয়ে উঠে পড়ল বাসে। বাসে উঠেই দেখল প্রায় সবার দৃষ্টি তার দিকেই... কিছুটা লজ্জাই পেল! অন্তর্মুখী মানুষদের এমনটাই হয়... কিছুটা লজ্জায় চোখ নামিয়ে বাসের পেছনের দিকের সিট লক্ষ করে হাটা ধরল সে, একটু তাকিয়ে দেখে পেছনের সিটে তারই বয়সি এক মেয়ে উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, তার দিকে সে ও তাকাল সে দিকে।

মেয়েটার পাশে মাঝ বয়সি এক মহিলা বসা এবং তার পাশেই কিছুটা খালি জায়গা। মেয়েটার দিকে তাকিয়ে সে দিকে এগুচ্ছে ছেলেটি, এত ক্ষন চখাচখি হওয়ায় দুজনই চোখ নামিয়ে নিল। ছেলেটি বসল সে খানে... একটু পর পাশ ফিরিয়ে বাকা চোখে তাকাল মেয়েটির দিকে। দেখল মেয়েটি ও তাকিয়েছে তখন। একই সময় তাকিয়ে দুই জনই ধরা পড়ে যাওয়ায় লজ্জাই পেল দু জনই।

চোখ নামিয়ে ফেলল দু জনই। এরপর একবার ছেলেটি তাকায় বাকা চোখে, আবার ছেলেটি তাকায়। এভাবে চোর পুলিশ খেলা চলতেই থাকল, মাঝে মাঝে ক্রস ফায়ার হয়, লজ্জায় দুই জনই তখন চোখ নামায়। ছেলেটি খুব কমই মেয়েদের সংস্পর্শে এসেছে, সব সময় ছেলেদের স্কুল, তারপর কলেজটাও ছেলেদের কলেজ! কিভাবে কখন কি করতে হয় জানেই না... ছেলেটা হটাত সিডনি সেল্ডনের একটা বই বের করল ব্যাগ থেকে, একটা ইংরেজি বই! যতটা না পড়ার ইচ্ছে তার চেয়েও বেশী নিজেকে স্মার্ট হিসেবে জাহির করার চেস্টা!! হয়ত এভাবে ইংরেজি বই বের করে স্মার্ট প্রমান করার প্রচেস্টা নিতান্তই খ্যাঁত! বোঝেনি তখন! -আপা ভাড়া দেন? আমার পাশের মহিলা বলল- দুই জন কত?? এবার বোঝা গেল এরা মা ও মেয়ে! -৪০ টাকা! মেয়েটি বলল-আমি তো স্টুডেন্ট! -না! আইজ নাই... ভাড়া দেন তাড়াতাড়ি! -কেন নাই? এবার ছেলেটি বলে উথলো- আসলে আজ দুর্গা পুজার বন্ধ তো তাই স্টুডেন্ট নিচ্ছে না! -কিন্তু আমি তো যাই প্রতিদিন -আমিও যাই, আজ স্কুল কলেজ সব বন্ধ কিনা!! -ও একটু পর সামনের সিট খালি হওয়ায় ছেলেটি সামনে গিয়ে বসল। কিছুক্ষণ পর বিপরিতদিকের রো এর এক সিট খালি হওয়ায় মেয়েটি সেখানে এসে বসল! ছেলেটি আবার তাকাল মেয়েটির দিকে।

এবার ছেলেটির পাশের সীটটিও খালি হল, জানালার পাশে। কিছুক্ষন পর ছেলেটিকে অবাক করে দিয়ে এসে বলল, "আমি জানালার পাশে বসতে চাচ্ছি?" -হুম, বসুন না মেয়েটি আর ছেলেটি এবার পাশাপাশি , কিন্তু কেউ সাহস করে কথা বলছে না... একটু পর ছেলেটির গন্তব্য চলে এল। নেমে যেতে হবে...কিন্তু ছেলেটির নামতে ইচ্ছে করছিল না। তারপর ও নামতে হল তাকে! নামার সময় পেছন ফিরে তাকাল সে, দেখল মেয়েটি তাকিয়ে আছে, চোখের ভাষাটা পড়তে পারছে না, হয়ত আন্দাজ করতে পারছে। বাস থেকে নেমে গিয়ে দেখে মেয়েটি জানালা দিয়ে তাকিয়ে আছে... ছেলেটিও তাকিয়ে রইল! বাস দৃষ্টি সীমা থেকে হারিয়ে যাবার আগ পর্যন্ত!! * ছেলেটি আমি ছিলাম *মেয়েটি হিন্দু ছিল, কারন তার মায়ের কপালে সিদুর ছিল, আর পুজার লাস্টের দিনে রঙ মারা মারির কারনে মেয়েটির গালে সামান্য আর মায়ের গালের এক পাশে ভালই রঙ লেগেছিল! *গল্পটি অসমাপ্ত মনে হবে, কারন এটা আমার জীবনের গল্প যা এটুকুই ছিল! ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।