আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার দুষ্টামি বেলার বান্দর কাহীনি - ০১

এতটুকু বুঝি জীবনের কাছে আবেগ নস্যি।
ছোট যখন অনেক ছোট মানে দুই পা আর দুই হাত যখন দুই দিকে ছোড়াছুড়ি করি তখন থেকেই দুষ্টামি শুরুকরি... আমি তখন বেশি দুষ্টামি করতাম আম্মার সাথে। আমি আবার আম্মাভক্ত ছিলাম তার কোলে ছাড়া আমার ঘুমও আসতো না। যখনই আমাকে তার কোল ছাড়া করত আমি তখনই ফুল ভলি্উমে কান্নার গান শুরু করে দিতাম, আমার এই গান আশে-পাশের সবাইকে চরম বিরক্ত করত কিন্তু আমি কান্নার গান গাইতে অলস্যতা করতাম না। আমার দাদু এই গান শুনে অতি আনন্দে বলেই পেললেন(এর গলার যেই আওয়াজ) এই নাতিকে দিয়ে ছকিনা খতম পড়াইলে মাইক এবং মাওলানা কিছুই লাগবনা ও একাই একশ! ।

একদিন আম্মা আমাকে কোল ত্যাগকরত বিছানায় রেখে রান্না ঘরে না কোথায় গেলেন, এদিকে আমি আমার কান্নার গান গাইতে শুরু করলাম এমন সময় পিঠে পিপড়া জাতীয় কিছু একটা কামড় দেয়ায় আমি গড়ানি দিলাম। এতে করে আমি যেন সপ্তম আকাশ থেকে শূন্যে ভেশে জমিনে পড়লাম পরে আবিস্কার করলাম আমি খাঠের নিচে অবতরন করেছি। এদিকে আমি আমার শৈল্পিক মনে মাটিতে শুয়ে খাঠের নিচের অংশ অবলোকন কর্তেছি, আহা কি সুন্দর কারুকাজ চারটি পায়া একটা চানী তার উপর আমরা করি কত লাপালাফি। এমন সময় আমার মা জননী এসে দেখে তার দুষ্ট খাঠের উপর নেই, আপুকে জিজ্ঞেস করলো আপুও জানে না এটা শুনে আম্মাও কান্নার গান গাইতে শুরু করলো। আপু এর উপর বলে উঠলো মনে হয় ছেলে ধরায় নিয়ে গেছে, এতে করে গানের ভলিউম আরো অসয্য রকম বেড়ে গেলো।

আম্মার কান্নার গান শুনে মনে হচ্ছে আমার কানের ভেতর দিয়ে নাসা তার রকেট উৎক্ষেপন কর্তেছে। আমি আম্মার এই গান শুনে হাসিঁ চাপায় রাখতে পারলাম না, জোরে হাঁসতে গিয়ে দেখলাম আমার গলা থেকে কান্নার আওয়াজই বের হইতেছে । দুষ্ট বেলায় নানু বাড়ী খুব বালা পাইতাম কিন্তু নানু বাড়ীর ছোট মামার মোচ-ওয়ালা বন্ধুটা ছিলো আমার দুই নয়নের বিষ। ওই মোচ-ওয়ালা মামাটা আমাকে দেখলেই খালি কোলে নিয়া আদর করতে চেষ্টা করত, কিন্তু মামাটার মুখ থেকে সিগারেটের এমন গন্ধ আসতো যেন গরু মরে পঁচে-গলে যাচ্ছে। আর তার নাকের নিচের মোচ দেখলে আমার মনে হতো এ, যেনো অ্যামাজান জঙল! এক একটা মোচ মনে হতো এক একটা বাঁশের কন্ছি।

মোচ-ওয়ালা মামার এই দুইটা উপসর্গের কারনে তার কোলে যেতে আমার অনীহা ছিল কিন্তু তার পরেও তিনি আমাকে জোর করে কোলে তুললেন আমি নেমে যাওয়ার জন্য জোড়াজুড়ি করতেই আমাকে দমক দিয়ে বললেন তুই একটা পঁচা...এটা আমার মনে শেলের মতো বিধে গেলো মামাকে একটা শিক্ষা দেওয়ার দান্ধায় ছিলাম। আম্মার একটা চাছাতো বোন ছিলো যার সাথে ওই মোচ-ওয়ালা মামাটার মনে মনে একটু ভাব ছিলো ওরা দুই জন উঠোনে দাড়িয়ে কথা বলতে ছিলো তখনই আমি এক পা এক পা করে হাটা শিখতে ছিলাম উঠোনে, মামা আমাকে দেখা মাত্র কোলে নেওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠলো এদিকে আমিও কোলে না উঠার জন্য শক্ত ধরলাম, তার পরেও উনি জোর করে আমাকে কোলে নিলেন আমিও সম্পূর্ন শক্তিতে দিলাম মোচড়ানি এতেই মামার কোল থেকে পড়ে যেতে লাগলাম। পড়ার সময় আত্মরক্ষা হিসাবে মামার লুঙিতে ঝুলে থাকার চেষ্টা করলাম, কিন্তু মামা তার ইজ্জতের আত্মরক্ষা করার পূর্বেই আমি তার লুঙিসহীত মাটিতে অবতরন করেছিলাম। আন্টি এই দৃশ্য দেখে দৌড়ে ওনার বড়বোনের বাড়ীতে গিয়ে পালিয়েছে। আর মোচ-ওয়ালা মামার মনের ভালোবাসা কবর ওই দৃশ্যতেই হয়েছে ।

(ঘটনাগুলা স্মৃতিচারনমূলক)
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.