আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রিপনের জবানিতে দ্বিগম্বর যেভাবে

...... সৃষ্টিশীলতার সন্ধানে

আন্দোলন করতে আইছস। আন্দোলন শিখাইয়া দেব শালা। এ কথা বলেই পুলিশ হামলে পড়ে আমার ওপর। প্রথমেই বেল্ট টেনে খোলে। ছিঁড়ে ফেলে শরীরের জামা।

এরপর প্যান্ট টেনে খুলে দিগম্বর করে। পুলিশের হাতে দিগম্বর হওয়া ট্যাক্সিক্যাব চালক মো. রিপন খান গতকাল এভাবেই তার উপর নির্যাতনের বর্ণনা দেন। বলেন, সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে আমি ক্যাব নিয়ে মতিঝিল থেকে ফার্মগেটের দিকে যাচ্ছিলাম। পথেই শুনতে পাই আমাদের এক ক্যাব চালককে পুলিশ মারছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি পুলিশ সদস্যরা লাঠি দিয়ে নির্দয়ভাবে পেটাচ্ছে এক চালককে।

পুলিশের হাত ও পা ধরে বারবার সে ড়্গমা চাইছে। তাকে বাঁচাতে যেই যাচ্ছে তাকেও পেটাচ্ছে। কিন্তু পুলিশ তাদের কোন কথাই শোনেনি। তখন আমি গিয়ে এক সার্জেন্টকে ছেড়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করি। সঙ্গে সঙ্গেই আমার দিকে তেড়ে আসে।

এক পুলিশ সদস্য বলে ওঠে, এ হলো ওদের নেতা। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ সার্জেন্ট বলে ওঠে, শালা আন্দোলন করতে আইছস। আন্দোলন শিখাইয়া দেব। তখনই ওয়াকিটকিতে এক পুলিশ কর্মকর্তা মিথ্যা বার্তা পৌঁছে দেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের। তাদের জানান, চালকরা পুলিশকে মারধর করছে।

দ্রম্নত আরও ফোর্স পাঠান। তখনই শুরম্ন হয় মধ্যযুগীয় বর্বরতা। কয়েকজন পুলিশ সদস্য একযোগে আমার ওপর হামলে পড়ে। প্রথমে মাথার ডান পাশে জোরে ঘুষি মারে। দু’পায়ে লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে।

বন্দুকের বাঁট দিয়ে বেধড়ক পেটায়। একপর্যায়ে প্যান্টের বেল্ট খুলে ফেলে। হুক ধরে হ্যাঁচকা টান মারে। আমার প্যান্ট খুলে যায়। এক ট্রাফিক পুলিশ স্পর্শকাতর জায়গায় লাঠি দিয়ে খোঁচা মারে।

টেনে ধরে। আমি বার বার ইজ্জত রড়্গার অনুরোধ করি। প্যান্ট পরার জন্য আকুতি জানাই। কিন্তু তারা কোন কথাই শুনেনি। দু’হাত দু’জনে ধরে ওই অবস্থাতেই মারতে থাকে।

আমি অচেতন হয়ে যাই। আর কিছু মনে নেই। পরে যখন সংজ্ঞা ফিরে দেখি আলরাজি হাসপাতালে আমি। সেখানে প্রচণ্ড বমি ও রক্তড়্গরণ হয়। দেড় ঘণ্টা চিকিৎসা শেষে আমাকে তেজগাঁও থানা হাজতে নেয়া হয়।

সেখানে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যনত্ম স্বজনদের কারও সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেয়নি। কোন খাবারও দেয়নি। ২৪ ঘণ্টা না খাইয়ে রেখেছে। আটক ৮ জনের মধ্য থেকে ট্যাক্সিক্যাব চালক রাশেদুল হাসান ও বিলস্নালকে গভীর রাতে লক আপের পাশের রম্নমে নির্যাতন করে। দুহাত দুদিকে টান টান করে বেঁধে প্রায় ঘণ্টাখানেক তাদের নির্দয়ভাবে পেটায়।

তাদের আর্তচিৎকারে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। তিনি জানান, গতকাল দুপুরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে পুলিশের কাছে ফোন আসে। পরে আমাদের অভিভাবকদের ডেকে এনে সাদা কাগজে দসত্মখত নিয়ে ছেড়ে দেয়। সেখানে নাম, স্ত্রীর নাম, পিতার নাম, সবার মোবাইল ফোন নম্বর ও বাসার ঠিকানা লেখা হয়।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।