আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুরতাদ গোত্রের নিকট সিদ্দীক আকবরের খোলা চিঠি।

যে ব্যক্তি সত্কর্মপরায়ণ হয়ে স্বীয় মুখমন্ডলকে আল্লাহ্ অভিমূখী করে. সে এক মজবুত হাতল ধারন করে. সকল কর্মের পরিণাম আল্লাহর দিকে। সিদ্দীকে আকবর (রা) মদীনায় আগমন করেই সর্বপ্রথম একটি ফরমান লিপিবদ্ধ করেন এবং তার বিভিন্ন কপি করিয়ে দূত মারফত প্রত্যেক মুরতাদ গোত্রের নামে এর এক-একটি কপি প্রের করেন। দূতকে বলা হলো যে, সর্বপ্রথম গিয়ে গোটা গোত্রের লোকদেরকে একটি সমাবেশে ডেকে এই ফরমান শুনিয়ে দিতে হবে। এই ফরমান বা ঘোষণার সাধারণ বিষয়বস্তু ছিল নিম্নরুপঃ হযরত রাসূলুল্লাহ (সা)-এর খলীফা আবূ বকরের তরফ থেকে প্রত্যেক সেই ব্যক্তির প্রতি, যার নিকট এই ফরমান পৌঁছবে সে ইসলামের উপর কায়েম থাকুক রা ইসলাম ত্যাগ কওে থাকুক। জানা আবশ্যক যে, আল্লাহ তায়ালা হযরত মুহাম্মদ (সা)-কে সত্য নবীরুপে প্রেরণ করেছেন।

যিনি সুসংবাদাতা, ভীতি প্রদর্শনকারী, আল্লাহর নির্দেশে মানুষকে আল্লাহর দিকে আহ্বানকারী এবং হিদায়াত দান করেন এবং সাফল্যের সোজা পথ প্রদর্শন করেন। আর যে ব্যক্তি অস্বীকার করে, আল্লাহর নির্দেশে তাকে জিহাদের মাধ্যমে বশ্যতা ও আনুগত্যের প্রতি ফিরিয়ে আনা হয়। আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন করা, মুসলমানদের নসীহত করা এবং স্বীয় কর্তব্য ও প্রচার কার্য সুষ্ঠুরুপে সম্পন্ন করার পর হযরত নবী করীম (সা) এ দুনিয়া হতে বিদায় গ্রহণ করেছেন। আল্লাহ তায়ালা এ খবর কোরআন মজীদে পূর্বেই দান করেছিলেন। (তুমিও মরণশীল এবং তারাও মরণশীল) সূরা যুমার, আয়াত ৩০।

আমি তোমার পূবেও কোন মানুষকে অনন্ত জীবনদান করিনি। সুতরাং তোমরা মৃত্যু হলে তারা কি চিরজীবী হয়ে থাকবে? সূরা আম্বিয়া, আয়াত ৩৪। এবং মুসলমানদেরকে এরুপ সম্বোধন করে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে- মুহাম্মদ একজন রাসূল মাত্র। তার পূর্বে বহু রাসূল গত হয়েছে। সুতরাং যদি সে মারা যায় অথবা সে নিহত হয়, তবে তোমরা কি পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে ? এবং কেউ পৃষ্ঠ প্রদর্শন করলে সে কখনো আল্লাহর ক্ষতি করতে পারবে না।

বরং আল্লাহ শীঘ্রই কৃতজ্ঞদেরকে পুরস্কৃত করবেন (সূরা আলে ইমরান, আয়াত ১৪৪)। কাজেই যে ব্যক্তি মুহাম্মদ (সা)-কে পূজা করতো, (তার জেনে রাখা উচিত যে,) মুহাম্মদ নিঃসন্দেহে ইনতিকাল করেছেন। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি একক আল্লাহর উপাসনা করতো, তার আল্লাহ জীবিত ও বর্তমান আছেন। তিনি না মৃত্যুবরণ করেছেন, না তাকে নিদ্্রা ও তন্দ্রা স্পর্শ করতে পারে। তিনি তাঁর নির্দেশ রক্ষা করেন এবং আপন দলের মাধ্যমে শত্র“র নিকট থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করেন।

আমি তোমাদেরকে আল্লাহকে ভয় করা, নবীর আনীত নূর ও আল্লাহর রহমতে অংশ গ্রহণ করা, ইসলামের হিদায়াত কবূল করা এবং আল্লাহর দীনের মযবুত রশি আঁকড়ে ধরার উপদেশ প্রদান করছি। আল্লাহ যাকে হিদায়াত করেননি, সে পথভ্রষ্ট হয়েছে। আর যাকে আল্লাহ নিরাপত্তা দান করেননি, সে বিপদে পতিত হয়েছে। আল্লাহ যাকে সাহায্য করেন না, সে এক ও একাকী এবং বদ্ধুহীন ও অসহায়। মানুষ যতক্ষণ ইসলামকে অস্বীকার করবে, দুনিয়া ও আখিরাতে তার কোন আমল কবূল হতে পারে না।

আমি অবগত হয়েছি যে, তোমাদের মধ্য থেকে কিছু লোক ইসলাম গ্রহণ করা ও তার আজ্ঞা ও নির্দেশাবলী পালন করার পর আল্লাহ থেকে মূখ ফিরিয়ে মূর্খতা ও শয়তানের আনুগত্যের প্রতি ঝুঁকে পড়েছে। তোমরা কি আল্লাহকে ত্যাগ করে তোমাদের দুশমন শয়তান ও তার সন্তান-সন্ততিকে বন্ধু বানিয়ে নিচ্ছ ? অথচ আল্লাহ বলছেন, শয়তান তোমাদের শত্র“। তাই তোমরাও তাকে তোমাদের শত্র“ জ্ঞান করো। কেননা, তারা তো তাদের দলকে (তোমাদের )দোযখী বানানোর জন্য উদ্বুদ্ধ করছে। আমি তোমাদের প্রতি মুহাজির ও আনসার বাহিনীকে প্রেরণ করছি।

তারা সত্যের অনুসারী। আমি তাদেরকে নির্দেশ দিয়েছি যে, প্রথমে ইসলামের দাওয়াত দেয়া ছাড়া কারো মুকাবিলা করবে না। আমি আরো নির্দেশ দিয়েছি যে, যে ব্যক্তি ইসলাম কবূল করবে এবং মন্দ কাজ থেকে ফিরে থাকবে, নেক কাজ বর্জন করবে না, তাকেই সাহায্য করবে। আর যে ইসলামকে অস্বীকার করবে, তার মুকাবিলা করবে তাকে মোটেই শ্রদ্ধা ও সম্মান করবে না, আর ইসলাম ছাড়া অন্য কিছু গ্রহণ করবে না। অতএব, যে ব্যক্তি ঈমান আনয়ন করবে, সে কল্যাণ লাভ করবে, অন্যথায় সে আল্লাহকে অপারগ করতে পারবে না।

আমি আমার কাসিদকে নির্দেশ দিয়েছি যে, আমার এই ঘোষণাকে প্রত্যেক জনসভায় পাঠ করে শোনাবে। ইসলামী লশকর যখন তোমাদের নিকট পৌঁছে যাবে এবং তাদের মুআযযিন আযান দেবে, তখন তোমরাও তাদের মুকাবিলায় আযান দেবে। এতে প্রতীয়মান হবে যে, তোমরা যদি আযান না দাও, তবে তোমাদের নিকট কৈফিয়ত তলব করা হবে এবং অস্বীকার করলে তোমাদের উপর হামলা করা হবে। ” *** ইসলামিক ইতিহাস*** ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.