আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশ সরকারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রনোদিত গ্রেফতার বন্ধ করতে হবে : এ্যামনেস্টি

সাধারণ মানুষ যার জানার কিছু ইচ্ছা আছে।

বাংলাদেশ সরকারকে অবশ্যই অন্যায়ভাবে গণগ্রেফতার বন্ধ করতে হবে, যা কেবল বিরোধী ছাত্র সংগঠনের কর্মীদের লক্ষ্য করেই পরিচালিত হচ্ছে বলে প্রতীয়মান হয়। সন্দেহভাজন ব্যক্তির রাজনৈতিক পরিচয় যাই হোক, অপরাধ তদন্ত অবশ্যই নিরপেক্ষ হতে হবে। অধিকন্তু কর্তৃপক্ষকে আটক ব্যক্তিদের দ্রুত আদালতে নিয়ে আসা নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাদের আটকাদেশ চ্যালেঞ্জ করার ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে করে তারা নির্যাতন কিংবা অসদাচরণের ঝুঁকিতে না থাকে।

আটককৃতদের আইনজীবী ও পরিবারের সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎ এবং যথাযথ চিকিৎসাও নিশ্চিত করতে হবে। ‘‘বাংলাদেশে : রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত গণগ্রেফতার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে সংঘটিত সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের নিরপেক্ষ তদন্তে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে’’ এ শীর্ষক এক বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গত ২৩ ফেব্রুয়ারি এ অভিমত ব্যক্ত করেছে। বিবৃতিতে লন্ডনভিত্তিক এ আন্তর্জাতিক সংস্থাটি বলেছে, গত সপ্তাহে জামায়াত সমর্থিত ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের তিনশতের অধিক ছাত্রকে ঢাকা, রাজশাহী, চিটাগাং এবং অন্যান্য শহরে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বেশীরভাগই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর এবং বাইরের ডরমিটরী এবং ভাড়া বাসা থেকে আটক করা হয়। এটি জ্ঞাত নয়, তারা ঠিক কোন ধরনের অপরাধে অভিযুক্ত।

বাংলাদেশের অধিকাংশ ইউনিভার্সিটিতেই সন্ত্রাসের কারণে গ্রেফতার অভিযান হয়ে থাকে। যেখানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং বিরোধী দলের ছাত্র সংগঠন ইউনিভার্সিটির আবাসিক হল নিয়ন্ত্রণে পরস্পর সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। গত ফেব্রুয়ারি থেকে এ সমস্ত সংঘাতের শিকার হয়ে ঢাকাতে একজন, রাজশাহীতে ২ জন এবং চিটাগাংয়ে একজন নিহত হন। ফেব্রুয়ারি ২ তারিখে আওয়ামী লীগের অংগসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বিরোধী দুই গ্রুপের ভয়ানক সংঘর্ষে ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে একজন নিহত হন। অথচ এই ঘটনার তদন্ত হয়নি।

এই ঘটনার তদন্তে সরকারের স্পষ্ট নির্লিপ্ততা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসকে রাজনৈতিক মদদ দেয়ার কারণ নিহিত রয়েছে। রাজশাহী, চিটাগাং এবং অন্যান্য ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসসমূহে ছাত্রলীগ ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাথে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। যখন ছাত্রশিবিরের কর্মীদের গণগ্রেফতার অভিযানে প্রধান টার্গেট করা হয়, তখন ছাত্রলীগ কর্মীরা তাদের সংঘাত এবং বিরোধী সমর্থকদের উপর আক্রমণ নিরবচ্ছিন্নভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ কোন জবাবদিহিতা নেই। এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসসমূহে সন্ত্রাস প্রতিরোধ এবং হত্যাকান্ডের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি করা সরকারের দায়িত্ব বলে মনে করে।

সরকারের একপেশে আচরণ, পুলিশ কর্তৃক পরিচালিত গণগ্রেফতার এটাই প্রমাণ করে যে, অপরাধ তদন্তে তারা নিরপেক্ষ নন। বিভিন্ন ছাত্রাবাসে ব্যাপক পুলিশী তল্লাশি চালানো হয় এবং ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থকদের যেখানেই পাওয়া গিয়েছে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ রয়েছে অন্যায়ভাবে বাছবিচার না করেই পুলিশ সাধারণ শিবির কর্মীদের গ্রেফতার করে। অথচ তারা খতিয়ে দেখেনি, কারা সংঘাতে সন্দেহভাজন। আটককৃতদের অধিকাংশই জেলে আটক।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ৭০-এর বেশি আটক রয়েছেন, রাজশাহীতে ১০০ এবং চিটাগাংয়ে ৭০। আরও অনেক ছাত্রদের অন্যান্য শহর থেকে উঠিয়ে আনা হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য মতে আইনজীবীদেরকে আটককৃতদের সাথে সাক্ষাতের অনুমতি দেয়া হয়নি। এভাবেই তাদেরকে আইনজীবী নিয়োগের অধিকার এবং জামিন আবেদনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়। ৩০ থেকে ৩৫ জন শিবির কর্মী এখনও জিজ্ঞাসাবাদের নিমিত্তে পুলিশ কাস্টডিতে আছে।

বাংলাদেশে পুলিশ কাস্টডিতে রেখে নির্যাতন বহুল আলোচিত। পুলিশ কাস্টডিতে রেখে রিমান্ড চলাকালে আটককৃতদের আইনজীবী এবং পরিবারবর্গের সাক্ষাতের কোন অধিকার নেই যদিওবা এ ধরনের আইনগত অধিকার রয়েছে। সরকারের সন্ত্রাসের প্রতি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মনোভাব সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনকে আরও সহিংস হওয়ার অনুপ্রেরণা দিচ্ছে। এমনকি সাংবাদিকরাও এই আক্রমণ থেকে রেহাই পাচ্ছে না। ছাত্রলীগের কর্মীরা বিভিন্ন দৈনিকের কমপক্ষে ১১ জন সাংবাদিককে হামলা করে জখম করে।

যারা ছাত্রলীগ ফেব্রুয়ারি ১১ তারিখে রাজশাহীতে অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ার খবর পরিবেশন করছিল।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.