আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উত্তরাধীকার সম্পত্তিতে নারী-পুরুষের সমানাধিকার: পুরুষের ভাবনা

রাজনীতির আবর্জনাগুলো বাদ দিলে আপনার সাথে আমার দ্বিমত খুবই সামান্য।

সম্পত্তিতে নারী-পুরুষের সমানাধিকার না মানার হুমকি,প্রথম আলোর এই খবরটাই এই লেখার প্রেরনা। details আমার কাছে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষকেই কাজে কর্মে স্যাকুলার মনে হয়। সহজ লজিক হল;অধিকাংশ মানুষ বাই ডিফলট মুসলিম,ধর্ম হিসেবে সনাতন ধর্মের মতই ইসলামকে পেয়েছি কিন্তু বুযে শুনে এই ধর্মকে জীববিধান মানার প্রয়োজনীয়তা ফিল করিনা(সবার চয়েসকে সম্মান করি) যার কারনে ধর্ম বিশ্বাস মসজিদ বা মন্দিরে সীমানায় সীমাবদ্ধ এর পরে দুনিয়াবী কাজে ধর্মের কোন এর প্রভাব থাকেনা। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে ধর্মকে ব্যবহার করি নিজের স্বার্থের প্রয়োজনেই।

সম্পত্তিতে উত্তরাধিকার এর অন্যতম একটি। উত্তরাধিকার প্রশ্নে কোরআনের ভাষ্য দিয়েই শুরু করি; আল্লাহ নির্দেশ দিচ্ছেন তোমাদের সন্তানসন্ততি সম্পর্কেঃ এক ছেলে পাবে দুই মেয়ের অংশের সমান;যদি দুই মেয়ের বেশী থাকে তবে তারা পাবে যা সে রেখে গেছে তার দুই-তৃতীয়াংশ,আর যদি একে মেয়ে থাকে তবে সে পাবে অর্ধেক,আর তার যদি সন্তান থাকে তবে তার পিতামাতা প্রত্যেকে পাবে তার ছয়ভাগের একভাগ,কিন্তু যদি তার সন্তান না থাকে,শুধু পিতামাতা তার উত্তরাধিকার হয় তবে তার মা পাবে তিন ভাগের এক ভাগ; কিন্তু যদি তার ভাইয়েরা থাকে তবে তার মা পাবে ছয়ভাগের একভাগ,মৃত ব্যক্তির অসিয়তের দাবি বা ঋন পরিশোধের পরে । তোমাদের পিতামাতা ও তোমাদের সন্তানরা,তোমরা জানোনা এদের মধ্যে কে তোমাদের উপকারের দিক দিয়ে বেশী আপন । এ আল্লাহর বিধান । আল্লাহ সর্বজ্ঞ তত্বজ্ঞানী।

সুরা নিসা আয়াত ১১: একজন পুরুষ উত্তরাধিকারসূত্রে শুধুমাত্র পিতা-মাতার সম্পত্তি থেকেই অংশ পায়। অন্যদিকে একজন নারী সন্তান হিসেবে পিতা-মাতার কাছ থেকে, স্ত্রী হিসেবে স্বামীর কাছ থেকে, মা হিসেবে সন্তানের কাছ থেকে সম্পত্তির অংশ পায়। সবগুলো অংশ যোগ করলে নারীর অংশের সম্পত্তি, পিতা-মাতার কাছ থেকে পাওয়া পুরুষের অংশের সম্পত্তির চেয়ে বেশীই হওয়ার কথা। পুরুষ উত্তরাধিকারসূত্রে সম্পত্তি একটু বেশি পাওয়ার কারনে সাধারনত নিম্নলিখিত কাজগুলো করে ১) বাবা মায়ের দেখাশুনা, চিকিৎসা ২) বাড়িতে কোন আত্নীয় (বোন, বোনের জামাই) এলে সকল খরচ ভাই বহন করে থাকে ৩) স্ত্রীর ভরণপোষণ থেকে শুরু করে সংসারের যাবতীয় খরচ স্বামীর, স্ত্রীর কোন দায়িত্ব নেই ৪) পরিবারের ছোট ভাই বোন থাকলে তাদের লেখাপড়ার খরচ বহন করতে হয় বড় ভাইকে । ৫) বোনের বিয়ের যাবতীয় খরচ ইত্যদি।

সম্পত্তিতে সম অধিকারের নামে সমান সমান অর্থ দিলে এই সকল কাজ করার পরেও যদি ভাইকে অর্ধেক সম্পত্তি দিয়ে বোন অর্ধেক নিতে চায় তাহলে এখন থেকে উপরের কাজগুলি ও কি নারীকে সমান ভাবে ভাগ করে নেয়া যুক্তিসঙ্গত নয়?? একজন আধুনিক মনা বাই ডিফল্ড মুসলিম পুরুষ হিসবে সম্পত্তিতে আমার বোনদের সমান উত্তরাধীকারে আমার কোনো আপত্তি নাই। তবে কিছু প্রশ্ন যদি নির্যাতিত পুরুষ সমাজ কিছুদিন পর করা শুরু করে তাহলে কিন্তু ঘটনা অন্যদিকে মোড়ও নিতে পারে, যেমন; সমান সমান নীতি অনুযায়ী মোহরানা উঠায়ে দেয়ার দাবী, পরিবারের খরচের অর্ধেক নারীকে উপার্জন করার দাবী ইত্যাদি। এগুলো বাস্তবায়ন হলে আমাগো টেনশন অর্ধেক কমে যাবে,বিয়ের জন্য এই ব্লগের আমার মত অনেকেই হয়ত সোজা হয়ে দাড়াবে, আর কখোনো ডিভোর্স হয়ে গেলে খোরপোষ দেয়ার ঝামেলাও থাকলো না, আহা কি মজা...তাইনা? প্রধানমন্ত্রী যখন সম্পত্তিতে নারীদের সমান উত্তরাধীকারের ঘোষনাই দিলেন সাথে সাথে আমাদেরও কিছু দাবী আছে; নারী হলে ডিগ্রী পর্যন্ত ফ্রি পড়তে পারবে, কিন্তু পুরুষ কি দোষ করছে? চাকরীর ক্ষেত্রে নারী কোটা কেন? সম অধিকার হলে সে তার যোগ্যতা দিয়ে চাকরী নিবে...আপনারা আরো কিছু যোগ করতে পারেন... আসল কথা হল: লেলিন, কালমার্কস, মাওসেতুং তারাও চেয়েছিল অর্থের সমবন্টনের ভিত্তিতে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে, পারেনি, সমাজতন্ত্র মুখ থুবড়ে পড়েছে। আল্লাহ যে সকল বিধান দিয়েছেন তা অনেক যুক্তিসংগত, ইনসাফভিত্তিক। কিন্তু আমরা পুরুষরা তাদের প্রাপ্য যথাযথ দেইনা বলেই আজকে এই দাবী।

আমার মতে নারীরা আমাদের চেয়ে কম নয় বরং বেশিই পাওয়ার কথা যদি তাদের পাওনা সঠিক ভাবে পরিশোধ করা হয়। সম্মানের দিক থেকে মায়ের(নারীর) পায়ের নিচেই সন্তানের বেহেসত এর কথা বলা হয়েছে। মেয়েদের লালন-পালনের জন্য রাসুল (সঃ) অনেক উৎসাহ দিয়েছেন। কিন্তু সমাজের বর্তমান তথাকথিত আলেমগনই আজকের এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী বলে মনে হয়। ইসলামের ধারক-বাহক হয়ে ওরা এ ব্যপারটা ভালভাবে না বুযিয়ে আন্দোলনের নামে অহেতুক নারীদের চোখে ধর্মের ব্যাপারে নেগেটিভ একটা ইমেজ তৈরিতে ভূমিকা রাখছে বলে মনে হয়।

আর তার সুযোগ নিচ্ছে সোকল্ড নারীনেত্রীরা সর্বোপরি পুরুষ হিসেবে নারীদের চোখে আমাদেকে প্রশ্নের সম্মুক্ষীন করছে কারন শত হলেও আন্দোলন কারীরা আওয়ামী-বিএনপি-জামাত না তারা পুরুষ। another relevant post


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।