আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাঝে মাঝে তব দেখা পাই,সারাদিন কেন পাইনা

আমার কাফন আমি চাদরের মত পরে কতদিন আন্দোলিত হবো

সেই ছেলেবেলা থেকে একসাথেই বড় হয়েছিলাম। তারপর থেকে কখনও তুমি আমায় ছেড়ে চলে যাওনি। একসাথেই চলেছি জীবনের অনেকটা পথ। প্রথম কবে তোমায় দেখেছিলাম সে আমার মনে নেই। তবে তোমার স্মৃতি আমার হৃদয়ে চিরজাগরুক হয়ে আছে।

ছেলেবেলায় একদিন তুমি আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছিলে। আমি অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম, তুমি আমার আপুটাকেও সেদিন ধাক্কা দিয়েছিলে। দু’ভাইবোনকে অত চমকে দিয়ে, ঝাঁকিয়ে দিলেও তোমাকে ছেড়ে কখনও চলে যাইনি। তুমিও বন্ধু হয়েই ছিলে সবসময়। অবশ্য সেদিনের পর থেকে তোমাকে বেশ সমঝে চলি– কখন আমার উপর ক্ষেপে কষ্ট দিয়ে দাও সেটা ভেবে! তুমি অবশ্য অনেক দুষ্টু ছিলে, মাঝে মাঝেই আমাকে ফেলে চলে যেতে।

আমার মনে আছে, অনেক শখ করে যখন খেলতে বসি, অথবা খেলা দেখতে বসি সবাই মিলে, তখন বেরসিকের মতন তুমি চলে যাও। আর তুমি ছাড়া আমাদের ভালো লাগেনা বলে আমরাও চুপটি মেরে যাই তখন… অতীতে তুমি যেমনই থাক, এখন তো তুমি বেমালুম দূরে চলে গেছ। হে ইলেকট্রিসিটি, ডিজিটাল বাংলাদেশে এসে ভেবেছিলাম তোমায় নিয়ে স্বপ্ন দেখব। কম্পিউটার প্রকৌশল পড়তে এসে ভেবেছিলাম তোমায় নিয়েই আমরা এদেশকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবো… অথচ ইদানিং তুমি শুধু বেড়াতে আসছ। গেলো বছর তুমি আমার নয় হাজার টাকা দাম দিয়ে কেনা মাদরবোর্ডটা নষ্ট করে দিলে আসা-যাওয়ার নিদারুণ যন্ত্রণা দিয়ে।

এখন আমার ইউপিএস তোমার অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করতে পারছেনা। আমি খুব ভয়ে আছি। কিছুই করা হয়ে উঠছে না। অনেকক্ষণ পরে পরে এসে তুমি আমাদের দেখা দিয়ে যাচ্ছ… গতকাল থিসিসের রিপোর্টখানি খুব সুন্দরমত আর সময় মতই দিতে পারতাম। কিন্তু তোমার যন্ত্রণায় আর পারা যায়নি।

বলতে গেলে স্যারের অনুগ্রহ ভিক্ষা করেই আজ সময় নিয়েছিলাম। তবু কতবার যে কেঁচে গন্ডুষ করতে হয়েছিলো!! মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাইনা কবির কবিতাটা আমার বদলে দিতে হলো। তবু তোমার উদ্দেশ্যে কিছু তো লেখা হলো! খুব ভালো করে জানি, যা শুরু হয়েছে তা আর বদলে যাবে না। উন্নতির জন্য বদলে যাবার প্রত্যয়ে নতুন সরকার এলো, দেশের সবকিছু নাম বদলে গেলো…ভাগ্য আর বদলে গেলো না… বাসায় ছোটবোনের সাথে কথা হয়, আম্মুর সাথে কথা হয়– চলে যায় আর দুইঘন্টা পর ফিরে বটে, কিন্তু দু’ঘণ্টা থাকেও না। আমার বয়স হয়ে যাওয়া আব্বু-আম্মুর কষ্ট ভেবে খারাপ লাগে… কিছুই করার নাই হয়ত।

আমরা এমন একটা জাতি যারা ১২০০ কোটি টাকা দিয়ে একজন জাতীয় নেতার নাম সংবলিত বিমানবন্দর এর নাম বদলে দিতে পারি, অথচ সেই টাকার অপচয়টুকু না করে দিব্যি একটা পাওয়ার প্ল্যান্ট বসিয়ে ফেলা যেত! আর কত বলবো! আমাদের জাতির চরিত্র না বদলালে বোধকরি ভোগান্তি কোনদিন কমবে না। চুরি-ঘুষ- মজুতদারী, মিথ্যা– কোথাও তো আমরা কম যাইনা। মানব চরিত্রের ন্যুনতম জিনিসগুলোই আমাদের নেই! ধর্মপালন তো দূরের হিসেব বলে মনে হয় আমার কাছে… বোধহীন একটা জাতি আমরা… ধুরর, আর ভাবতে ইচ্ছে করেনা! শুধু একটা কথাই ঠিক করে জানি– বাংলাদেশের মানুষের মানুষের দুর্ভোগের যে শুরু হয়েছিলো, সেই পথচলা হয়ত আর কখনও শেষ হবেনা …


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.