আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নামবদলের দেড় মাস : বিমানবন্দরের নতুন নামে নিয়নসাইন হচ্ছে



জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তনের পর গত দেড় মাসে হুলস্থুল কাণ্ড ঘটে গেছে। রাজনৈতিক কারণে বিমানবন্দরের অতি উত্সাহীরা নিয়নসাইন বোর্ডের জায়গায় কাপড়ে লেখা ব্যানার ঝুলিয়ে দেয়। কাপড়ের ব্যানার আকাশপথে যাতায়াতকারীদের মাঝে হাস্যরস সৃষ্টি করলেও বিমানবন্দরের সংশ্লিষ্টরা এ ব্যাপারে নিশ্চুপ। প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে বিমানবন্দরের নিয়নসাইন বোর্ডগুলোতে নতুন নাম বসানোর কাজ শুরু করা হলেও কবে নাগাদ শেষ হবে তা নির্দিষ্ট করে সংশ্লিষ্টরা বলতে পারেননি। জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ‘জিয়া’ বাদ দিয়ে ‘হজরত শাহজালাল’ করার পর নামের পরিবর্তন নিয়ে একের পর এক ঘটনা ঘটে।

গত দেড় মাসে নিয়নসাইন না বসিয়ে সেখানে রঙিন কাপড়ে লেখা অস্পষ্ট ব্যানার ঝুলিয়ে রাখা হয়। দেশের একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নামের নিয়নসাইনের বদলে নতুন লেখা রঙিন কাপড়টি পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। যাত্রীদের মাঝে এটা রসাত্মক আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। বিমানবন্দর সূত্র জানায়, মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের পর নতুন নিয়নসাইন তৈরি না করেই রাজনৈতিক কারণে তড়িঘড়ি করে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নামফলক থেকে ‘জিয়া’ তুলে ফেলা হয়। তারপর থেকে গত দেড় মাসে বিমানবন্দরের নাম নিয়ে হুলস্থুল কাণ্ড ঘটে যায়।

মন্ত্রিসভায় জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তন করার সিদ্ধান্তের পর গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বিমানবন্দরের অতি উত্সাহী কিছু লোক নিয়নসাইন থেকে জিয়া নামটি ফেলে দিতে শুরু করে। তারা প্রথমে ‘জিয়া’ নামকে ‘জয়’ করার প্রক্রিয়া শুরু করে। এ খবর পেয়ে মিডিয়া কর্মীরা বিমানবন্দরে উপস্থিত হলে বিমানবন্দর কর্মীরা খুলে ফেলা অংশ জোড়া লাগিয়ে পুনরায় ‘জয়’কে জিয়া করেন। বিমানবন্দর সূত্র জানায়, বিমানবন্দরের একদল অতি উত্সাহী কর্মী ২ নম্বর টার্মিনালের ছাদে উঠে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নামের ‘জিয়া’কে জয় করার জন্য আগের ও পেছনের অংশ খুলতে শুরু করে। ওইদিন বেলা ১১টার দিকে জিয়া’কে জয় করার জন্য তারা ‘ ি’ উঠিয়ে ফেলে।

খবর পেয়ে মিডিয়া কর্মীরা বিমানবন্দর পৌঁছে ছবি তোলেন। সাংবাদিক দেখে তারা নেমে পড়েন। পরে বেলা ৩টার দিকে আবার কিছু কর্মী বিমানবন্দরের ২ নম্বর টার্মিনালের ছাদে উঠে খুলে ফেলা অংশ জোড়া দিয়ে পুনরায় ‘জিয়া’ নাম ঠিক করা হয়। তবে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকালের পর থেকে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ‘জিয়া’ অংশের বাতি নিভিয়ে রাখা হয়। ফলে রাতে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নামের ‘জিয়া’ দেখা যায় না।

দূর থেকে শুধু ‘আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’ দেখা যায়। ১৭ ফেব্রুয়ারি একটি লাল কাপড়ের ওপর সাদা রং দিয়ে লেখা নতুন নাম নিয়নসাইনের জায়গায় ঝুলিয়ে দেয়া হয়। তারপর আস্তে আস্তে খুলে ফেলা হয় নিয়নসাইনের সবগুলো অক্ষর। ঢাকার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম দিনের আলোতে অস্পষ্ট অক্ষরে একটি রঙিন ময়লা কাপড়ের ব্যানারে দেখা গেছে। রাতে বিমানবন্দরের নাম দেখা যায় না।

ঢাকার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নাম ছাড়াই চলেছে প্রায় দেড় মাস। এখনও এটি চলছে। সিভিল অ্যাভিয়েশন সূত্র জানিয়েছে, আগের ফ্রেমেই হজরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিয়নসাইন বসানোর জন্য প্রায় এক কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে। এতে ৬টি নিয়নসাইনে বাংলা, ইংরেজি ও আরবিতে বিমানবন্দরের নতুন নাম লেখার কাজ শুরু করা হয়েছে। ঢাকার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা নূরুল ইসলাম গতকাল আমার দেশকে জানান, কোটি টাকা ব্যয়ে ৬টি নিয়নসাইনের কাজ চলছে।

এ মাসেই বিমানবন্দরের নাম লেখা শেষ হবে। বিমানবন্দরের সামনের দিকে ৩টি এবং রানওয়ের দিকে ৩টি নিয়নসাইন বোর্ড বসানো হচ্ছে। ঢাকার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক উইং কমান্ডার শাহিদুর রহমান গতকাল আমার দেশকে জানান, বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তনের সরকারি সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী কাজ চলছে। নাম লেখার কাজ কবে নাগাদ শেষ হবে তা সঠিক করে বলা যাচ্ছে না।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।