আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অপচয় করা প্রতিটি ওয়াট্‌...........

এত লেখালেখির কি আছে তাইতো বুঝলাম না!!

একটু খেয়াল করে কখনও কি দেখেছেন,জেনে বা না জেনে আমরা দিনে কত অপচয় করি? অন্যান্য অপচয়ের কথা না হয় বাদই দিলাম। চলে আসলাম সোজা বিদ্যুত অপচয়ে। প্রায়ই আমরা রুম হতে বের হওয়ার সময় খেয়াল করিনা যে রুমের লাইট বা ফ্যান কি অফ্‌ করা হল কি না। অনেক সময়েই আমাদের টিভি অকারণেই ছাড়া থাকে। কেউ দেখছে না তাতে কি,চলুক না!অতটা গরম পরছে না তাও এসি-টা চলছে।

চলুক না,কোন সমস্যাতো নেই। অকারণেই চালু থাকে বাসার কম্পিউটারটি। চলুক না,ওই জিনিস বারবার ছাড়াওতো একটা ঝামেলা। ইউ,পি,এস অন কর। হ্যান কর ত্যান কর।

এর থেকে চলতেই থাকুক। অসুবিধাটা কি। যারা নিয়মিত ব্লগে লিখেন বা পড়েন,তারাও কিন্তু মাঝে মাঝে এরকম কিছু অপচয় হয়তোবা করেন। যারা নিয়মিত ব্লগের অতিথি তাদেরকে অবশ্যই বলা যায় অনেক শিক্ষিত,দেশের ভবিষ্যত তাদের উপর অনেকখানি নির্ভরশীল। আর যারা অনেক নাম করা ব্লগার তাদের লেখা পড়ার জন্যেতো মানুষ তীর্থের কাকের মত হা করে বসে থাকে।

একটু ভেবে দেখুন,এই শিক্ষিত বিশাল এক জনগোষ্ঠী যদি এরকম অপচয় করতে পারে। তাহলে আর অন্যদের দোষ দিয়ে লাভ কি!আমাদের কি তাই উচিত না,আরেকটু সচেতন হওয়া? আমি ইলেক্ট্রিকাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এর ফাইনাল ইয়ার এর ছাত্র। ফাইনাল ইয়ারে সবাইকে প্রজেক্ট বা থিসিস করতে হয়। আমার থিসিস এর বিষয় হচ্ছে নিউক্লিয়ার পাওয়ার। আর সাবসিডিয়ারি থিসিস হচ্ছে রিনিউয়েবল এনার্জির খোঁজ এবং এই বিদ্যুতের অপচয় রোধ।

তাই ভাবলাম এ বিষয়টি নিয়ে একটু লিখি। এই বিদ্যুত উৎপন্ন করা যে কি কষ্টকর একটা ব্যপার। তা না দেখলে কল্পনাও করা যায়না। আমাদের দেশের বর্তমান চাহিদা প্রায় ৬০০০ মেগা ওয়াট। সেখানে আমরা ৪০০০ মেগাওয়াটের কাছাকাছি বিদ্যুত উৎপন্ন করতে পারছি।

এমনিতেই আমরা চাহিদার থেকে বিদ্যুত উৎপন্নে অনেক পিছিয়ে আছি। বছরের পর বছর লোডশেডিং আমাদের পিছু ছাড়ছে না। তারপরও যদি আমরা এমন অপচয় করি তাহলে কি আর চলে!কোন ফকিরকে কি দেখেছেন পিজা হাটে পিজা খেয়ে টাকার অপচয় করতে?বা ফ্যান্টাসী কিংডম এ গিয়ে রোলার কোস্টারে উঠে মজা করে ঘুরতে?সেখানে আমাদের কি এভাবে একটু অসেচতনতার জন্য বিদ্যুতের এমন অপচয় করা উচিত? এখানে আরও একটি ব্যপার বলি। বর্তমানে আমাদের প্রায় অনেকের বাসাতেই আছে আই,পি,এস। বিজ্ঞানের এই প্রযুক্তিটির কারণে বাসায় কারেন্ট গেলেও আমরা আরাম করে নাক ডেকে ঘুমাতে পারি।

কিন্তু একটি ব্যপার কি কেউ খেয়াল করেছেন এই কারেন্ট আসে কোথা থেকে!আসলে যখন বাসায় কারেন্ট থাকে তখন আই,পি,এস কারেন্ট জমা করে রাখে। পরবর্তীতে লোডশেডিং এর সময় এই কারেন্টই ব্যবহার করে আই,পি,এস তার কাজ করে। অনেকটা বালতিতে জমা করে রাখা পানির মতন। তবে আমাদের বিদ্যুত উৎপন্নের হার সবসময় নির্দিষ্ট। যা চাহিদার তুলনায় অনেক কম বলেই আমাদের লোডশেডিং করতে হচ্ছে।

সেখানে এরকমভাবে যদি আই,পি,এস এ কারেন্ট জমা করে রাখা হয়। তবে দেখা যাবে যে কারেন্টের ঘাটতি আরও বেড়ে যাবে। মানে ঠিক যে কারণে লোডশেডিং করানো হয়,সেই কারনটিই ব্যর্থ হবে। ফলাফল আরও অনেক বেশি পরিমাণে লোডশেডিং। যাই হোক,এ ব্যপারেতো আর আমরা কিছু করতে পারিনা।

তবে আমরাতো ইচ্ছে করলে অপচয়টি আরো একটু কমাতে পারি। এ লেখাটি পড়ে যদি একজনও একটুখানি সচেতন হন। রুম হতে বের হওয়ার আগে লাইট-ফ্যান অফ্‌ করে বের হন। অযথা টিভি,কম্পিউটার,এসি ছেড়ে না রাখেন। সেই একজনের সচেতনতাটুকুই হবে আমার জন্যে এক বিশাল বড় প্রাপ্তি।

আসলে আমার জন্যে না এ পুরো দেশের জন্যেই এক বড় প্রাপ্তি। কারণ এই একটি একটি ওয়াট এর অপচয় রোধ দিয়ে শুরু করেই হয়তোবা শ' বা হাজার ওয়াট এর অপচয় রোধ করা সম্ভব।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।