আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মিয়ানমারে মাইনাস ওয়ান ফর্মুলা


এবার মিয়ানমারের সামরিক জান্তা মাইনাস ওয়ান ফর্মুলা নিয়ে এগুচ্ছে। সেখানকার বিরোধীদলীয় ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী অং সান সুচিকেও একই সঙ্গে তার দলকেও নির্বাচন থেকে বাদ দেয়ার জন্য ওই পথে এগুচ্ছে সরকার। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মহল। মঙ্গলবার সেখানকার সামরিক জান্তা যে নতুন নির্বাচনী আইন প্রকাশ করেছে তাতে তেমনটাই বলা হয়েছে। এ রিপোর্ট দেখতে এই লিংকে যান Click This Link নতুন ওই আইনে অং সান সুচিকে আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

এ আইনে তাকে নিজের রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) থেকে বহিষ্কার করা হতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাকে বহিষ্কার না করলে তার দল এনএলডি বাতিল করা হবে। মিয়ানমারের সরকারি সংবাদপত্রে বুধবার ঘোষিত দি পলিটিক্যাল পার্টি রেজিস্ট্রেশন ল’ শীর্ষক এ নতুন আইনে আদালতে দোষী সাব্যস্ত কাউকে রাজনীতি করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ফলে সুচির নির্বাচনের পথ একেবারেই রুদ্ধ। এ আইনে বলা হয়েছে, সোমবার থেকে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য এ আইন কার্যকর হতে মাত্র ৬০ দিন সময় হাতে রয়েছে।

এরপর নির্বাচনে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক রাজনৈতিক দলগুলোকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। যেসব দল রেজিস্ট্রেশন করবে না তাদেরকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হবে। নতুন এ আইনের মাধ্যমে সমগ্র মিয়ানমারে ২১০০ রাজবন্দিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এতে যে কোন ধর্মীয় নেতা বিশেষ করে বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং সরকারি কর্মকর্তাদেরকেও নির্বাচনে অংশ নেয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে সামরিক জান্তা যে পাঁচটি নির্বাচনী আইন ঘোষণা করবে তাদের মধ্যে এই আইনটি নিয়ে মোট দুটি আইন ঘোষণা করা হলো।

অবশ্য নির্বাচনের দিনক্ষণের ব্যাপারে এখনও কিছু জানানো হয়নি। সুচি’র ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) যদি সরকারের এ আইন মেনে না চলে তাহলে ওই দলও বিলুপ্ত ঘোষণা করা হবে। এনএলডি’র মুখপাত্র নেয়ান উইন সুচির প্রতি যথার্থ সম্মান দেখিয়েই বলেছেন, দলকে টেকাতে হলে আমি লক্ষ্য করেছি তাকে (সুচি) বহিষ্কার করা ছাড়া উপায় নেই। এ আইনে সরকারের উদ্দেশ্য একেবারই পরিষ্কার। আইনটি দেখে আমি বিস্মিত।

এটি এতটা খারাপ হতে পারে তা ভাবিনি। সুচি বিদেশীকে বিয়ে করেছেন বলে ২০০৮ সালে প্রণীত সামরিক জান্তার নতুন সংবিধানে ইতিমধ্যেই তাকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। নেয়ান উইন বলেন, এই আইনের প্রেক্ষিতে এনএলডিকে স্পষ্ট করেই সরকারকে জবাব দিতে হবে। তবে আমারা কিভাবে এর জবাব দেব সেটা আমি এখন বলতে পারছি না। আমি এখন কেবল বলতে পারি, জান্তার প্রণীত সংবিধানকে রক্ষা করতেই এ আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।

এটা আমাদের জন্য বেশ বড় একটি সমস্যা। কেননা তাদের ওই সংবিধান আমাদের পক্ষে মেনে নেয়া সম্ভব নয়। মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থিদের পক্ষের আইনজীবী অং থেইন এ আইনকে একেবারেই অগণতান্ত্রিক এবং অযৌক্তিক বলে উলেস্নখ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ইউএস ক্যাম্পেইন ফর বার্মার প্রধান অং থেইন সরকারের এ নতুন আইনকে আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের মুখে চপেটাঘাত বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, পরিশেষে জান্তা সরকার বিশ্ববাসীর সামনে ঘোষণা দিল যে অং সান সুচিসহ অন্য রাজবন্দিদেরকে মুক্তি দেয়া হবে না এবং তাদের নির্বাচনে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো।

এখন বল জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের কোর্টে। মিয়ানমারের নতুন এ আইনের ব্যাপারে মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগের মুখপাত্র ফিলিপ ক্রাউলি বলেছেন, বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের প্রথম ধাপ হিসেবে সংশিস্নষ্ট দলগুলোর সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপ শুরু করার জন্য আমরা জান্তা কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। ওদিকে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন মিয়ানমারের সামরিক সরকারের প্রতি সুচিকে মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
 


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.