আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তির ঘটনায় সংসদে হাতাহাতির উপক্রম

লেখার কিছু পাই না, তাই আবোল তাবোল লিখি
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিএনপির এক সদস্যের কটূক্তি নিয়ে আজ বুধবার রাতে সংসদ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে সরকারি ও বিরোধী দলের সদস্যদের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আসন ছেড়ে সরকারি ও বিরোধী দলের কয়েকজন সাংসদ পরস্পরের দিকে মারমুখী ভঙ্গিতে ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে দুই পক্ষের কয়েকজন সাংসদের মধ্যে হাতাহাতির উপক্রম হয়। এ সময় সংসদের চিফ হুইপ আবদুস শহীদ ও সরকারি দলের কয়েকজন সদস্য মাঝখানে ছুটে এসে দুই পক্ষের উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা করেন।

বিরোধী দলের চিফ হুইপ জয়নাল আবদিনও বিরোধী দলের সাংসদদের ফেরানোর চেষ্টা করেন। ঘটনার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া সংসদে উপস্থিত ছিলেন না। বিরোধীদলীয় নেত্রী ১০ মাস পর গত ১১ ফেব্রুয়ারি সংসদে ফেরার দিন শুধু সংসদে এসেছিলেন। জাতীয় সংসদের আজকের অধিবেশনে রাতে রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের ওপর ধন্যবাদ জ্ঞাপনের ওপর আলোচনা পর্বে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার শুরু হয় সংরক্ষিত মহিলা আসনের বিএনপির সাংসদ শাম্মী আক্তারের বক্তব্যের পর।

শাম্মী আক্তার বলেন, ‘শেখ মুজিব মারা যাওয়ার পর এক লন্ডন প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা বলেছিলেন, ফেরাউনের হাত থেকে দেশ রক্ষা পেল। শেখ মুজিব মারা যাওয়ার পর দেশের মানুষ তো দূরের কথা আওয়ামী লীগের নেতারা ইন্না লিল্লাহ বলেননি। ’ শাম্মী আক্তারের এই বক্তব্য জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আবদুস শহীদ দিনের কার্যবিবরণী থেকে বাদ (এক্সপাঞ্জ) দেওয়ার দাবি জানান। ডেপুটি স্পিকার শওকত আলী বলেন, ‘আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখব। ’ আওয়ামী লীগের সাংসদেরা এ সময় নিজ নিজ আসনে দাঁড়িয়ে শাম্মী আক্তারের বক্তব্য কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানান।

ডেপুটি স্পিকার বলেন, ‘অসংসদীয় ভাষা ব্যবহার করলে তা এক্সপাঞ্জ হবে। ’ বিরোধীদলীয় সাংসদেরা বক্তব্য দিতে চাইলে ডেপুটি স্পিকার ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর ইকবালুর রহিমকে মাইক দেন। এরপর রাত সাতটা ৫৮ মিনিটে ইকবালুর রহিম তাঁর বক্তব্যে শাম্মী আক্তারের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘বিরোধীদলীয় নেতা এখানে থাকলে বঙ্গবন্ধুকে ফেরাউন না, ফেরেস্তা বলতেন। বেগম খালেদা জিয়াকে জিয়াউর রহমান ঘরে নিতে চাননি। ’ এই বক্তব্যের পরই বিএনপির সাংসদেরা আরও উত্তেজিত হয়ে চিত্কার-চেঁচামেচি করে তাঁর এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান।

এ সময় বিরোধী দলের সাংসদদের বাঁ দিকের গ্যালারিতে বসে থাকা মেহেরপুর-১ আসন থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সাংসদ জয়নাল আবেদীন তাঁর আসনে দাঁড়িয়ে বিএনপির সাংসদদের চুপ করতে বলেন। তিনি একসময় বলেন, ‘চুপ কর, চুপ কর। ’ জয়নাল আবেদীনের এই বক্তব্যের জবাবে শহিদউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘ধর শালা। ’ তখন জয়নাল আবেদীন তাঁর আসন থেকে উঠে দাঁড়ালে শহিদউদ্দিন চৌধুরীও তাঁর দিকে ছুটে যান। তখন চিফ হুইপ আবদুস শহীদ, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবদীন, নাসিম ওসমান, সাগুফতা ইয়াসমিন, জাহিদ আহসানসহ কয়েকজন সাংসদ তাঁদের দুজনকে শান্ত করেন।

এরপর বিরোধীদলীয় সাংসদেরা ডেপুটি স্পিকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁরা ফাইল ও কাগজপত্র ছুড়ে মারেন। এ সময় দুই পক্ষই চিত্কার-চেচাঁমেচি করেন। রাত আটটা পাঁচ মিনিটে বিরোধী দল সংসদ থেকে ওয়াকআউট করে। পরে ইকবালুর রহিম তাঁর বক্তব্য শেষ করার আগে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু জিয়াউর রহমানকে বুঝিয়ে খালেদা জিয়ার সংসার ঠিক রাখেন।

’ এর আগে জাতীয় পার্টির সাংসদ নাসিম ওসমান রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের ওপর ধন্যবাদ দিতে গিয়ে বলেন, ইসলামের কথা ও ভারতবিরোধিতার রাজনীতি এখন শেষ হয়ে গেছে। ইরাক, আফগানিস্তান, লিবিয়া, সিরিয়া, প্যালেস্টাইন ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। ইসলাম কোনো জাতি নয়। ইসলাম জাতি হলে ইরাক আর আফগানিস্তানের মধ্যে সীমানা থাকত না। নাসিম ওসমান বিরোধী দলকে ইতিবাচক রাজনীতি করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা ঠিক না হলে, আগামী নির্বাচনের পর আপনারা দেশান্তরিত দল হবেন।

আপনাদের দুরবিন দিয়ে খুঁজতে হবে। ’ এরপর রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনা শেষে পয়েন্ট অব অর্ডারে তারানা হালিম বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তিমূলক বক্তব্যের তীব্র নিন্দা করেন। তিনি বলেন, “এ সংসদে যখন ‘ধর শালা’ বলা হয়, তখন আমাদের লজ্জা করে। সাংসদ হয়েও বিএনপির নারীরা যে আচরণ আজ করেছেন, তাতে আমাদের লজ্জা করছে। ” তিনি বলেন, ‘সংসদে আমরা এ ধরনের কথা ঠেকাতে না পারলে দর্শক আপনারা দয়া করে টিভির সুইচ বন্ধ করে দেবেন।

’ Click This Link
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.