আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অবসেসিভ কমপালসিভ ডিসওর্ডার (ওসিডি)- অনাকাংখিত নিয়ন্ত্রনহীন চিন্তা যখন আপনাকে নিয়ন্ত্রন করে

আমি একজন সাধাসিধা মানুষ, অন্য দশজনের মতোই আমারও কিছু নিজস্ব অনুভুতি আছে, কিছু কথা আছে যা আমি সবার সাথে ভাগ করতে চাই....

আমার আম্মার একটা অভ্যাস আছে যে, কোন কিছু অগোছালো রাখতে পারেন না। সব সময়েই উনি বাসা গোছাতে থাকেন। কারও কারও কাছে এটা বাড়াবাড়িও বলে মনে হয়। আমার নিজেরও একটা সমস্যা আছে যে, ওজু করে নামাজে দাঁড়ানোর সাথে সাথে মনে হয়, আমি মনে হয় ওজুর কোন একটা কাজ বাদ দিয়েছি। যতই যুক্তি দিয়ে চিন্তা করতে চাই না কেন, কোন ভাবেই মাথা থেকে না পারি সরাতে, না পারি শিওর হতে।

অনেকেরই অভ্যাস আছে যে বাথরুম থেকে বের হওয়ার পর হঠাৎ মনে হয় যে, পানির কলটা কি বন্ধ করেছি? তখন আবার গিয়ে চেক করে তারপর শিওর হতে হয়। অথবা বাসায় ঢুকে যাওয়ার পর মনে হলো, ’আরে, গাড়ির দরজাটা তো লক করা হয়নি। ’ যদিও আপনি ভালোভাবেই লক করে এসেছেন, তারপরও এই চিন্তাটার কারণে আপনাকে আবার দৌড়াতে হয় গাড়ির কাছে। বার বার হাত ধোয়া হাতে ময়লা লেগে আছে ভেবে অথবা পোষাক যত পরিষ্কারই হোক না কেন, কাল্পনিক ময়লা লাগার কারণে বার বার ধোয়া - এ সবই আমাদের কাছে খুবই সাধারণ কিছু অভিজ্ঞতা। আমরা এই ধরনের আচরণকে ’ছুঁচি-বাই’ বলেও আখ্যায়িত করি সময় সময়।

আসলে এই ধরনের চিন্তাগুলো আমাদের মনকে এমন ভাবে ডমিনেট করে যে তখন আমরা কিছু কাজ করি যা আমরা চাইলেও ঠেকাতে পারিনা। এ যেন আপনার অনিচ্ছায়েও আপনাকে দিয়ে কষ্টকর কিছু কাজ করিয়ে নেওয়া, যেখানে আপনার কোনই নিয়ন্ত্রন নেই। যদি আপনার নিজের বা আপনার কাছের কারও এই সমস্যাটা হয়ে থাকে, তাহলে নিশ্চয়ই নিজেকে খুব হেল্পলেস মনে হয় সময় সময়। আর যদি আপনার দৈনন্দিন জীবনে আপনার এই আচরন সমস্যা তৈরী করতে শুরু করে, তাহলে সম্ভবত আপনি ’অবসেসিভ কমপালসিভ ডিসওর্ডার’ বা সংক্ষেপে ’ওসিডি’ তে আক্রান্ত। এটি একটি মানসিক রোগ, সাধারন কিন্তু সময় সময় মারাত্মক হতে পারে।

আসুন জানি ওসিডি কি ওসিডি হলো এমন একটা দুশ্চিন্তামূলক অসঙ্গতি, যেটার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে অনিয়ন্ত্রিত এবং অগ্রহনযোগ্য চিন্তাভাবনা আপনাকে দখল করে নেয় এবং ফলস্রুতিতে একই ধরনের কাজ বারবার করে যেতে হয়, অনেকটাই বাধ্য হয়ে। আপনার ওএসডি থাকলে আপনি নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন যে আপনার চিন্তাভাবনাগুলো অনেকটাই যুক্তিহীন এবং আপনি তা বুঝতেও পারছেন। কিন্তু কোনভাবেই একই ধরনের আচরণ করা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারছেন না অনেক চেষ্টা করেও। এ যেন অমোঘ নির্দেশ-পালন করতেই হবে। ওসিডি তে আক্রান্ত হওয়াটা অনেকটা যেন গ্রামোফোনের রেকর্ডে ভাঙ্গা পিন আটকে যাওয়ার মতো।

রেকর্ড ঘুরেই যাচ্ছে, ঘুরেই যাচ্ছে। ওমসডি আক্রান্ত ব্যক্তির মস্তিষ্ক একটা বিশেষ ধরনের চিন্তা বা তাড়ণাতে আটকে যায় আর তার ফলে সে একই ধরনের কাজ বার বার করতে থাকে। কি এই অবসেশন? কাকে বলে কমপালশন? অবসেসন হলো এমন চিন্তাভাবনা, দৃশ্যাবলী বা তাড়না যেগুলো আপনার কাছে কাম্য নয়, প্রায় অনিয়ন্ত্রিত এবং দুর্ভাগ্যবশত বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অশান্তিকর এবং কষ্টকরও বটে। আপনি জানেন যে এই ধরনের চিন্তা অর্থহীন কিন্তু তাদের আসাটা থামাতে পারেন না। ওরা বার বার আপনার মনোজগতে হানা দিতে থাকে।

অন্যদিকে কমপালসন হলো এমনসব আচরন বা অভ্যাস যেগুলো অবসেসন থেকে সাময়িক মুক্তি পেতে বার বার প্রায় বাধ্য হয়েই করতে হয়। যেমন হাতটা ময়লা হয়ে আছে (অবসেসন) মনে করে বার বার হাত ধুয়ে আসা (কমপালসন)। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে এই মুক্তিটা সাময়িক। সাধারণত প্রতিবারই কমপালসিভ আচরন পালন করার পর অবসেসনটা আরও শক্তিশালী হয়ে ফেরত আসে আর শেষ পর্যন্ত সৃষ্টি করে উদ্বেগ আর উত্তেজনার। ওসিডি কত ধরণের হতে পারে? বেশিরভাগ মানুষই যারা ওসিডি আক্রান্ত, তারা নিচের যেকোন একটা ক্যাটাগরিতে পড়ে থাকেঃ ওয়াশারস (পরিষ্কারকারী)ঃ এরা ’ময়লা লেগে আছে’ এই অবসেসনে ভোগে।

এদের কমপালসিভ বিহেভিয়র হয় সাধারনত বার বার হাত ধোয়া বা কাপড় ধোয়া। চেকারস (পরীক্ষাকারী)ঃ এরা সব কিছু বারবার চেক করতে থাকেন যে বিষয়গুলোর সাথে দুর্ঘটনার একটা যোগসূত্র আছে; দরজাটা লাগানো হয়েছে কিনা, পানির কলটা বন্ধ করলাম কিনা, চুলা নিভানো হয়েছে কিনা, এইসব। ডাউটারস এন্ড সিনারস (সন্দেহবাদী এবং পাপী)ঃ এদের মধ্যে একটা ভয় কাজ করে যে যদি সবকিছু ঠিকঠাকমতো না হয়, তাহলে ভয়ংকর কিছু ঘটে যেতে পারে আর তার কারণে তাদের শাস্তি দেওয়া হবে। কাউন্টারস এন্ড এ্যারেঞ্জারস (গননাকারী এবং গোছানোকারী)ঃ এদের অবসেসন থাকে ক্রম (অর্ডার) এবং গোছানোর (্এ্যারেঞ্জ) প্রতি। এদের মধ্যে বিশেষ বিশেষ নম্বর বা রং বা সজ্জার ব্যাপারে একটা কুসংস্কার দেখা যায়।

হোর্ডারস (দখলকারী)ঃ এরা কোন কিছুই ফেলতে চায় না, তা তাদের দরকারে না লাগলেও। এদের ধারণা, যদি কোন কিছু ফেলে দেয়া হয়, তাহলে ভয়ংকর খারাপ কিছু ঘটে যেতে পারে। একটা কথা মনে রাখা দরকার যে, কোন অবসেসিভ চিন্তাভাবনা থাকা বা কোন কমপালসিভ কাজ করা মানেই কিন্তুু আপনি ওসিডিতে আক্রান্ত, এমনটা নয়। বেশিরভাগ মানুষেরই স্বল্পমাত্রায় অবসেসনে ভোগেন বা কোন কমপালসিভ আচরণ করার অভ্যাস থাকতে পারে এবং তারা এসত্ত্বেও স্বাবাবিক জীবন যাপন করতে পারে। কিন্তু ওসিডিতে আক্রান্তরা প্রচন্ড স্ট্রেসে ভোগেন।

কমপালসিভ কাজের কারণে অনেক সময় নষ্ট হয় এবং ফলস্রুতিতে তাদের পারিবারিক, সামাজিক জীবনে এবং কর্মক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়ে। লক্ষণসমূহঃ বেশিরভাগ মানুষ অবসেসন এবং কমপালসন - এই দুটোতেই ভোগে। আবার কেউ কেউ এদের যেকোন একটাতে আক্রান্ত হয়। তাছাড়া সময়ের সাথে সাথে ওসিডি বাড়তে-কমতেও দেখা যায়। মজার ব্যাপার হলো, সাধারণত মানসিক চাপের সময় ওসিডি’র প্রভাব বেড়ে যেতে দেখা যায়।

ওসিডি’র ক্ষেত্রে সাধারণ অবসেসিভ চিন্তাভাবনাসমূহ - নোংরা হওয়ার বা নোংরা লাগার ভয় - নিজেকে বা অন্যকে আহত করা বা কষ্ট দেয়ার ভয় - যৌন চিন্তাভাবনা বা দৃশ্যাবলী - জিনিসপত্র, যার কোনই প্রয়োজন নেই, সেগুলো হারিয়ে ফেলার ভয় - ধর্মীয় উন্মাদনা বা অতিরিক্ত নীতিবোধ - সবকিছু গুছিয়ে, নিয়মতান্ত্রিকভাবে রাখার ইচ্ছা - কুসংস্কার, সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্য’র ব্যাপারে অতিরিক্ত সতর্কতা, ইত্যাদি ওসিডি’র ক্ষেত্রে সাধারণ কমপালসিভ আচরনসমূহ - বার বার পরীক্ষা করা, যেমন দরজার তালা, পানির কল বন্ধ করা, লাইট-ফ্যানের সুইচ অফ করা - প্রিয় মানুষদের অতিরিক্ত খোঁজখবর রাখা যে তার নিরাপদ আছে - বারবার গোনা, লেখা-এরকম অর্থহীন কাজ করা দুশ্চিন্তা কমানোর জন্য - ধোয়ামোছার জন্য অতিরিক্ত সময় ব্যয় করা - বারবার জিনিসপত্র গোছানো - অতিরিক্ত ধর্মকর্ম করা বা এমনসব ধর্মীয় আচার পালন করা যেগুলো ধর্মসংক্রান্ত ভয় থেকে উদ্ভুত - পুরোনো বাতিল জিনিসপত্র জমা করে রাখা, ইত্যাদি কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন অবসেসিভ কমপালসিভ বিহেভিওর থেরাপি থেকে শুরু করে ইচ্ছাশক্তি বা মেডিটেশন-এরকম অনেক ধরনের উপায় আছে। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে যে, সবচেয়ে কার্যকরি উপায় হলো ’কগনিটিভ বিহেভিওর থেরাপি’ বা সিবিটি। সিবিটি’র রয়েছে দুটো অংশঃ ১। সংস্পর্শ এবং তৎজনিত সাড়া প্রতিরোধকরণ (এক্সপোজার এন্ড রেসপন্স প্রিভেনসন)ঃ এই অংশে রোগীকে বার বার তার অবসেসিভ পরিস্থিতির মুখোমুখি করা হয় কিন্তু স্ট্রেস কমানোর জন্য সে যে কমপালসিভ বিহেভিওর দেখাতো, সেটা করতে দেয়া হয়না। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, একজন ওসিডি রোগী, যার কিনা বার বার হাত ধোয়ার অভ্যাস, তাকে একটা পাবলিক টয়লেটের দরজার নব ধরতে বলা হয়।

তারপর তাকে হাত না ধুতে দিয়ে বসিয়ে রাখা হয় যেন তার হাত না ধুতে পারা জনিত উদ্বেগটা বাড়তে বাড়তে থাকে। এভাবে একসময় দেখা যায় যে তার উদ্বেগটা (অবসেসন এবং সংশ্লিষ্ট কমপালসিভ বিহেভিওর) চলে যায়। ফলে রোগী বুঝতে পারে যে, এ্যাংজাইটি হলেই সেটা থেকে তাৎক্ষনিকভাবে মু্িক্ত পাওয়ার জন্য পাগল হওয়ার দরকার নেই কারণ এটা তার কোন ক্ষতিই করছে না আসলে। এভাবে অবসেসিভ চিন্তাভাবনা এবং কমপালসিভ আচরণের ওপর তার কিছুটা নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে যে, এই ধরনের প্রতিরোধ পদ্ধতি আসলে মস্তিষ্ককে নতুন করে ট্রেনিং দেয়, ফলস্রুতিতে ওসিডি’র লক্ষণসমূহ আস্তে আস্তে দূর্বল হতে হতে একসময় পুরোপুরিই চলে যায়।

২। কগনিটিভ থেরাপিঃ কগনিটিভ থেরাপি মূলত ফোকাস করে ওসিডি রোগাক্রান্ত রোগীর ক্ষতিকারক চিন্তাভাবনা এবং অতিরিক্ত দ্বায়িত্ববোধজনিত ব্যাপারগুলোর ওপর। কগনিটিভ থেরাপি চিকিৎসার একটা বড় অংশ হলো রোগীকে এমনভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া যেন সে তার কমপালসিভ আচরনকে নিয়ন্ত্রণ না করেই সুস্থ্য এবং কার্যকরি ভাবে অবসেসিভ চিন্তাভাবনার সময়গুলোতে সাড়া দিতে পারে। মনোস্তত্ত্ববিদ জেফরি সোয়ার্টজ’র ’অবসেসিভ চিন্তা ও কমপালসিভ তাড়ণা’ জয়ের চার-ধাপী কৌশলঃ প্রথম ধাপ ’রি-লেবেল’ঃ উপলব্ধি করা যে অনাকাংখিত অবসেসিভ চিন্তা এবং তদ্জনিত তাড়ণা ওসিডি’র কারণে হচ্ছে। দ্বিতীয় ধাপ ’রি-এ্যাট্রিবিউট’ঃ উপলব্ধি করা যে ওসিডি’র কারণে যে অবসেসিভ চিন্তা এবং তদ্জনিত তাড়ণার তীব্রতা সম্ভবত মস্তিষ্কের জৈবরাসায়নিক অসমতার সাথে সম্পর্কিত।

তৃতীয় ধাপ ’রি-ফোকাস’ঃ ওসিডি জনিত চিন্তা থেকে মনোযোগ সরিয়ে অন্য কিছুর ওপর স্থাপন করা, অন্ততপক্ষে কিছু সময়ের জন্য হলেও। অর্থাৎ ’অন্য কিছু করা’। চতুর্থ ধাপ ’রি-ভ্যালু’ঃ ওসিডি চিন্তাভাবনাকে নতুন ভাবে মূল্যায়িত করা। ওগুলো অত গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়-এভাবে ভাবা। অন্যান্য উপায়গুলোর মধ্যে রয়েছে মেডিকেসন, ফ্যামিলি থেরাপি এবং গ্র“প থেরাপি।

নিজেই নিজের ওসিডি’র চিকিৎসা করুনঃ নিজেই আপনি ওসিডি থেকে মুক্তির চেষ্টা শুরু করতে পারেন। কি করবেন, ভাবছেন? - নিজেকে শিক্ষিত করে তুলুন ওসিডির ব্যাপারে। এ সম্পর্কিত বই পড়–ন, ডাক্তারের সাথে কথা বলুন, অন্য ওসিডি রোগীর সাথে আলাপ করুন। আপনি ওসিডি’র ব্যাপারে যত বেশি জানবেন, ততই সহজে এবং কার্যকরি ভাবে এর মোকাবেলা করতে পারবেন। - অনুশীলন করুন থেরাপি থেকে যা শিখেছেন।

শুধু জানলেই হবে না, বরং প্রতিদিন নিয়ম করে আন্তরিকতার সাথে অনুশীলনও করতে হবে কার্যকরি পদ্ধতিগুলো। - নিজের পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবের সাথেই থাকুন। ওসিডির কারণে যদি আপনি একাকী হয়ে যেতে চান, তাহলে ওসিডি না কমে কিন্তু বেড়ে যেতে পারে। তাই পরিবার আর বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রাখা খ্বুই গুরুত্বপূর্ণ। - অসংখ্য ওসিডি সাপোর্ট গ্র“প আছে।

তাদের সাথে যোগাযোগ করুন। আপনি দেখবেন যে এই সমস্যায় আপনি একা নন। - রিল্যাক্স করার পদ্ধতিগুলোর অনুশীলন করুন। যোগ ব্যায়াম, মেডিটেশন, গভীর-শ্বাস - এরকম অনেক পদ্ধতি আছে যা আপনার উপকারে আসবে। কিভাবে ওসিডি আক্রান্ত প্রিয় মানুষটাকে সাহায্য করবেন? সবার আগে আপনার নিজের জানতে হবে ওসিডি সম্পর্কে।

যত ভালোভাবে আপনি জানতে পারবেন, ততই কার্যকরিভাবে আপনি ওসিডি আক্রান্ত আপনার প্রিয় মানুষটাকে সাহায্য করতে পারবেন। আপনি নিজে জানলে তাকেও জানাতে পারবেন। অন্তত তাকে যদি এতটুকুও বলা যায় যে, ওসিডি একটি নিরাময়যোগ্য সমস্যা, তাহলেও আপনি তাকে মনোবিদের চেম্বারে যাওয়ার ব্যাপারে অনুপ্রানিত করতে পারবেন। এমন কিছু কাজ, যা আপনি ওসিডি আক্রান্ত আপনার পরিবারের সদস্যটির সাথে করবেন - ১. আপনার প্রিয় মানুষটার ওসিডিটিকে রোগের লক্ষণ হিসেবে দেখুন, তার চারিত্রিক দূর্বলতা হিসেবে নয়। মনে রাখবেন, তিনি একটি সমস্যায় আক্রান্ত।

এই একটি ছাড়াও তাঁর চরিত্রে অনেক শক্তিশালী এবং প্রশংসনীয় জিনিস আছে। বিশেষ একটি ব্যাপারে নয়, বরং পুরো ব্যক্তিকে বিবেচনা করুন। ২. ওসিডিকে আপনার পারিবারিক জীবনে সমস্য সৃষ্টি করতে দেবেন না। যতটুকু সম্ভব, চাপ কম রেখে পারিবারিক জীবন স্বাভাবিক রাখুন। ৩. আক্রান্ত ব্যক্তির রিচুয়ালে সমর্থন দেয়া বন্ধ করুন।

এটা ওসিডি’র চিকিৎসার অগ্রগতি কমিয়ে দেয়। ৪. ইতিবাচক ভাবে সরাসরি বলুন আপনি কি আশা করেন ওসিডি আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে, কিন্তু তার অতীত আচরণের জন্য কখনই সমালোচনা করবেন না। ব্যক্তিগত সমালচনা পরিত্যাগ করতে পারলে রোগী নিজে অনেক চাপমুক্ত অনুভব করবেন। ৫. মজা করুন। সবসময়েই সে সিরিয়াস হয়ে ওসিডি রোগীকে সাপোর্ট দিতে হবে, এমন কোন কথা নেই।

কারণ ওসিডি’র রোগীরা বেশিরভাগ সময়েই জানেন তাদের ভয়টা কতটা হাস্যকর। তাই তাদের সাথে হিউমার করুন তাদের সমস্যা নিয়ে, হিউমারের মাধ্যমে সহায়তা করতে চেষ্টা করুন। কিন্তু অবশ্যই মাত্রা ছাড়াবেন না, যেন আপনার হিউমার তাকে আহত করে। শেষ কথাঃ আপনার প্রিয় মানুষটির ওসিডি’র সমস্যায় আপনি কেমন প্রতিক্রিয়া দেখান সেটা কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নেতিবাচক মন্তব্য বা সমালোচনা ওসিডি’র অবস্থা আরও খারাপ করে ফেলতে পারে যেখানে ইতিবাচক সাহায্য চিকিৎকসায় সফলতা নিয়ে আসে।

কখনই ওসিডি আক্রান্ত ব্যক্তিকে বলা যায় না যে তুমি তোমার এইসব আচরণ বন্ধ কর বা তাকে বাধ্যও করতে যাবেন না। আপনাকে বুঝতে হবে যে ওসিডিতে আক্রান্ত বলেই তারা তাদের ওইসব আচরন বন্ধ করতে পারছে না। তাকে এ ব্যাপারে চাপ দিলে তার প্রতিক্রিয়াজনিত আচরন আরও খারাপের দিকে মোড় নিতে পারে। সুতরাং আপনার প্রিয় মানুষটাকে ওসিডি’র সাথে লড়াইয়ে জয়ী করতে চাইলে তার সাথে যতটা সম্ভব দয়ালু এবং ধৈর্যশীল আচরন করুন। ওসিডি নিয়ন্ত্রনের লড়াই তার প্রতিটা সফল পদক্ষেপের প্রশংসা করুন এবং তার চরিত্রের ইতিবাচক দিকগুলোর দিকে আপনার মনোযোগ দিন।

ÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑÑ তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট অবলম্বনে। আরও বিষদ জানতে চাইলে দেখুন নিচের লিংকগুলো- Click This Link http://www.hope4ocd.com/foursteps.php উইকিপিডিয়া

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৫ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।