আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি অসাধারন প্রেমের গল্প যার পরিনতিটা সাধারন ছিল, আমার ভগ্ন হৃদয়।

আমার "কত অজানা রে" সিরিজের সব গুলো পোষ্ট সংগ্রহে থাকা বই, গুগোল মামা ও বিভিন্ন সাইট থেকে অনুবাদ করা, তবে কোন ভাবেই কপি-পেষ্ট নয়। জানার জন্য পড়ন, ভুল হলে সঠিকটি বলার দায়িত্ব আপনাদের। আনন্দের সাথে পড়ুন। আমার ব্লগ কেচাল মুক্ত। [আমার প্রথম ভালবাসার গল্প এটি।

ধারাবাহিকতা ঠিক রাখতে পারিনাই বলে দুঃখিত, নিজ গুনে ক্ষমা করবেন] আমার নাম কনা। আমি আমাদের গ্রামের একটি অবস্থাসম্পন্য পরিবারের দুই মাএ কন্যার ছোটটি। আমার বড় বোন কলেজে পড়ার সময় তার কলেজের একজন টিচারের সাথে পালিয়ে বিয়ে করে ফেলে। তারপর থেকেই আমার পায়ে এই শিকল লাগানো হয়, স্কুল বন্ধ হয়ে যায়। আমার বন্দিশালায় আজ আমি সাত বছর ধরে বন্দি।

আগেকার দিনের মতই আমি এখন অসূর্যাস্পর্শী। আমার ঘরের ছোট্ট জানালাটাই ছিল আমার বাইরের দুনিয়ার একমাএ যোগাযোগ। আমি জানি পুরুষ নামের একটি জাতি আছে, কিন্তু তাদের আমি গত সাত বছর ধরে দেখিনি। তবু আমি একজনকে ভাল না বেশে পারি নি। সেই ভালবাসার গল্পটি আজ আপনাদের বলছি।

সেদিনটা হয়তো অন্যরকম ছিল। আমি বারান্দায় দাড়িয়ে ছিলাম। আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিলাম, আমি দেখছিলাম যতদুর দেখা যায়, সেদিন প্রথম আমি তাকে দেখলাম। সে আমাদের বাড়ির সমানের মাঠে দাড়িয়েছিল। আমি প্রথমে দেখিনি।

মনে হলো কেও আমার উদ্দেশ্যে হাত নাড়লো। এতো দুরথেকে কে আমাকে হাত নাড়লো? হয়তো রাখাল বা কোন কৃষক? কে সে? সেদিনের পরে আমি কয়েকদিন বারান্দায় যাইনি। তাকে আমি ভুলেই গিয়েছিলাম। আমি পরের বার বারান্দায় এসে আবার তাকে দেখলাম। সেখানেই! আমাকে দেখেই হাত নাড়লো, না আমি ভুল দেখিনি।

আমি পরিষ্কার দেখেছি সে আমাকে হাত নাড়লো। সেই প্রথম পুরুষ সে আমাকে প্রথম হাত নাড়লো। সে প্রতিদিন দাড়িয়ে থাকতো। যখনই আমি বারান্দায় আসতাম দেখতাম সে আমার বাসার দিকে তাকিয়ে আছে। রোদ-বৃষ্টি-ঝড়, সব সময়ই সে দাড়িয়ে থাকতো।

আমি প্রতিদিন দেখতাম, দেখতাম আর দেখতাম। আচ্ছা একটা মানুষ কিভাবে এমন ভাবে দাড়িয়ে থাকতে পারে? কিসের জন্য সে এভাবে দাড়িয়ে থাকে? কিসের আশায়? সেকি আমাকে ভালবাসে? আমরা পরস্পকে হাত নাড়তাম। আমি ঘন ঘন বারান্দায় আসা শুরু করলাম। আমার ঘরে থাকতে ভাল লাগতো না। আমি ভাবতাম কখন আমি বারান্দায় যেতে পারবো।

একদিন সন্ধ্যায় প্রচন্ড ঝড় হলো। সারারাত ঝড় হলো। পরদিন থেকে সে আসে না, বেশ কয়েকদিন তার দেখা নাই। আমি সারাদিন ভাবি, সারারাত ভাবতাম তার কি হলো, সে আসে না কেন, সে অসুস্থ হলো কি না, হাজার প্রশ্ন মনে কিন্তু আমাকে জবাব দিবার মত কেও নাই। আমি তার কথাই ভাবা শুরু করলাম।

সে আসে না, দিন যায়, মাস যায়, সে আসে না। আমি টেনশনে খাওয়া যাওয়া ছেড়ে দিলাম। আমার ঘুম হতো না। অপেক্ষায় দিন কাটে না। সেদিনটির কথা আমি কখনোই ভুলবো না।

সকাল বেলা আমি বারান্দায় এসে দেখি সে দাড়িয়ে আছে। সেদিন আমি বুঝলাম আমি তাকে ভালবেসে ফেলেছি। হা, আমি জানি না কে সে, কিন্তু আমি তাকে ভালবেসে ফেলেছি। আমি বুঝলাম তাকে ছাড়া আমার চলবে না। আমি যাব, আমি তার কাছে যাব।

যে করেই হোক। দরজা খোলা ছিল, বাসার সবাই ব্যস্ত ছিল, আমি ছুটে বের হলাম তার কাছে যাব বলে। আমি দৌড়ালাম, সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে আমি তার কাছে চলে গেলাম। সেই মাঠ, সেই মানুষটির কাছে এতো দিন যাকে নিয়ে ভেবেছি। কিন্তু সে আমাকে ফিরিয়ে দিল।

সে আমার ভালবাসা ফিরিয়ে দিল। আজও সে আমার বাসার সামনে দাড়িয়ে থাকে। দুর থেকে সে আমাকে দেখে, আমি তাকে দেখি। দুজন কে দুজন হাত নাড়ি। সত্যটা হলো সে আমাকে ভালবাসে না।

তবু আমি তাকে ভালবাসি, সে আমার প্রথম ভালবাসা, সে কাঁকতাড়ুয়া। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.