আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাতে ইলেক্ট্রনিক্স শেখা...২



যারা আমার আগের লেখাটা পড়েছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে শুরু করছি বাংলায় ইলেক্ট্রনিক্স শেখার দ্বিতীয় পাঠ। আগের পোস্টে বলেছিলাম, ইলেক্ট্রনকে নিয়ন্ত্রন করার তিনটা উপায় হচ্ছে, রেজিস্ট্যান্স, ক্যাপাসিটেন্স এবং ইন্ডাকটেন্স। এখন একটু বুঝানোর চেষ্টা করি, রেজিস্টর, ক্যাপাসিটর বা ইন্ডাকটর কিভাবে ইলেক্ট্রনের চলাফেরা নিয়ন্ত্রন করে। রেজিস্ট্যান্স- আগের পর্বের উদাহারন টেনে আনা যাক। যখন একজন শিক্ষক বেত হাতে আর একজন শিক্ষক চকলেট হাতে দাঁড়ালেন, বাচ্চারা চকলেট-ওয়ালার দিকে দউর দিল।

এখন মনে করি বাচ্চাদেরকে অই শিক্ষকের কাছে পৌছতে হলে একটা করিডর পার হয়ে যেতে হবে। যদি সেই করিডরটা ফাঁকা থাকে, তবে বাচ্চারা সহজেই দৌড়ে অপর প্রান্তে চলে যেতে পারবে। হয়ত এক মাথা থেকে অন্য মাথায় যেতে তাদের সময় লাগবে ২ মিনিট। এখন যদি এমন হয় ঐ করিডরে অন্য ক্লাসের আরো ৪-৫টা বাচ্চা জটলা করে আছে, তবে এই বাচ্চাগুলো যখন দৌড়ে যাবে তখন এদের সাথে গুতো-ধাক্কা খেয়ে তাদের গতি কমে যাবে। যদি করিডর অন্য ক্লাসের বাচ্চা আরো বেশি থাকে, তবে দৌড়ের গতি আরো কমে যাবে।

আর যদি করিডর একদম ভরতি থাকে, তবে এই বাচ্চাগুলো সবাইকে পেরিয়ে চকলেট-ওয়ালা শিক্ষকের কাছে পৌছতেই পারবে না। এই যে ব্যপারটা বাচ্চাদের দৌড়ের গতি কমিয়ে বা বন্ধ করে দিল এটাই হচ্ছে রেজিস্ট্যান্স। যত বেশি মানুষ = তত বেশি বাধা = তত বেশি রেজিস্ট্যান্স বা রোধ। ইলেক্ট্রনের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা প্রায় একইরকম। ইলেক্ট্রনগুলো কোন একটা পদার্থের মধ্য দিয়ে এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যাবার চেষ্টা করে ভোল্টেজ পার্থক্যের কারনে।

ঐ পদার্থের মধ্য যদি বিভিন্ন রকম বাধা থাকে তবে তার অপর প্রান্তে পৌছবার গতি কমে যায়। অর্থাৎ কারেন্ট কমে যায়। সুতরাং আমরা যদি কোন সার্কিট (বর্তনী)- এ কারেন্ট কমাতে চাই, তবে দু পাশের ভোল্টেজ এর মাঝে রেজিস্ট্যান্স বাড়িয়ে দিতে হবে। রেজিস্ট্যান্স মাপার একক হল ওহম এবং বড় হাতের গ্রীক অক্ষর ওমেগা (Ω) দিয়ে এই একক সঊচিত করা হয় । রেজিস্ট্যান্স, ভোল্টেজ ও কারেন্ট হিসেব করার কিছু উদাহারন দেয়া যাক।

এই হিসাব করার জন্য যে সুত্র ব্যবহার করা হয় তার নাম “ওহমের সূত্র”, বিজ্ঞানী ওহমের নামে। সূত্রটা হলো, V= I x R. অর্থাত ভোল্টেজ হচ্ছে কারেন্ট আর রেজিস্ট্যান্স এর গুনফল। উদাহারন ১ঃ উপরের সার্কিট টা লক্ষ্য করা যাক। প্রথম ছবিতে প্রতিটা রেজিস্ট্যান্স এর দুপাশে ভোল্টেজ কত দেয়া আছে, নিচে দেয়া আছে রেজিস্ট্যান্স এর মান। এর থেকে আমরা হিসেব করে বের করে ফেলতে পারবো এক একটা রেজিস্ট্যান্স এর মধ্য দিয়ে কি পরিমাণ কারেন্ট প্রবাহিত হচ্ছে।

R1 এর জন্য হিসেব করা যাক। এর দু’পাশে ভোল্টেজ এর পার্থক্য হচ্ছে, V = 10V- 5V= 5V. রেজিস্ট্যান্স হচ্ছে, R = 5. অতএব, কারেন্ট এর হিসেব হবে, I = V/ R = 5V/5 (অ্যাম্পিয়ার) আবার উল্টোটাও হিসেব করা যেতে পারে। ডানের ছবি থেকে দেখা যাচ্ছে, R2 রেজিস্ট্যান্স এর ভিতর দিয়ে ১ অ্যাম্পিয়ার কারেন্ট যাচ্ছে, এর রেজিস্ট্যান্স হচ্ছে 3Ω. সুতরাং এর দু প্রান্তে ভোল্টেজ হবে ওহমের সুত্রানুসারে, V= I x R = 1A x 3Ω = 3V. বামের ছবি থেকে যদি আমরা ভোল্টেজ পার্থক্য হিসেব করি তবে পাব, V= 5V – 2V = 3V. মানে দাড়াচ্ছে, V, I, R এই তিনটার যে কোন ২ টা জানা থাকলেই আমরা অন্যটা হিসেব করে বের করে ফেলতে পারব। -------------------------------------------------------------------- আমি খুব দ্রুত মসফেট ও ট্রানজিস্টর এবং তারপর অ্যাম্পলিফায়ার এর ডিজাইনে ঢুকে যেতে চাইছি। তার আগে কতখানি ভূমিকা আলোচনা করা দরকার বুঝতে পারছি না।

উপদেশ কাম্য। বেশি সংক্ষিপ্ত করতে চাই না যে পরের আলোচনা কেউ বুঝতে পারবে না, আবার বেশি দীর্ঘায়িতও করতে চাই না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.