আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতক



প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের বিভিন্ন দলীল ও বইপত্রে- মওদুদী জামাতী, দেওবন্দী খারিজী, ওহাবী সালাফী রাজাকার আল-বাদর ঘাতকদের বিরুদ্ধে একাত্তরের পুরো ৯ মাস জুড়ে নিধনযজ্ঞ, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও পাকবাহিনীকে সহযোগিতার তথ্য-প্রমাণ মিলেছে। ঘাতক জামাতীরা ধর্মের নামে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে দৃষ্টি ফেরাতে চাইছে একাত্তরের সেই হত্যাযজ্ঞ, নির্যাতন-নিপীড়নের চিত্র থেকে। বোঝাতে চাইছে মুক্তিযুদ্ধ তাদেরও ফসল। ভুলে যেতে বলছে পেছনের কথা তথা দেশের ইতিহাসকে। অথচ কোনো জাতির ইতিহাস ভুলে যাওয়া অথবা কোনো জাতির ইতিহাস বিমুখ হওয়া আর জাতির অস্তিত্ব বিলীন হওয়া প্রায় সমান কথা।

অনুসন্ধানে সারাদেশের হাজারো জামাতী ঘাতকের মধ্য থেকে মাত্র কয়েকজনের নানা যুদ্ধাপরাধের তথ্য এখানে তুলে ধরা হলো- নির্লজ্জ ঘাতক কামারুজ্জামানের হাক্বীক্বত মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শিক্ষাবিদ মহসীন আলী জানান, মুক্তিযুদ্ধের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির অনুসন্ধানে কামারুজ্জামান শেরপুর অঞ্চলে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। অবশ্যই তার বিচার হওয়া উচিত। মুক্তিযুদ্ধের ছাত্র সংগঠক আমজাদ হোসেন জানান, আল-বাদর কামরানের কথা বলে কামারুজ্জামানের অপকর্ম ঢাকার অপচেষ্টা চালানো হয়। এজন্য তার ফাঁসি চাই। ঘাতক কামারুজ্জামান সম্পর্কে একাত্তরের ঘাতক দালাল ও যুদ্ধাপরাধীদের সম্পর্কে জাতীয় গণতদন্ত কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়, ‘১৯৭১ সালের ১৬ আগস্ট ‘দৈনিক সংগ্রামে, প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের ২৫তম আজাদী দিবস উপলক্ষে গত শনিবার মোমেনশাহী আল-বাদর বাহিনীর উদ্যোগে মিছিল ও সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়।

স্থানীয় মুসলিম ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এ সিম্পোজিয়ামে সভাপতিত্ব করে আল-বাদর বাহিনীর প্রধান সংগঠক কামারুজ্জামান। এক তার বার্তায় প্রকাশ, সিম্পোজিয়ামে বিভিন্ন বক্তা- দেশকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত দুশমনদের সম্পর্কে সতর্কবাণী উচ্চারণ করে। ’ শেরপুরের সন্তানহারা এক পিতা ফজলুল হক গণতদন্ত কমিশনকে জানিয়েছেন, তার ছেলে বদিউজ্জামানকে মুক্তিযুদ্ধের সময় আষাঢ় মাসের একদিন তার বেয়াইয়ের বাড়ি থেকে কামারুজ্জামানের নেতৃত্বে ১১ জনের একটি দল ধরে নিয়ে যায়। বদিউজ্জামানকে ধরে আহমদনগর পাকিস্তানি বাহিনীর ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয়। স্বাধীনতার পর বদিউজ্জামানের বড় ভাই হাসানুজ্জামান বাদি হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন।

এ মামলায় ১৮ জন আসামির অন্যতম ছিল কামারুজ্জামান। মামলাটির নম্বর-২(৫)৭২। জিআর নং-২৫০(২)৭২। রিপোর্টে বলা হয়- শেরপুর জেলার গোলাম মোস্তফার চাচাতো ভাই শাহজাহান তালুকদার জানিয়েছেন, ১৯৭১ সালের ২৪ আগস্ট আল-বাদররা গোলাম মোস্তফাকে শেরপুর শহরের সড়ক থেকে ধরে বলপূর্বক তাদের ক্যাম্পে নিয়ে যায়। টর্চার ক্যাম্পে গোলাম মোস্তফাকে ধরে নিয়ে আল-বাদররা তার গায়ের গোস্ত ও রগ কেটে, হাত বেঁধে হাটিয়ে নিয়ে যায় শেরী ব্রিজের নিচে।

সেখানে তারা গুলি করে হত্যা করে গোলাম মোস্তফাকে। কামারুজ্জামানের প্রত্যক্ষ নির্দেশে এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছিল। গোলাম মোস্তফার হত্যাকাণ্ড যে কামারুজ্জামানের দ্বারা সংঘটিত হয়েছিল এ তথ্য শেরপুরের আরো অনেকেই দিয়েছেন্। (তথ্যসূ্ত্র দৈনিক আল ইহসান ২৪-০১-২০১০)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.