আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মীরজাফর ও লর্ড ক্লাইভরা এক-এগারো ঘটিয়েছে



এক-এগারো কালোদিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, দেশের ভেতরের কিছু মীরজাফর, জগেশঠ ও বাইরের লর্ড ক্লাইভদের ষড়যন্ত্রে এক-এগারো সৃষ্টি হয়েছিল। মইনের নেতৃত্বে এক-এগারো এবং শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ভারত সফরে অসম চুক্তির মাধ্যমে আত্মসমর্পণ একই সূত্রে গাঁথা। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ববিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরা এখনও সক্রিয় উল্লেখ করে তারা বলেন, দেশের অস্তিত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার বিকল্প নেই। জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে গতকাল ওই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিচারপতি টিএইচ খানের সভাপতিত্বে এতে বক্তৃতা করেন বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. মুস্তাহিদুর রহমান, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি শওকত মাহমুদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি প্রফেসর ড. সদরুল আমিন, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক প্রফেসর ড. মামুন আহমেদ, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের প্রধান সমন্বয়কারী অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া প্রমুখ।

সভা পরিচালনা করেন সাংবাদিক ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী। আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান, প্রচার সম্পাদক জয়নাল আবদিন ফারুক, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, তকদীর হোসেন জসীম, এবিএম মোশাররফ হোসেন, শাম্মী আকতার এমপি, রফিক শিকদার, শফিউল বারী বাবু, মোস্তফা খান সফরী, শামীমুর রহমান শামীম প্রমুখ। প্রফেসর ড. এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, এক-এগারোর ঘটনা বহুদিনের পরিকল্পনার ফসল। আর তা পূর্ণতা পেয়েছে ভারত-বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অসম চুক্তির মাধ্যমে। দেশের ভেতরের কিছু মীরজাফর, জগেশঠ ও বাইরের কিছু ক্লাইভের ষড়যন্ত্রে এক-এগারো সৃষ্টি হয়েছিল।

ষড়যন্ত্রকারীরা এখনও সক্রিয়। তাই দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। প্রফেসর ড. মুস্তাহিদুর রহমান বলেন, এক-এগারোর সরকার পুরোপুরি অবৈধ ছিল—তার প্রমাণ হলো প্রধান উপদেষ্টাসহ পাঁচজন উপদেষ্টার জাতীয় সংসদের সদস্য হওয়ার যোগ্যতা ছিল না। ফখরুদ্দীন বিদেশি নাগরিক এবং অন্য চারজন উপদেষ্টা সরকারি চাকরি শেষ করে উপদেষ্টা হয়েছেন। আর আইন অনুযায়ী উপদেষ্টা হতে হলে জাতীয় সংসদের সদস্য হওয়ার যোগ্যতা থাকতে হবে।

দেশ বিক্রির চক্রান্তে কখনও অংশ না নেয়ায় খালেদা জিয়ার প্রশংসা করে শফিউল আলম প্রধান বলেন, দেশ বিক্রির এ চক্রান্ত শুরু হয়েছিল ২০০৭ সালে জেনারেল মইনের নেতৃত্বে এক-এগারো সৃষ্টি ও ভারত সফরের মাধ্যমে। আর ভারত সফরে গিয়ে যৌথ ঘোষণায় শেখ হাসিনার স্বাক্ষরের মাধ্যমে তা পূর্ণতা পেল। এ থেকে প্রমাণ হয়, এক-এগারোর মাধ্যমে মইনের আগমন ও পরে শেখ হাসিনার ক্ষমতা লাভ ভারতের ষড়যন্ত্রেরই অংশ। শওকত মাহমুদ বলেন, জানুয়ারি মাসে বক্তৃতা দিতে ভয় লাগে। কেননা এ মাসে বাংলাদেশে তিনটি গণবিরোধী কর্মকাণ্ড ঘটেছে।

১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাকশাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে গণতন্ত্র হত্যা করা হয়েছিল। ২০০৭ সালে জেনারেল মইনের নেতৃত্বে এক-এগারোর কালো অধ্যায় এবং ২০১০ সালের ১১ জানুয়ারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে ভারতের হাতে আত্মসমর্পণ। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি ঘটনার আগে-পরের পরিস্থিতি পর্যালোচনায় দেখা যায়, ওই ঘটনায় মূল চালিকাশক্তি ছিল ভারত। আর তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন জেনারেল মইন ও শেখ হাসিনা। রুহুল আমিন গাজী বলেন, এক-এগারোর সরকারের আমলে সারাদেশে সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেননি।

তাদের ওপর অগণিত হামলা-মামলা হয়েছে। বন্দুকের নলের মাধ্যমে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। আর এক-এগারোর ধারাবাহিকতায় বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার আমলেও সাংবাদিকদের ওপর হামলা-মামলা চলছে। এক বছরে তিনজন সাংবাদিককে খুন করা হয়েছে। এমপিদের দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে কিছু লিখলেই সাংবাদিকদের ওপর হামলা-মামলা করা হচ্ছে।

এর বিরুদ্ধে সাংবাদিক সমাজ কথা বলছে। আন্দোলন-সংগ্রাম কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে গণমাধ্যমকে মুক্তভাবে কাজ করার পরিবেশ সৃষ্টি করার কর্মসূচির কথা জানান তিনি। প্রফেসর ড. সদরুল আমিন বলেন, ঐতিহাসিকভাবেই দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার মূল দায়িত্ব জাতীয়তাবাদী শক্তির। তাই ভারতীয় আগ্রাসন ও বর্তমান সরকারের আত্মসমর্পণের বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী শক্তির ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

প্রফেসর ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, এখন অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ের বিকল্প নেই। এজন্য রাজনীতিক ও পেশাজীবীদের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের আহ্বান জানান তিনি। অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের কাছে দেয়া কোনো প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে না পারলেও ভারতের কাছে দেয়া প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নে সফল হয়েছেন। Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.