আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

'জগদীশ বসু খুবই ভাল মানুষ ছিলেন...' একান্ত সাক্ষাৎকারে মার্কনি

ইসলামের পথে থাকতে চেষ্টা করি...।

: আপনি কেমন আছেন? : জী ভাল, তুমি ভাল আছ? : প্রথমে আপনার পরিচয় দিয়ে শুরু করি। : দাঁড়াও, পরিচয়টা আমিই দেই। হ্যাল্লো সবাই। শুনছেন আপনাদের প্রিয় রেডিও স্টেশন, ঢাকা, সিলেট এবং চিটাগাং এক সাথে।

আপনাদের সঙ্গে আমি গুগলিয়েলমো মার্কনি, আজ জমিয়ে আড্ডা দেব। : কেমন যেন আরজে-দের মতো হয়ে যাচ্ছে না ? : আরজেদের রেডিওইতো বর্তমান সময়ের ক্রেজ। তাছাড়া আমি নিজেও একসময় নিয়মিত রেডিও অনুষ্ঠান করতাম। তার বেশির ভাগই ছিল রাজনৈতিক অনুষ্ঠান। কী করব বল ? আমি আবার ইটালিয়ান মিলিটারি রেডিও ইনচার্জ ছিলাম।

: আপনার এই রেডিও আবিষ্কার নিয়ে একটু কথা ছিল। : শোন, রেডিও আবিষ্কার করাই হয়েছিল কথা বলার জন্য। তাই রেডিও আবিষ্কার নিয়ে একটু না, বেশি কথা বলতেই আমি আগ্রহী। : আপনার এই আবিষ্কারে অবদান রাখার জন্য জগদীশ চন্দ্র বসুর নাম ও শোনা যায়। এ ব্যাপারে যদি কিছু বলতেন ? : আমি বাবা মায়ের দ্বিতীয় সন্তান।

তার মানে হচ্ছে জন্ম থেকেই ভাগাভাগির ব্যাপারটা আমার মধ্যে ছিল। এই যে ১৯০৯ সালে পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল প্রাইজ পেলাম, সেটাও পল ফার্ডিন্যান্ড এর সাথে যৌথভাবে পেয়েছি। তাই আবিষ্কারের ব্যাপারটাও ধর জগদীশ চন্দ্র বসুর সাথেই না হয় ভাগ করলাম। তবে সেটা আমি সবার সামনে স্বীকার করতে চাই না। : আপনি স্বীকার না করলেও এই পেটেন্টের ব্যাপারটাতো আদালত পর্যন্ত গিয়েছিল।

: জগদীশ বসু খুবই ভাল মানুষ ছিলেন। তাই তিনি এই মামলায় জড়াননি। অন্য যারা রেডিও আবিষ্কারের দাবিদার ছিল তাদের আমি খুব সহজেই মামলায় হারিয়েছি। কারণ তারা সবাই ছিলেন বিজ্ঞানী। বিজ্ঞানের পাশাপাশি তারা আমার মত রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন না।

সেই কারণে মামলা মোকদ্দমার বিষয়গুলিও ভাল বুঝতেন না। : আমরা জানি আপনার আবিস্কারের মূল উদ্দেশ্য ছিল তারবিহীন তথ্য আদান প্রদান যন্ত্র আবিস্কার। ঠিক কি কারণে তারবিহীন কিছু করার ইচ্ছা হল ? : আসলে সেসময় চিন্তা না করলেও এখন মনে হচ্ছে বাংলাদেশের জন্য কাজটা ভালো হয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ কোন ধরনের তার পছন্দ করে না। তারা ডিশের তার কেটে নিয়ে যায়, ইন্টারনেট লাইনের তার কেটে নিয়ে যায়।

মাঝে মাঝে তারা সাবমেরিন কেবলও কেটে ফেলে। সেদিনতো পত্রিকায় দেখলাম বিদ্যুতের তার গোপনে কাটতে গিয়ে মানুষ মারা গেছে। তাদের জন্যই আমার এই বেতারযন্ত্র আবিষ্কার করা। : আপনি পরীক্ষা কেন্দ্র হিসাবে আটলান্টিককে বেছে নিয়েছিলেন, এর কি কোন বিশেষ কারণ আছে ? : অবশ্যই আছে। রেডিও আবিষ্কার করতে গিয়ে আমি বেশিরভাগ পরীক্ষা করি আটলান্টিক মহাসাগরে।

ঢাকা শহরের ভাসমান মানুষের মত বহুদিন বহু রাত আমি আটলান্টিককে ভেসেছিলাম। তার মূল কারণ আমি বলব না। : বলুন না, এত জায়গা থাকতে আপনি সমুদ্রে গেলেন কেন ? : ব্যাপারটা আসলে খুবই গোপন। তবুও তোমাকে বলি। আমার বাবা অনেক টাকা খরচ করে ছোট বেলায় আমাকে সাঁতার শিখিয়েছিলেন।

কোন এক অদ্ভুত কারণে বড় হয়ে আমি সাঁতার ভুলে যাই। মূলত গোপনে সাঁতার শেখার জন্যই আমি আটলান্টিককে গিয়েছিলাম। : স্যার, আমার আর একটা প্রশ্ন ছিল। : এই ছোকরা, তুমি এমন ভাবে আমাকে স্যার ডাকছো যেন আমি তোমার বাসার লজিং মাস্টার, ঘটনা কী ? : না মানে আপনিতো নাইট উপাধি পেয়েছিলাম। এই জন্যই স্যার ডাকা।

: ওহ হো, সেই নাইট উপাধি কেন পেয়েছিলাম জান না ? ওরা বুঝতে পেরেছিল। আমার লেট নাইট অনুষ্ঠানগুলো বেশি জনপ্রিয় হবে। : আচ্ছা এবার কিছু ব্যক্তিগত প্রশ্ন করি। আপনার জন্ম কত সালে এবং কোথায়? : আমি ১৮৭৪ সালের ২৫ এপ্রিল ইতালির বোলোগ্না শহরে জন্মেছিলাম। আর কিছু বলবে? : আপনার সঙ্গে কথা বলে খুব ভাল লাগল।

: তোমার সাথে কথা বলে আমার মোটেও ভাল লাগেনি। সারা দুনিয়ার মানুষ আমাকেই রেডিওর আবিস্কারক জানে। এর মধ্যে তুমি আবার জগদীশকে টেনে এনেছো। যাও, বিদায় হও।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।