আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কফিল আহমেদ এর কবিতা (রচনাকালঃ১৯৯৪)



মেটালিক কফিল আহমেদ না হয় রান্নাঘরে ডিম ভাঙার চুপচাপ খুনের আওয়াজ থেকে আরো বধির হবো আমি বেথাই খালের জলে আধডোবা মরা পাতিহাঁস দেখাবো আমি এবং এই মর্মে গুমোট গুদাম ঘরে আরো বলিদান হবে কুলির গর্দান স্টেজে নামবে আরো ভূতগ্রস্থ আলো আর তোমাকে শুনতে হবে সব ভুতুমপেচাঁ আত্মার ভুতুম হে পতঙ্গ পাখি লতাগুল্মঝোঁপ, দেখো- আমার দুই চোখ আটকে যাচ্ছে কীটনাশকের দুঃসহ নীলে জিহ্বায় বালি ও কাকঁর হে সাদা ভাত, প্রিয় শুকতানি আমি বিষে ও মবিলে ভাসমান বিলে-ঝিলে শ্যালোমেশিনের ধকধপ ঘোষনা বাজালাম দেখলাম এই মর্মে কারো বাড়ি কিংবা কবরের আশেপাশে কোনো গাছপালা থাকবে না মাছ দেখাবে কঙ্কাল জল দেখাবে শুকনো বালুকণা আমারই পাতে তার সবশেষ নগ্ন উপহাস দেখালাম আমি রাস্তায় আজদাহা ট্রাক ও ট্রাকের দুই চোখ দেখিয়ে তোমাকে তো বলেছি ঐ দেখো ডাইনোসর কতো বছর পর ওরা আবার এসেছে- তুমি তাকে দেবশিশু ডাকতে পারো না বাজারে নিপল এসেছে আর বাচ্চারা তাই টেনেছে তাই বলে মায়ের দুধের টান, সেই ঘুমটান কখনো ফুরাবে না আমি জানি তা এমন নয় যে, আমি বরষার জলে ভেসে যাওয়া হাঁসের উদ্দেশ্যে সেই হারিয়ে যাওয়া পাতিহাঁসের উদ্দেশে আমি গৃহিনীর থই থই ডাক শুনতে চাচ্ছি সেই ভোরবেলা কবুতরের খোপ খুলতেই তোমার উঠানে ছড়িয়ে দিতাম বাকবাকুম ভোর ও অসংখ্য ভোরের কবিতা কেরোসিনের খালিটিন বাজাতে বাজাতে গাইতাম ভোলানাথ গান আর বেপরোয়া আ আ আ যে কোন ভোরের আগমনে একটা চারাগাছের উজ্জ্বল জাগরণে সেরে উঠতাম আমি যে কোন আদিবাসী কোমরের ঘুনসি ছিঁড়ে টাট্টুঘোড়ার পেটের টাইড পেটনি ছিঁড়ে মূহুর্তে লাফিয়ে উঠতাম কিশোরীর ফ্রকের নিভৃতে জংলিছাপা ফুলের আনন্দদোলায় আরো অনাবিল দোলে উঠতাম তা এমন নয় যে আমি আমার আশু রোগ মুক্তি কিংবা হঠাত সেরে উঠবার কথাই বলছি প্রতিক্ষণে দেহ প্রতিক্ষণে মন প্রতিক্ষণে দেহ ভাঙে প্রতিক্ষণে মন প্রতিক্ষণে মেঘ। প্রতিক্ষণে মেশিন। উদাম করো মেঘ কিংবা মেশিনের সব অস্ফুট ঘুম মেটালিকা সুর ও মিলন অবারিত অনন্তের ক্ষমাহীন ফণায় থিক প্রতিটি দৃশ্য ও দৃশ্যান্তর দৃশ্যে দৃশ্যে স' মিলের যমসাঁই ব্লেড ও ব্লেডের ঝলকানি এই মর্মে আম নিম জারুলের সব মরা গোড়ালি সব উদাম করো এমনিতেই শিশুর কবরের মতো ছোট্ট আরো করুণ তোমার আমার সকলের মা ও মাতৃভূমি গরিব মেয়েটার নিরীহ স্তনের মতো ভীত-সস্ত্রস্ত সকলের প্রেম ও নির্বাক প্রকৃতি গ্রামপুলিশের খামাখা পোষাকের মতো ব্যর্থ বোকা এই অর্থহীন রাষ্ট্র ও রাজধানী এই শিল্প ও কবিতার শাদা- সব উদাম করো উদাম করো সব জল্লাদের কালা ও কাফনের সাদা উদাম করো সব জ্বলে উঠা গায়ের ঘামাচি এই রোদে ব্রা কিংবা বোরখা পরেছে মেয়েটির সারা গা ভরতি ধুতুরার জ্বালা- সব উদাম করো স্রাব ও প্রস্রাবের গন্ধসমেত দাম্পত্যশয্যায় ছড়ানো সব হাস্যময় কবিতাজীবাণু রান্নাঘর হতে দুই চোখে বাটা মরিচের লাল দগদগে ঝাল লাল গনগনে লোহা, আগুনের আঁচসহ কামারের মুখ রাস্তায় গলিত পিচের লাভায় নিঃসঙ্গ রবারের জুতা তোমার যৌবন তবু বেদেনীর চুপড়ির অন্ধকারে গোখরার ক্লান্ত ফণা ফণায় ফণায় প্রকাশিত ম্লান পদ্মফুল সব উদাম করো তোমাকে দেখতে যাবার পথে বাজারে বাজারে টাঙানো দাঁতে জিভ কামড়ে থাকা খাসির খন্ডিত মাথা কলাপাতায় রক্তের পানসি, টুকরা টুকরা কলিজা-শিনা সব বর্ষাক্লান্ত দিনের ঝিমানি কাচ্চাবাচ্চাসহ লোদে লেপ্টানো শুয়োরের জন্মঘোর এই কর্দমাক্ত কবিতা ও হৈ চৈ সজ্বির হাট সব উদাম করো এবং ভালোবাসো তোমার সবচাইতে কোমল চিকন হাড়খানি ছুঁয়ে দৃশ্যে দৃশ্যে সব গাধা ঘোড়া সাজিয়ে চলো মন শিশুপাড়া দিয়া রচনাকালঃ ১৯৯৪ প্রথম প্রকাশঃ চালচিত্র ( কিশেরাগঞ্জ )

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।