আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অমিত সম্ভাবনার দেশ-বাংলাদেশ ( ৩য় পর্ব)

এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি, সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি

বাতাস থেকে বিদ্যুৎ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ও মৌলিক সমস্যা বিদ্যুৎ। দিন দিন এই সমস্যা আরো তীব্র হচ্ছে। আর এ সমস্যা থেকে উত্তোরণের পথ হলো নতুন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করা। সমপ্রতি সরকারীভাবে উপকূল এলাকায় কি পরিমাণ বাতাস আছে তা জরিপ করছে। প্রাথমিক এক জরিপে বলা হয়েছে বাংলাদেশের উপকূলের বাতাস থেকে ২০হাজার মেগাওয়াট বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যেতে পারে [ তথ্যসূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক,১৩জুলাই ২০০৯]।

ভারত বর্তমানে উপকূলীয় এলাকা থেকে ১০হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় যেমন বাতাস ভারতীয় উপকূলেও তেমনি বাতাস আছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। প্লাষ্টিক পণ্যের রপ্তানি প্লাষ্টিক পণ্য রপ্তানি করে প্রতি বছর ২ হাজার কোটি টাকার বেশি আয় করছে বাংলাদেশ [তথ্যসূত্র : বিডিনিউজ২৪,০২ জুলাই ০৯]। বাংলাদেশ প্লাষ্টিক দ্রব্য প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির সূত্র অনুযায়ী আরো বেশি প্লাষ্টিক পণ্য তৈরি করে বিদেশে রপ্তানি করতে পারলে আরো বেশি অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধি করা সম্ভব। তবে তার জন্য প্রয়োজন বলিষ্ট পরিকল্পনা এবং এর বাস্তবায়ন।

উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশে প্লাষ্টিক পণ্যের বার্ষিক লেনদেন (টার্নওভার) ৫ থেকে ৬ হাজার কোটি টাকা। বছরে এর প্রবৃদ্ধির হার ২০ শতাংশ। বছরে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার তৈরি প্লাষ্টিক পণ্য প্রতিবছর রপ্তানি হয়। বীমা খাত বাংলাদেশের আর্থিক খাতের পরিধি বর্তমানে অনেক বিস্তৃত। প্রতিদিনই এ খাতের সাথে জড়িত বিষয়গুলোতে নিত্য নতুন ধারণা এবং সম্ভাবনা আসছে।

তথ্য প্রযুক্তির প্রয়োগে, হিসাব পদ্ধতির আর্ন্তজাতিক মান অর্জনের প্রচেষ্টা,ব্যবসায়-বাণিজ্যের নতুন নতুন ক্ষেত্র সম্প্রসারণ, ব্যাংক-বীমা খাতের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গীকার, পূজিবাজারের সাথে ব্যাপক জনগেষ্ঠীর সম্পৃক্ততা। বিশ্বব্যাপীই এ খাতগুলোতে আধুনিক ও যুগোুযোগী নিয়ম-কানুন দ্রুত আসছে। এ খাতের সামাজিক প্রতিশ্রতি বিগত শতাব্দীর তুলনায় অনেক বলিষ্ঠ ও জনকল্যাণমুখী। বাংলাদেশে কর্মসংস্থানের দিক থেকে সেবা খাতের অন্তর্গত বীমা খাতে গার্মেন্টসের চেয়ে বেশি কর্মসংস্থান হয়েছে। অথচ আধুনিক বীমা আইন, সরকারের যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা, বীমা কর্মীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ, জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে বীমার সুফল আরো জোরালোভাবে ঘরে ঘরে পৌঁছৈ দেয়া যেত।

সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলো বছরে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার পলিসি ইস্যু করে থাকে। দুর্বল কমিশন প্রথা ও অসম প্রতিযোগিতার খপ্পরে পড়ে প্রতি বছর প্রায় ৩০০ কোটি টাকা চলে যায় বিভিন্ন মধ্যস্বত্বভোগীদের হাতে। এ ছাড়া ক্ষেত্র বিশেষে পলিসি করার পর বীমা গ্রহণকারীকে তার পলিসির বিপরীতে ১০০ শতাশ ‘রিইনসিউরড টু এসবিসি’ বলে জানানো হয় এবং পলিসি ডকুমেন্টের ওপর সিল মারা হয়। এসবিসি’র কাছে পুনঃবীমা ছাড়াই সংশ্লিষ্ট বীমা কোম্পানি ওই সিলটি মেরে দেয়। তারা এ কাজটি করে মূলত বীমা গহ্রণকারীদের কাছে নিজেদের সুদৃঢ় অবস্থান করে ধরার উদ্দেশ্য।

বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে পারস্পারিক আলাপ-আলোচনা, দক্ষ বীমা ব্যবস্থাপনা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিহার, নতুন বীমা পরিকল্পনা প্রচলন, বীমা নিয়ন্ত্রক প্রশাসনকে দক্ষ ও গতিশীল করতে হবে। আর এ কাজগুলো করা সম্ভব হলে সার্বিকভাবে সাধারণ বীমার উন্নয়ন যেমন সম্ভব হবে তেমনি সম্ভব হবে দেশের উন্নয়ন। বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্মশালায় একজন অর্থনীতিবিদ বলেছিলেন, দেশে বীমা কোম্পানির সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি এ খাতে সেবার পরিধি বাড়াতে হবে। বীমা পেশায় কাজের স্বচ্ছতা আনতে হবে। গরিব জনগোষ্ঠীর আর্থিক নিরাপত্তাসহ বীমা মাধ্যমে তাদের সঞ্চয়ের দিকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

ব্যবসায়-বাণিজ্য ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা দেয়াসহ জাতীয় অর্থনীতিতে এ খাতের বিপুল সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। এ ক্ষেত্রে আমরা ভারতসহ অন্যান্য উন্নত দেশের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে পারি। বাংলাদেশকে উন্নয়ন, সাফল্য ও সমৃদ্ধি হাতছানি দিয়ে ডাকছে। রাজনৈতিক অঙ্গীকারের অনুপস্থিতি আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সবেচেয়ে বড় সমস্যা। কৃষি, শিল্প এবং সেবা খাতে উন্নয়নের সমন্বিত প্রচেষ্টা আমাদের উন্নয়নকে বেগবান করবে।

সরকারকে দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ না নিয়ে প্রতিযোগীদের জন্য নিয়ে মসৃণভাবে তৈরি করতে মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে হবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ পর্যাপ্ত আইনের আওতায় দেশের বীমা কোম্পানিগুলোর জনবলের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারলে সম্ভাবনায় এ সেবা খাতে সোনার ফসল ফলবে। জাতীয় সঞ্চয় বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, প্রবৃদ্ধি বাড়বে। এসব কিছুর জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন সঠিক ও বিস্তারিত আইন ও সরকারের বলিষ্ঠ অঙ্গীকার।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.