বাংলাদেশ লাঠিয়াল বাহিনীর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট সমাজ সেবক মনজুরুল হক চৌধুরী ওরফে রতন চৌধুরী আর নেই। হাজার হাজার ভক্ত আর স্বজনদের কাঁদিয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের পূর্ব মজমপুরস্থ নিজ বাসভবনে (কতকথা) তিনি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহে.....রাজেউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৪৬ বছর। তাঁর মৃত্যুর সংবাদ মুহুর্তের মধ্যে চারিদেকে ছড়িয়ে পড়লে আতœীয়-স্বজনদের পাশাপাশি রাত থেকে শুরু হয় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে শুভাকাংখি ও ভক্তদের আগমন। সকাল হতে না হতেই হাজার-হাজার নারী-পুরুষ তাঁর বাসভবনে ভীড় করেন মিষ্টভাষী, নম্র, ভদ্র ও সুন্দর মনের অধিকারী প্রিয় মানুষ রতন চৌধুরীকে শেষবারের মতো দেখার জন্য।
সকলের আহাজারিতে সেখানে এক হৃদয় বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সকালে তাঁর বাসভবনে উপস্থিত হন কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলী, বিআরবি গ্র“পের বিশিষ্ট শিল্পপতি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মজিবর রহমান, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আজগর আলী, সদর উপজেলা আ’লীগের সভাপতি হাজী সেলিনুর রহমান, সাপ্তাহিক ইস্পাত পত্রিকার সম্পাদক আলহাজ্ব ওয়ালিউল বারী চৌধুরী, দৈনিক বাংলাদেশ বার্তার সম্পাদক আবদুর রশীদ চৌধুরী, বিশিষ্ট গবেষক প্রফেসর ড. আবুল আহসান চৌধুরী, বিএইচটি গ্র“পের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান কাকন, জেলা বাস-মিনিবাস মালিক গ্র“পের সাবেক সভাপতি সিহাব উদ্দিন, সাবেক সাধারন সম্পদক এস.এম.রেজাউল ইসলাম বাবলু, কুষ্টিয়া চেম্বারের সভাপতি আশরাফ উদ্দিন নজু, মজমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বশিরুল আলম চাঁদ, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন লাবলুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, ব্যবসায়িক, সামাজিক, সাংস্কৃতি ও ক্রীড়া সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। গতকাল বুধবার বাদ আসর কুষ্টিয়া কালেক্টরেট চত্বরের ঈদগাঁহ ময়দানে মরহুমের জানাযার নামাজ শেষে পূর্ব মজমপুরস্থ পারিবারিক গোরস্থানে পিতা-মাতার কবরের পাশে তাঁর দাফন সম্পন্ন করা হয়। জানাযার নামাজে শরীক হন অগণিত মানুষ। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে ও অসংখ্য ভক্ত অনুরাগী রেখে গেছেন।
মনজুরুল হক চৌধুরী রতন ১৯৬১ সালে পূর্ব মজমপুর পিতৃালয়ে জন্ম গ্রহন করেন। তিনি লাঠি খেলার সর্বোচ্চ খেতাব “চক্রমণি” তে ভূষিত হন। তিনি বাংলার ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশ লাঠিয়াল বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা মরহুম সিরাজুল হক চৌধুরীর (ওস্তাদ ভাই) ছোট ছেলে। পিতার মৃত্যুর পরে লাঠিয়াল বাহিনীর হাল ধরেন তিনি। ১৯৮৫ সালে তিনি বাহিনীর সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন।
ছোটবেলা থেকেই বাবার উত্তরসূরী হিসেবে এ বাহিনীকে দেশের সর্বপ্রান্তে ছড়িয়ে দিতে তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিবেদিত ছিলেন। আগামী ৯ ফেব্রয়ারী ঢাকা বঙ্গবন্ধু জাতীয় ষ্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিতব্য সাফ গেমসে লাঠি খেলা ও বিভিন্ন কসরত প্রদর্শনের জন্য সম্প্রতি তিনি বাংলাদেশ লাঠিয়াল বাহিনীর প্রায় ১৩’শ সদস্য সংগ্রহ শেষে বাড়িতে আসেন। তিনি বাংলাদেশ লাঠিয়াল বাহিনী কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক ছাড়াও কুষ্টিয়া জেলা কারাগারের পরিদর্শক, কুষ্টিয়া ফ্রেন্ডস্ ক্লাবের সাধারন সম্পদকসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত ছিলেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।