আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সুপার মার্কেট ওনার্স এসোসিয়েশনের গোলটেবিল আলোচনা রাজধানীর ৫০ মেট্রিক টন সবজির মধ্যে ৩০ মেট্রিক টনে বিষাক্ত কীটনাশক মেশানো



সুপার মার্কেট ওনার্স এসোসিয়েশনের গোলটেবিল আলোচনা রাজধানীর ৫০ মেট্রিক টন সবজির মধ্যে ৩০ মেট্রিক টনে বিষাক্ত কীটনাশক মেশানো স্টাফ রিপোর্টার : ‘নিরাপদ খাদ্য ও ক্রেতাভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণে করণীয়' শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা বলেছেন, রাজধানীর ১ কোটির অধিক লোক প্রতিদিন ৫০ মেট্রিক টন বিভিন্ন রকম শাক-সবজি খেয়ে থাকে। বিভন্ন তথ্যানুযায়ী এসব সবজির ৩০ মেট্রিক টনই বিষাক্ত কীটনাশক মেশানো। শুধু সবজি নয় মাছ ও দুধে দেয়া হচ্ছে মানবদেহের সবচেয়ে ক্ষতিকারক জীবাণু ফরমালিন। এসব পণ্যদ্রব্য খাওয়ার ফলে বিকলঙ্গ, ডাইরিয়াসহ বিভিন্ন রোগব্যাধির ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটছে। এ ব্যাপারে সরকারিভাবে জনসচেতনতা তৈরি করতে না পারলে আগামী প্রজন্ম মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে।

গতকাল সোমবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ সুপারমার্কেট ওনার্স এসোসিয়েশন ও দৈনিক ডেসটিনি আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এসব তথ্য জানান। দৈনিক ডেসটিনির সম্পাদক রফিকুল আমীনের সভাপতিত্বে ও সহযোগী সম্পাদক ড. অনু হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য বাখেন বারডেম হাসপাতালের হেড অব দি ডেনটিস্ট্রি ডা. অরুপ রতন চৌধুরী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব আলতাফ মাহমুদ, বাংলাদেশ সুপারমার্কেট ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি নিয়াজ রহিম, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, দৈনিক ডেসটিনির প্রধান উপদেষ্টা রফিকুল ইসলাম সরকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মুনিরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর সাদিয়া আহমেদ, এসিআই'র নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ আলমগীর, ড. এম এ মনোয়ার, ড. নজরুল ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক প্রফেসর ড. খুরশিদা জাহান ও পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের প্রফেসর ড. খালেদা ইসলাম। ডা. অরুপ রতন চৌধুরী বলেন, ব্যাকটেরিয়া হলো আমাদের অদৃশ্য শত্রু। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ৬০ লাখ মানুষের ডায়াবেটিকস রোগ সনাক্ত করা হয়েছে।

সনাক্ত করা হয়নি এমন রোগীর সংখ্যা প্রায় ৫০ লাখ। এ রোগের অন্যতম কারণ হলো ফাস্ট ফুড। দেশে জীবাণু সন্ত্রাস শুরু হয়েছে। সম্মিলিতভাবে এ সন্ত্রাস মোকাবিলা করতে হবে। আলতাফ মাহমুদ বলেন, খাদ্যে ভেজাল বোমাবাজির চেয়েও মারাত্মক।

প্রডাকশনকে হাই করার জন্য কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। সরকার শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে খাদ্যে ভেজাল রোধ করা সম্ভব নয়। নিয়াজ রহিম বলেন, আমরা ব্যবসায়ীদের প্রতিপক্ষ নয়, সহযোগী হিসেবে কাজ করছি। রফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, ওষুধ বিক্রেতারা ইউনাইটেড কিন্তু ক্রেতারা ইউনাইটেড না। এজন্য অসাধু ব্যবসায়ীরা পার পেয়ে যাচ্ছে।

আমাদের জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে। জাকির হোসেন বলেন, বাংলাদেশে বিএসটিআই ও সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে দ্বিধাবিভক্তি আছে। বিএসটিআই যে পণ্য সঠিক বলে সিটি কর্পোরেশন সেটা নিষিদ্ধ করে। এ দ্বনদ্ব দূর করতে হবে। লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয় রাজধানীর ১ কোটির অধিক লোক প্রতিদিন ৫০ মেট্রিক টন বিভিন্ন রকম শাকসবজি খেয়ে থাকে।

বিভন্ন তথ্যানুযায়ী এসব সবজির ৩০ মেট্রিক টনই বিষাক্ত কীটনাশক মেশানো। শুধু সবজি নয় মাছ ও দুধে দেয়া হচ্ছে মানবদেহের সবচেয়ে ক্ষতিকারক জীবাণু ফরমালিন। এসব পণ্যদ্রব্য খাওয়ার ফলে বিকলঙ্গ, ডাইরিয়াসহ বিভিন্ন রোগব্যাধির ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটছে। এসব কীটনাশকের ক্ষতিকারক দিক এত বেশি প্রবল যে মায়ের গর্ভজাত সন্তানের মধ্যেও এ জীবাণু সংক্রমিত হয়। প্রবন্ধে আরো উল্লেখ করা হয় দেশের জনগণের মধ্যে শতকরা ৭০ ভাগ মানুষের রক্ত শূন্যতা, শতকরা ৭৯ ভাগ মানুষের ক্যালসিয়াম ঘাটতি ও শতকরা ৪৮ ভাগ মানুষের ভিটামিন সি ঘাটতি রয়েছে।

বর্তমানে খাবারের দোকানের মালিকরা খাবারে বিভিন্ন রং ও ক্যামিকেল মিশ্রণ করে ক্রেতাদের আকর্ষণ করছে। কিন্তু এসব মানবদেহের জন্য খুব ক্ষতিকর। দেশে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে যুগোপযোগী আইনকানুনের অভাব রয়েছে। এ ব্যাপারে সরকারিভাবে জনসচেতনতা তৈরি করতে না পারলে আগামী প্রজন্ম মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। ড. খুরশিদা জাহান বলেন, খাদ্যে ভেজালের ভয়াবহতা অনেক দূর অগ্রসর হয়েছে।

আমাদের খাবারে এমন জীবাণু ঢুকছে যা ক্যান্সারের মত মারাত্মক স্থায়ী রোগে রূপ নিচ্ছে। খাদ্যের টেম্পারচার নিয়ন্ত্রণ করতে সরকারিভাবে প্রশিক্ষণমূলক কোর্স চালু করতে হবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।