আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সুপার কুল পোস্ট-১

............................................

জনি প্রচন্ড পরিমাণে অভিমানী। সে তার অভিমানের সব কথাগুলো আবার খুব সুন্দর করে মনে রাখে। আমি বলি, জনি এত সব মনে রাখতে হয় না। মনে রাখলে মানুষ পাগল হয়ে যায়। পাগলদের ব্রেইন কিন্তু ভীষণ শার্প ...খেয়াল করে দেখিস।

কিন্তু কে শোনে কার কথা। সেগুলো বলার আগে খুব মন খারাপ করে বলে নেয় ‘জানো এই কথাটা না আমার চিরকাল মনে থাকবে’। সে আমার ৬ মাসের ছোট। এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। সে আমাকে আপনি, তুমি এমনকি মাঝে মাঝে তুইও বলে।

কখনো বা নাম ধরে কখনো বা আপা ডাকে। মাঝে মাঝে তার দুঃখ কষ্টের কথা শুনলে প্রচন্ড হাসি পায় কিন্তু হাসা যায় না কারণ তাতে সে কষ্ট পায়। একদিন ওর রুমে গিয়ে দেখি পরীক্ষা দিতে যাবে বলে রেডি হচ্ছে। চোখ মুখ ফোলা ফোলা। আমি একবার ভাবলাম জিজ্ঞেস করি সে অসুস্থ কিনা।

আবার ভাবলাম টেনশনে হয়ত ঘুমাতে পারেনি তাই এমন হয়েছে। জিজ্ঞেস করলাম, নাশ্তা করেছিস? ও বললো, না করিনি। আপনি করেছেন? আমি বললাম, আমিও না। তাহলে চল একসাথে করি। তাকে মনে হচ্ছিল সে খুবই উদাস।

আমি জিজ্ঞেস করলাম, রিভিশন দেয়া হয়েছে ঠিক মতো? সে আমার কথার উত্তর না দিয়ে খুব মন খারাপ করে তার বিখ্যাত ডায়লগটা বললো, আজকে সকালে এমন একটা ঘটনা হয়েছে তা আমার চিরকাল মনে থাকবে। আমি অবাক হয়ে বললাম, কী হয়েছে? সে বললো, আমি আজকে সকালে ব্যাপারটার জন্য ১ ঘণ্টা কানছি। আমি বললাম, কী হয়েছে বলবি তো। সে বললো, পরীক্ষাটা দিয়ে এসে বলবো। এখন সময় নেই।

আমি বললাম, ঠিক আছে। ওর ওই কথাটা ব্যস্ত থাকার জন্য আমার দুইদিনেও শোনা হয়নি। সে ভীষণ আহত হয়েছে এতে। তার অভিমান..... ঐ দুইদিন আমি নাকি ওকে না চেনার ভান করেছি। এইটাও তার চিরকাল মনে থাকবে! অনেক চাপাচাপি আর গুতাগুতির পর সে বললো সেইদিনের সকালের ঘটনা।

ঘটনাটা হলো...এক লোক তাকে ফোন করে বলেছে জনি নির্লজ্জের মতো তার সেল চুরি করে ব্যবহার করছে। এই ধরনের কথা শুনলে কী হাসতে হাসতে হাসিখুশি হয়ে যেতে হয় না? আমি নিজেকে যথেষ্ট গম্ভীর রাখার চেষ্টা করতে গিয়ে ব্যর্থ হলাম ! সমস্যাটা আসলে আমারই। এই সাংঘাতিক গরমের মধ্যে আমি এবার গরমই টের পেলাম না। মানুষকে এই কথা বললে এমনভাবে ‘হা’ করে তাকিয়ে থাকে তখন মনেহয় বলি, এই মুখটা একটু বন্ধ করো তো..... তবে সত্যি কথা বলতে কি ২ দিন ধরে গরমে ঘুমাতে একটু কষ্ট হয়েছে। মানুষের গরম লাগার দরকার আছে।

নাহলে মেজাজ নিয়ন্ত্রণে থাকে না। মেজাজের নিয়ন্ত্রণের সংজ্ঞা আমার কাছে একটু ভিন্ন। কান্নার ব্যাপারে ঠিকমতো কাঁদতে হবে, হাসার ব্যাপারে হাসতে হবে এবং একইভাবে রাগার ব্যাপারে রাগ করাই হলো আমার কাছে মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রাখা। তবে কোনো কিছু অতিরিক্ত হয়ে গেলে অবশ্য সেটা মেজাজের নিয়ন্ত্রণহীনতা। আমার সমস্যা হচ্ছে....কথা বলতে পারছি না, হাসতে পারছি না, রাগ করতে পারছি না।

কান্নাকাটির কথা বাদ...এটা আমার মধ্যে নাই। তবে কান্নাকাটি না করলেও আমি পাগলের মতো প্রলাপ বকি প্রায়ই। আজকে এক কাজিনের বাসায় দাওয়াত ছিল। সেখানে যেয়ে দেখলাম ভাগ্নেরা আমাকে ভয় পাচ্ছে না এবার। মনটা উদাস হয়ে গেল এতে আমার।

বাচ্চাগুলো এমনই হয়েছে যে মা-বাবার কাউকেই ভয় পায় না। এইবার আমাকেও কেয়ার করলো না তারা!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।