আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কাংখিত করালগ্রাস



ভাগ্যের নির্মম পরিহাস আমাকে দাবড়ে বেরাচ্ছে জীবনের এক অদ্ভুত লোকালয়ে। কি যে আমি ঠিক করে বেরাচ্ছি, তার কোন explanation আমার কাছেই নেই, কাকে কি দিব। এমনটা হ্য়? এমনটা কেমন করে হ্য়? আর এমনটা হবার পরে আবার অন্যরকম হয় কি করে ? I do biliv nothing , I dont disbiliv anything........... বলে এসেছি বলেই কি আজ আমার এই অবস্থা। অসহায়ত্ত্বের এমন শিকল আমার উপরেই কেন ছিড়ে পড়ল? কি এমন বিশেষত্ব আমার। কি এমন, কি এমন? জীবনের উর্বর প্রান্তরে আপন মনে হেসে খেলেই তো আমি চলি।

হাসি, হাসিয়ে বেড়াই, নিজের patent করা কষ্ট গুলো তাড়িয়ে বেড়াই, উদাস হয়ে বসে থাকি, ঔদাসিন্যে ভীষন চপলতা নিয়ে, চন্চলতা নিয়ে। সময়ের প্রবাহমানতা আমাকে না দিয়েছে প্রাপ্তির প্রাচুর্যতা , না কেড়ে নিয়েছে শৈশবীয় আগ্রহ, কৈশরীয় জীবনবোধ, বরন্চ আমাকে ঘিরে ধরেছে স্বাপ্নিক দার্শিনকতা। স্বপ্নই আমার দর্শন। আমি স্বপ্ন দেখি, কি অবাস্তব (?), অথচ কি transparent, কত ক্ষুদ্র আমার স্বপ্ন গুলো। ক্ষুদ্র বলেই কি আমার সে স্বপ্ন আর পূরণ হয়ে ওঠে না? সারাটা জীবন ভেবে এসেছি আমার চিন্তার বিক্ষিপ্ততা নিয়ে, সারাটা জীবন নিজেকে তৈরি করেছি এক বুভুক্ষু হৃদয়ের কান্ডারী হিসেবে।

তাই আমার হাসির ফোয়ারায় থেকেছে জীবনের মাদকতা, উচ্ছলতা, গহীনে থেকেছে এক অজানা বিষাদের তীব্র ছো্য়া। তবে কি মানুষ জানে, সে আসলে কোন পথে হাটবে? কোথায় যাবে? তবে কি যে মানুষ তার প্রিয়ার হাত ধরে dance floor এ tango নাচার পরে বাইরে এসে accident এ পা হারিয়ে ফেলবে, সে কি সেটা আগে থেকেই জানে? সময় কি তাকে কোন এক ফাকে তেমন একটা ধারণা দিয়ে থাকে? তাই যদি না হ্য়, তবে সে মানুষ পা হারিয়ে কোন একদিন কেন আবার হাসতে পারে? তবে আমার কি হলো? আমি কেন নিজেকে এতো দুর্বল ভেবেছি? আমি তো আমার এই কষ্ট সমুদ্রের এমন তীব্র স্রোতের দাবদাহ অবগাহন করে এসেছি সেই সোনালী ভোর থেকে। আচ্ছন্ন থেকেছি, দাপিয়ে বেরিয়েছি অনাগত রুপালী কষ্টের স্নিগ্ধ জলপ্রপাতে। নিজেকে তৈরি করেছি জীবনের প্রতিটি পরতে পরতে। হাসির দমকে দু:খকে বাস্পায়িত করার সে আমার কি প্রানান্তকর প্রচেষ্টা? তবে কেন আজো আমার সে ক্ষ্টকে আলিন্গন করতে এমন অনীহা? কষ্টের মধ্যে যার অহর্নিশ বসবাস, তার আবার কষ্টের দমকে অস্থির হয়ে ওঠা? জীবনের উঠতি দুপুরে বিকেলের আকাশ, সূর্যের আপাত কোনে কিরণ নিক্ষেপে বাতাসে এ তার নানাদিকে বিচ্ছুরন, ,scattering…. তাই বুঝি আলোকিত আকাশটা তীব্রতার অভাবে এমন অদ্ভুত ঘোলাটে।

এমন ভাবে অপেক্ষা করা যায়? কি বলব তাকে, 'অপেক্ষা´ 'প্রতিক্ষা´ নাকি 'তিতিক্ষা´? যাই বলি, আমি তো সয়েও নিয়ে ছিলাম আমার সেই অপেক্ষার প্রহরের জ্বালা, পথ চেয়ে বসে থাকাতেই ছিল আমার সকল সুখ। আপনমনে ফুলে ফুলে সাজিয়ে গেছি আমার জীবনের আসন্ন আংগিনা, কল্পনার অজস্র রঙ দিয়ে সাজিয়েছি আমার সকল প্রান্তর, উচ্ছেসিত আবেগ জড়িয়ে আছে যার প্রতিটি দৃশ্য কল্পনায়। এক চিলতে পথ ভ্রষ্ট হইনি আমি তাই বাস্তবতার করাল গ্রাসে, খুব করে, খুব করে বুকে জমিয়ে রেখেছি আমার হৃদয়ের বকুল, শিশির স্নাত স্নিগ্ধ করবী শাখা গুলো আমার কল্পলোকের বিশাখা কে অর্পন করব বলে। খুঁজে বেড়িয়েছি আমি ধুসর প্রান্তর, উর্বর জনপদ, দীঘল শণ পূর্ন বনান্চল, আমি ছুটে গেছি দশ দিকে, খুটিয়ে খুটিয়ে চিনে নিতে চেয়েছি আমার সেই কল্পলোকের অহনা কে, অনামিকা কে। পথের ক্লান্তিতে, জীর্ণ শোক, তাপের দীর্ণতায় কখনো কখনো হোঁচট খেয়েছি, ছলাত করে রক্ত বেরিয়ে এসেছে, ছোপ ছোপ রক্তে রাঙা হয়ে গেছে আমার সপ্ত আকাশ, তবুও তো আমি খেই হারায়নি, আমি থেকেছি অবিচল আমারই পথের খোজে, আমার নিশানার তাক এ।

অতি দূর মহাকাশ থেকে আমি ছুটে চলেছি অসীম গতি নিয়ে, নিহারীকা, ধুমকেতূ হয়ে সে আমার কি অদ্ভুত আকূলতা নিয়ে ছুটে চলা! দিন আসবে, দিন আসবে.. তবে কি বায়ুমন্ডলে প্রবেশ করে ভস্সীভূত হতেই আমার এমন প্রানান্তকর প্রচেষ্টা? কেন আমার এমন মরণ রোগ? কেনো আমার ধ্বংস হবার সুনির্দিষ্ট, সুপরিকল্পিত পথ পরিভ্রমণ.... হিমালয় এর সু উচচ চূড়া থেকে আমি গড়িয়ে পড়েছি আনমনে, নিজেকে বারে বারে বিক্ষেপিত করেছি ভেতর থেকে উঠে আসা ক্ষয় রোগের গানে, আমি গড়িয়ে গেছি, গড়িয়ে গেছি, গরিয়ে গেছি ... তবে কেন আবার আমার থমকে যাওয়া? ভালই তো ছিলো আমার সেই পথ চলা, বারি খাচছিলাম, আছড়ে পড়ছিলাম, কেটে ফেটে যাচ্ছিল, রক্তের সুবাসে সেখানে জীবনের গন্ধ ছিল, সেটাকেই কেন আমি চিরস্থায়ী করে নিলাম না, কেন ঘাটি গাড়ার পাঁয়তারা করতে গেলাম, কেনো? কেনো? বহতা নদীর তীব্র স্রোতেও তো ঘুর্ণিপাক থাকে, তাই কি আমার জীবনেও সেই ঘুর্ণির উপস্থিতি অবশ্যম্ভাবী? পাক খেলেও সে পাক খাওয়া জলরাশির (whirlpool) ও তো সম্মুখ গতি থাকে সামষ্টিক জলস্রোতের কারনে- একদিন ঠিকই পৌছে যায় মোহনায়। তবে আমার কেন এই পরিনতি, আমি কি করে এমন তীব্র স্রোতে পাক খেতে খেতে শেষটায় মোহনায় গিয়ে দেখলাম সমুদ্রের পরিবর্তে চিক্কণ বালুর দাবদাহ, অগ্নি খরা মরুভূমি। পাখা ঝাপটিয়ে গভীর জলের বুকে ভেসে বেরায় অচেনা চিল, রৌদ্রের তাপে নদী জলের গন্ধ তার নাকে আনে জীবনের আস্বাদ, অদ্ভুত ভ্রমণ বিলাস পেয়ে বসে তাকে, সে উড়ে চলে, উড়ে চলে..পাখা ঝাপটিয়ে ক্লান্ত হয়, শ্রান্ত হয়, রক্তের স্পন্দন দ্রুত থেকে দ্রুততর হয়ে আবার ঝিমিয়ে আসে, চোখ বুজে আসে তবু যে তার নেই চলার কোন বিকল্প, নদী জল যে তাকে বুকে ধরার সাহস পায় না, তাকে নামতে দেয় না, থামতে দেয় না শুধু গন্ধে আকুল করে চলে... বৃষ্টি কাদায় পিচ্চিল গেয়ো পথে দুষ্ট অন্ধ বালকের পথ চলার আনন্দময় কলরব বয়সের ভারে কখন যে বড় কঠিন হয়ে আসে, সেই সব সমীকরণ মেলাবার সময় কোথায়, সময় কোথায়? আরব যে বেদূয়ীন caravan এই জনমে, ছুটে চলে দিনের পর দিন, তার কাছে প্রবাহমানতাই তো স্থিরতা, তার স্থিরতা মানে তো সুনিশ্চিত ধ্বংস। মরু ঝর, জ্বোস্না প্লাবিত বালিয়াড়ি, বালাদের ছুড়ির ফলায় হৃদয়ের চিড়, তাকে ডেকে যায় সামনের পানে, সে এগিয়ে চলে, গতিতে সে স্থির থাকে। পাল তোলা নৌকায় করে সুদুঢ় বন্দরের পানে বালক নাবিকের প্রথম যাত্রার মতো এক অনিশ্চিত অচেনা অনুভূতি তাকে কি বকুল কুড়াবার মাহেন্দ্রক্ষণে তপতী'র হাসিরাঙা মুখ, বকুল ভরা বাড়িয়ে দেয়া হাত ভুলিয়ে দেয়, নাকি নদী যেখানে অসীমে হারিয়েছে আকাশের পাদদেশে, সেখানে রোদের ঝিকিমিকি'র সাথে সে মুখ মিলিয়ে দিয়ে তাতে আনে নতুন ছন্দ, ধরফর করে ওঠে বুক - সেটা কিছু হারাবার নাকি কিছু পাবার সে যে থেকে যায় রহস্যের অন্তরালে, কি যেন একটা তীব্র চিতকার এ বোবা হয়ে আসে অভীজ্ঞতাহীন মনরাজ্য, কতকিছু মুহূর্তে উকি দিয়ে হারিয়ে যায় অজানায় তার চেয়েও তীব্রতায়, থেকে যায় মনরাজ্যের গভীরে প্রথিত হয়ে, ধ্বংস হয়ে যাওয়া এক সমৃদ্ধ সভ্যতার নিদর্শন।

ফাগুনের প্রথম লগনে গজিয়ে ওঠা কচি পাতায় বিনাশী মোরক (disease) লাগলে হৃদয়ের তাম্র-আসনে প্রিথিবীর সকল যাদুকর ঢোলকের ঢোলের মাতমে বেজে ওঠে প্রলয়ংকারী সুর, সুনিশ্চিত ধ্বংসযজ্ঞ। পুবাকাশের সূর্য কে বৃদ্ধান্ঙুলি দেখিয়ে সন্ধ্যা নামে জীবনে- অসহায়ত্ব বুঝি তখন পেখম মেলে নাচে। গভীর সমুদ্রের বুকে দিক হারানো পাল ভাঙা নাবিকের খাবার ফুরিয়ে আসার মত ফুরিয়ে আসে জীবনের ছন্দ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.