আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নিজামীর ডিগবাজী


আবারো ডিগবাজী খেলেন নিজামী। এক দিন পার না হতেই উল্টে গেলেন নিজামী। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টন হত্যাকাণ্ডের জন্য জামায়াতে ইসলামীর আমির গতকাল বুধবার সরাসরি আওয়ামী লীগকে দায়ী করেছেন। আগের দিন মঙ্গলবার তিনি ওই ঘটনার জন্য অদৃশ্য শক্তিকে দায়ী করে এর সুষ্ঠু তদন্ত চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। গতকাল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ঢাকা মহানগর জামায়াত আয়োজিত সমাবেশে মতিউর রহমান নিজামী বলেন, ‘ওই পৈশাচিক ঘটনা যারা ঘটিয়েছে, তাদের হাতে ক্ষমতা দিয়ে মইন উ আহমেদ (সাবেক সেনাপ্রধান) দেশের বাইরে চলে গেছেন।

’ আগের দিন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ছাত্রশিবির আয়োজিত সমাবেশে নিজামী বলেছিলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করব, এক-এগারোর মহানায়কেরা মূল ঘটনা ঘটিয়েছিল কি না, তা যাচাই করে ওই ঘটনার দায়দায়িত্ব থেকে মুক্ত হওয়ার সুযোগ আপনার আছে। ... মূলত এক-এগারোর মাধ্যমে বাংলাদেশে জরুরি অবস্থা জারি করে দেশকে রাজনীতিশূন্য করা ও মাইনাস-২ ফর্মুলা বাস্তবায়নের জন্য যারা কলকাঠি নাড়িয়েছিল, তারাই ২৮ অক্টোবরের ঘটনায় কলকাঠি নাড়িয়েছে। ’ গতকালের সভায় নিজামী বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের হত্যাকাণ্ড না ঘটলে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি জরুরি অবস্থা জারি হতো না। জরুরি অবস্থা জারির পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ছিল। নিজামী দাবি করেন, জরুরি অবস্থায় সাবেক সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদ রাষ্ট্রপতি হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।

কিন্তু সেনাবাহিনীর সমর্থন না পাওয়ায় তিনি তাঁর মনোবাসনা পূর্ণ করতে পারেননি। নির্বাচনে চারদলীয় জোটকে হারানো হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ বলেন, বর্তমান সরকার দেশে ইসলামি রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, ইসলামের মূল শক্তি হিসেবে জামায়াতকে আঘাত করা, ভারতকে করিডর দেওয়া, ধর্মহীন শিক্ষানীতি জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া এবং বিদেশিদের হাতে দেশকে তুলে দিতে চায়। লক্ষ মানুষ জীবন দিয়ে হলেও এ ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে। বিশেষ অতিথি জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবদীন ফারুক বলেন, সংসদে যেতে পারলে সেখানেই ২৮ অক্টোবরের ঘটনা নিয়ে বক্তব্য দিতেন তাঁরা।

কিন্তু যে সংসদে এসব বিষয়ে কথা বলা যাবে না, সেখানে গিয়ে লাভ কী? সংসদে যাওয়ার পরিবেশ তৈরি করতে সরকারি দলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ২৮ অক্টোবর দলীয় কর্মীদের ভূমিকা প্রসঙ্গে বলেন, ‘সেদিন বিনা প্রস্তুতিতে আমাদের বীর ভাইয়েরা লড়েছেন। ’ সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর দল ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তা আমরা বিশ্বাস করতে চাই না। কিন্তু সরকার একতরফাভাবে মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করে আমাদের এটা বিশ্বাস করতে বাধ্য করছে। ’ আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার প্রসঙ্গ তুলে বলেন, এই সরকার কথায় কথায় অতীতের হত্যাকাণ্ডের বিচারের কথা বলে।

সরকার আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হলে ওই দিনের ভিডিও ফুটেজ দেখে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করুক। মহানগর জামায়াতের আমির রফিকুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় জামায়াতের সাংসদ হামিদুর রহমান আযাদ, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী এবং জামায়াত ও শিবিরের শীর্ষস্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন। খবর: প্রথম আলো।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।