আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রেমিকার চিঠি বলে কথা

এই পৃথীবি আর ভাল লাগেনা চল আমরা চাঁদের দেশে চলে যাই

কুমিল্লা আমার বাড়ি আমরা আট বন্ধু একসঙ্গে তিন বছর ছিলাম। কত স্মৃতি যে মনে পড়ে, সব কি আর লিখে শেষ করা যায়! বন্ধু তানিম কথা খুব মনে পড়ে। তার প্রেম ভেঙে যাওয়ায় সে দিন-রাত খুব কাঁদত। আর আমরা তাকে সান্ত্বনা দিতাম। বলতাম, তুই ওর চেয়ে ভালো মেয়ে পাবি—এই মেয়ে তোর যোগ্যই না।

বন্ধু সাগর শুধু প্রেমের চিঠি লিখত। সে আমাদের চিঠি পড়ে শোনাত, আর মন্তব্য জানতে চাইত। অপর বন্ধু মৃগেন ছিল রাগী স্বভাবের। মেয়েদের কাছে গেলেই সে মাথার চুলে হাত দিত। তার কণ্ঠস্বর বদলে যেত।

সে প্রেমিকার চিঠি বালিশের নিচে রেখে ঘুমাত। আমরা সেই পুরোনো চিঠি চুরি করে নতুন খামে ভরে ডাকপিয়নের হাতে দিতাম, আবার তার কাছে পাঠানোর জন্য। চিঠি পেয়ে তার সেকি আনন্দ! আমরা বলতাম, দোস্ত, চিঠি পেয়েছিস, আজ আমাদের খাওয়াবি। সে বলত, আচ্ছা খাওয়াব। কিন্তু চিঠি পড়ার পর তার সেকি রাগ! মনে পড়ে বন্ধু দীপেনের কথা।

তার প্রেমের সঠিক কোনো হিসাব ছিল না। কলেজ থেকে এসেই বলত, আজ অমুক মেয়ের সঙ্গে প্রেম হয়ে গেল। মোট হলো ৩৫টা। সেঞ্চুরি আমার করাই চাই। কোনো মেয়ের সঙ্গে কথা বলতে পারা মানেই যে প্রেম হয়ে যাওয়া নয়, এটা তাকে কে বোঝাবে।

বন্ধু আলোর কোনো প্রেমিকা নেই বলে খুব দুঃখ ছিল। আমাদের কাছে সে বলত, আমার জন্য একটা ব্যবস্থা করে দে। তোদের তো অনেক বান্ধবী আছে, সেখান থেকেই...। আমরা বলতাম, তুই যে হাড়কিপটে, টাকা খরচ না করলে কি প্রেম হয়? আগে আমাদের খাওয়া। মধু নামে বন্ধুটিরও কোনো প্রেম হয়নি।

কারণ তেমন কিছু নয়। তার মাথায় চুল প্রায় নেই। সে বলত, দোস্ত, কী করি বল তো? আমার মাথা দেখে তো কেউ প্রেম করতে চায় না। আমরা বলতাম, দোস্ত, টুপি পর। আর বাজারে অনেক রকমের তেল বেরিয়েছে, যা মাথায় মাখলে টেকো মাথায় চুল গজানো সম্ভব।

সে আপ্রাণ চেষ্টা করত। মাথায় রোজ কত কী যে মাখত! দুই দিন অন্তর সে আমাদের কাছে মাথা নিচু করে চুল গজিয়েছে কি না দেখতে বলত। আমরা বলতাম, হ্যাঁ দোস্ত, একটু গজিয়েছে মনে হয়। সে বলত, হাত দিয়ে ভালো করে দেখ। আমি মাথায় হাত দিয়ে দেখতাম (ফাঁকা)।

আট বন্ধুর মধ্যে রনি ছিল বাচাল ও দুষ্টু। তার কথার যন্ত্রণায় ঘুমাতে পারতাম না, পড়তে পারতাম না। সে দাবি করত, প্রেম করা তার কাছে একদম নস্যি। ইচ্ছা করলেই সে যখন-তখন যেকোনো মেয়েকে তার প্রেমে ফেলতে পারে। আসলে আমাদের সঙ্গেই ছিল তার যত বাচালতা।

মেয়েদের কাছে গেলেই সে চুপ, তখন সে সবচেয়ে ভদ্র; যেন কথাই জানে না। তার আজও কোনো প্রেমিকা জুটেছে বলে আমার জানা নেই। শুনেছি, বাবু সেই প্রেমিকাকেই বিয়ে করেছে; যার জন্য সে দিনরাত কাঁদত। এই বাবুই আমার একটা চিঠি সিলিং ফ্যানের সঙ্গে আঠা দিয়ে লাগিয়ে রেখেছিল। ঘুমাতে গিয়ে ওপরে তাকিয়ে দেখি, ফ্যানের সঙ্গে আমার চিঠিও ঘুরছে।

প্রেমিকার চিঠি বলে কথা! সেদিন খুব রাগ করেছিলাম। এম ডি ইয়াছিন মিয়া .

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।