আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রেস্টুরেন্টের দিনগুলি- (শেষ পর্ব)

ইচ্ছেমতো লেখার স্বাধীন খাতা....

গাড়িতে করে যাবার সময় রেস্টুরেন্টে নতুন যোগ দেয়া একজন কিচেন এসিস্ট্যান্টের সাথে কথা বলছিলাম। তিনি বহু বছর ধরে বৃটেনে আছেন। নিজেকে একজন বৃটিশ-বাংলাদেশী বলে পরিচয় দিলেন। “তোমার পড়াশোনা করার দরকার কি? এতো টাকা খরচ করে কি লাভ?” আমাকে বারবার এসব প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করছিলেন। আমি কোনো জবাব দিতে পারছিলাম না।

বাস্তবেই বৃটেনে এসে পড়াশোনা করে চাকরি-বাকরির ক্ষেত্রে কোনো সুবিধা হয় এমন কোনো যুক্তি-প্রমাণ পাচ্ছিলাম না। তিনি জানালেন, এখন কিচেন পোর্টার হিসেবে কাজ করলেও ওনার অভিজ্ঞতা বেশ বড়। এর আগে তিনি রেস্টুরেন্টের মালিক ছিলেন। কিন্তু লাভ করতে না পেরে এখন তা বিক্রি করে দিয়েছেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক বহু মানুষের সাথে তার খুব ভালো যোগাযোগ আছে বলে জানালেন তিনি।

বৃটেনে এ সময় নির্বাচন নিয়ে বেশ আলোচনা চলছিলো। কয়দিন আগে নির্বাচন হয়ে গেল। যাবার পথেই গাড়িতে বসে তারা এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলেন। তাদের মধ্যে একজন আছে লেবার পার্টির কর্মী। আমি নির্বাচনে লেবার পার্টিকে ভোট দিয়েছি, একথা জানাতেই অন্যরা বেশ অবাক হলো।

তাদের জানা নেই যে, কমনওয়েলথ দেশগুলোর নাগরিকরা বৃটেনে থাকার সময় ভোটার হতে পারে। তারা মনে করেছিলো আমি ভোটার না। রাত দেড়টার দিকে বার বন্ধ করার পর সাধারণত আমার কাজ শেষ হয়ে যেত। কিন্তু কখনো কখনো কিচেনের ধোয়া-মোছার কাজ শেষ করতে আরো এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো। এ সময় আমাদের কাজ থাকতো না।

অন্য একজন ওয়েটার মনোয়ার বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনায় খুব আগ্রহ ছিল। রাতে গাড়িতে করে পৌছে দেবার আগে অপেক্ষা করার জন্য অনেক সময় আমরা গাড়িতে যেয়ে বসতাম। মনোয়ার আমার কাছে মহাকাশের বিভিন্ন বিষয়, গ্রহ-নক্ষত্র বিষয়ে জানতে চায়। আমিও তাকে আমার সাধ্যমতো জানানোর চেষ্টা করি। মহাকাশে সৌরজগৎ সম্বন্ধে তার কিছুটা ধারণা ছিল।

কিন্তু সৌরজগতের বাইরের গ্রহ-নক্ষত্রের বিশালতা, ছায়াপথ, গ্যালাক্সি ইত্যাদি বিষয়ে ধারণা কম ছিল। কিন্তু আগ্রহের কোনো শেষ ছিল না। মহাকাশে সৌরজগতের বাইরে আবিষ্কৃত গ্রহ বিষয়ে তার কোনো ধারণা ছিল না। তাকে গ্লিস৫৮১সি নামে ২০.৫ আলোকবর্ষ দূরের একটা গ্রহের নাম শিখিয়ে দিলাম। এলিয়েনদের বিষয়েও তার আগ্রহের কমতি ছিল না।

তবে এলিয়েন প্রাপ্তি বিষয়ে তাকে কোনো সুখবর দিতে পারলাম না। পরে সে রেস্টুরেন্টের অন্যান্য কর্মচারীদের এসব দুর্বোদ্ধ কথা বলে নিজেকে জ্ঞানী প্রমাণ করতো। সিলেটি উচ্চারণে আমার দক্ষতা কম থাকায় তাদের গ্রুপ আলোচনায় খুব কম অংশ নিতাম। তবে একজন বা দুইজনের সঙ্গে আলাপ করতাম ঠিকই। ভাষাগত দক্ষতাও দিন দিন বাড়ছিলো।

সিলেটি ভাষায় আমার প্রধান সমস্যা হচ্ছে, আমি তাদের প্রায় সব কথাই বুঝতাম কিন্তু আমার কথা তাদের বুঝতে কষ্ট হতো। একদিন শায়খ ভাই পায়ে ব্যথা পেয়ে রেস্টুরেন্টে এসেছিলো। আমার কাছ থেকে কয়েকটা বরফ নিয়ে পায়ে লাগাচ্ছিলো। তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, “পায়ে ব্যথা পেয়েছেন কিভাবে?” তিনি বুঝতে পারলেন না। পরে কথাটা ওনার জন্য একটু বোধগম্য করার জন্য বললাম, “ব্যথা পাইসেন কেমনে?” তিনি তবুও বুঝতে পারলেন না।

তাকে বোঝানোর জন্য কথাটা ইংরেজিতে বলতেই হলো। তারপর বললেন, তিনি সিড়ি দিয়ে নামার সময় “দুখ” পেয়েছেন। তখন বুঝলাম “ব্যথা” শব্দটা ওনার অপরিচিত। শিখলাম সিলেটি উচ্চারণে “ব্যথা”কে “দুখ” বলে। তবে আমার কথা তাদের দুর্বোদ্ধ হলেও কাজের স্বার্থে আমি তাদের কথা বোঝার জন্য প্রাণপণে চেষ্টা করতাম।

খুব বেশী সমস্যা হলে ইংরেজিতে বুঝে নিতে হতো। ইংরেজিতে বুঝে নিলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাড়তি কিছু বিরক্তি ও ধমক-ধামক শুনতেই হতো। একদিন ঠাণ্ডা লাগার কারণে সম্ভবত ঘাড় বেশ শক্ত হয়ে গিয়েছিলো। ঘাড় ঘুরাতে বেশ কষ্ট হচ্ছিলো। হেড ওয়েটার এজন্য বেশ বিরক্ত বোধ করছিলো।

আমি একটু ভয়েই ছিলাম। ঘাড়ের এই সমস্যার কারণে নতুন কোনো অপবাদ শুনতে হয় কিনা। তবে এ সমস্যা দ্রুত কেটে গেল। এর মধ্যে কয়েকজন স্টাফের সন্দেহ হয়েছিলো যে, আমি কানে কম শুনি। যদিও সমস্যাটা ঠিক কম শোনার জন্য ছিলো না, সমস্যাটা ছিলো তাদের উচ্চারণ বুঝতে না পারা সংক্রান্ত।

তবু তারা মাঝে মঝে এমন ভাব করতো যেন আমি কানে কিছুই শুনি না। একদিন রেস্টুরেন্টের মালিক এসে পিছন থেকে বলে গেল গ্লাস ধোয়ার জন্য সিঙ্কে পানি জমাতে। কিন্তু আমি তখন অন্য একটা অর্ডারের গ্লাস সাজানোর জন্য ব্যস্ত ছিলাম। তাই পানির কাজ শুরু করতে দেরী হচ্ছিলো। এর মধ্যে মালিক আবার আমার কানের কাছে এসে চিৎকার করে বললো পানি লাগান।

কথাটা সে কানের এতো কাছে এসে এতো জোরে বললো যে শুধু শব্দই নয়, তার মুখের বাতাস ও পান খাওয়া থুথুর ছিটা আমার কানে এসে লাগলো। আমি মুখে কিছু না বললেও খুবই মন খারাপ হলো। চাকরিটা ছেড়ে দেয়ার পুরনো ইচ্ছাটা আবার বাড়তে লাগলো। অবশ্য প্রতি সপ্তাহেই আমার এই ইচ্ছাটা হতো। তারপর মজুরির টাকাটা হাতে পাবার পর আবার মন কিছুটা ভাল হতো।

ঢাকায় থাকতে কি করতাম, কোথায় পড়াশুনা করতাম ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ওয়েটার সুজা ভাইয়ের খুব আগ্রহ ছিল। আমার পূর্ব ইতিহাস রেস্টুরেন্টের কাউকে জানানোর তেমন একটা ইচ্ছা ছিল না। কেউ এ সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলে বলতাম যে, কিছুদিন একটা ছোটখাট চাকরি করেছি। তবু সুজা ভাই এ কথাতে শান্তি পাচ্ছিলো না। তাই উনি আমার কাছে জিজ্ঞাসা করে পদের নামটা জেনে নিলেন।

পত্রিকা অফিসের তেমন বড় কোন পদ না। তাই ব্যাপারটা নিয়ে মাথা ঘামানোর কোনো কারণ ছিল না। কিন্তু তবু সুজা ভাইয়ের কাছে ব্যাপারটা বেশ বড় কিছু বলেই হয়তো মনে হয়েছিলো। এ কারণে তিনি রেস্টুরেন্টের মালিক সহ অন্য সবাইকে বলে বেড়ালেন যে, আমি ঢাকার অমুক পত্রিকায় ছিলাম। এ পরিচয়ে হেড ওয়েটার আমাকে অত্যাচার করার জন্য আর একটা অস্ত্র পেয়ে গেল।

এর পর থেকে সে মাঝে মাঝে বলতো, এই কাজটাই পার না, তুমি নাকি অমুক ছিলা? মাঝে মাঝে হেড ওয়েটার বিরক্ত হলে তুমি থেকে তুইতে চলে যেতো। আমি অবশ্য তাকে সবসময় আপনি করেই বলতাম। রেস্টুরেন্টের আশপাশের তিন কিলোমিটারের মধ্যে বাসাতে খাবার ডেলিভারি করার একটা সিস্টেম আছে। কাস্টমাররা ফোন করে খাবারের অর্ডার আর তাদের বাসার ঠিকানা বললে তা তাদের বাসাতে পৌঁছিয়ে দেয়া হয়। উইকএন্ডে ব্যস্ততা বাড়লে সন্ধ্যার সময় একটা গাড়িতে করে ডেলিভারি দিয়ে পোষানো যেতো না।

এ কারণে আর একজন বাড়তি মানুষ আসতো ডেলিভারি দেয়ার জন্য। সে আমাকে একদিন কথা প্রসঙ্গে বললো, “চাচার (রেস্টুরেন্টের মালিক) ব্যবহার খুব খারাপ আপনি কিছু মনে করবেন না”। তার কথায় আমি চমকে উঠলাম। পরে সে বললো, আমি কাজ করার সময় সে মাঝে মাঝে লক্ষ্য করে। কাজে কোনো ভুল না হলেও রেস্টুরেন্টের মালিক আমার সাথে যে দুর্ব্যবহার করে এটাতে তার বেশ খারাপ লাগে।

হেড ওয়েটারের একজন বন্ধু এসে রেস্টুরেন্টে বসে ছিলো। বুঝলাম সে চাকরি খুজছে কিন্তু মালিক বিশেষ পাত্তা দিচ্ছে না। এসব কারনে হেড ওয়েটারের মন-মেজাজ খারাপ ছিল। রাতে সে আমাকে বলছিলো টেবিল সাজাতে। টেবিলগুলো সাজানোর নিয়মটা আমি শিখেছিলাম কয়েকদিন আগেই।

টেবিল ক্লথ একদম সোজা করে বিছিয়ে তারপর তার উপরে বিশেষ বিন্যাস অনুযায়ী প্লেট ও কয়েকটা হাফ প্লেট রাখতে হয়। প্লেটের ডানপাশে দুই ধরনের ছুরি, বাম পাশে দুই ধরনের চামচ ইত্যাদি একদম সোজা করে রেখে তারপর গ্লাস ও মেনু জায়গা মতো রাখতে হয়। নির্দিষ্ট জায়গার আধা ইঞ্চি এদিক ওদিক হলেই হেড ওয়েটারের পছন্দ হয় না। এর মধ্যে অন্য কেউ একটা টেবিল সাজিয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু সেটাতে একটা মেনু উল্টো করে রাখা ছিল।

আমাকে হেড ওয়েটার বলছিলো টেবিলটা ঠিক করে একটু টেনে বাম পাশে নিয়ে আসতে। এ সময় টেবিলের যে মেনুটা উল্টো করে রাখা ছিল আমি সেটা হাত দিয়ে ধরে জায়গা বদল করেছিলাম। সারাদিনের পরিশ্রমে বেশ ক্লান্ত ছিলাম। তাই উল্টো করে রাখা মেনুটা সোজা করার কথা মনে হয়নি। হেড ওয়েটার টেবিলের মেনুটা উল্টো বেশ বিশ্রী ভাষায় ধমকে উঠে।

পাশেই রেস্টুরেন্টের মালিক ও অন্য ওয়েটাররা ছিল। তারা কেউ এ বিষয়ে কিছু বলে না। আমিও হেড ওয়েটারকে কোনো পাত্তা দেই না এমন একটা ভাব করে চুপ করে থাকি। কিন্তু বিষয়টা বেশ খারাপ লাগে। রাতে বাসায় ফিরে এসব কথাবার্তা মাথা থেকে দূর হতে চায় না।

এসব স্মৃতি নিয়ে পরদিন পড়াশোনা করতেও বেশ কষ্ট হয়। মনসংযোগ হতে চায় না। তাই চাকরিটা ছেড়ে দিব কিনা আবার ভাবতে লাগলাম। এদিকে কড়া ওয়াশিং লিকুইড আর গরম পানি দিয়ে বারের গ্লাসগুলো ধুতে ধুতে আমার হাতের বারোটা বেজে গিয়েছিলো। বাসায় এসে একদিন পড়ার সময় আমার হাত দেখে আমি নিজেই ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।

পাঠ্য বইয়ের উপরে হাতটা রাখার পর তা বড়ই বেমানান লাগছিলো। ক্যামেরা বের করে হাতের কয়েকটা ছবিও তুলে রেখেছিলাম। পরদিন কাজে যাওয়ার পরে শেফ আমার হাতের অবস্থা দেখে ফেলেছিলো। পরে সে বলছিলো যে, “ভ্যাসলিন ব্যবহার করেন না কেন?” বাস্তবে বাসায় আসার পরে হাতের যত্ন নেয়ার কথা মনে থাকতো না। রেস্টুরেন্টের কয়েকজন মানুষের এ ধরনের অনাকাঙ্খিত কথাবার্তা আমার প্রচণ্ড মানসিক চাপ তৈরি করে।

তাদের মানসিক গঠনের সাথে আমার মানসিক গঠনের কিছুটা পার্থক্য ছিল। এ কারণেই হয়তো আমার বেশী অসুবিধা হতো। বিশেষ করে এ রেস্টুরেন্টের মালিক ও হেড ওয়েটার এ দুজন মিলে আমার জীবনটা অতিষ্ট করে ফেলেছিলো। মাঝে মাঝে বাসায় ফিরে পরদিন আবার সেখানে যেতে হবে এ কথা ভাবলে মনে হতো পাগল হয়ে যাব। হয়তো বেশীদিন এ রেস্টুরেন্টে কাজ করলে তা-ও অসম্ভব ছিল না।

এ সময় বাংলা ব্লগিংটা আমার মনের অবস্থা ঠিক করার জন্য অনেকটা উপকার করেছিলো। কারণ রেস্টুরেন্টের যুদ্ধ শেষ করে বাসায় ফিরে প্রতিদিনই বাংলা ব্লগগুলো নিয়ে বসতাম। বহু মানুষের হাজার হাজার লেখার মাঝে আমার নিজের ব্যক্তিগত বিষয়গুলো নিতান্তই তুচ্ছ হয়ে যেতো। এদিকে আমি যে অন্য একটা স্টক অডিটিংয়ের কোম্পানিতে চাকরি করি সেখানেও কাজের চাপ বাড়ছিলো। রেস্টুরেন্টে কাজ করার পরে সেখানে কাজ করতে গেলে মানুষের ব্যবহারে আকাশ পাতাল পার্থক্য চোখে পড়তো।

রেস্টুরেন্টের কাউকে একটা কথা জিজ্ঞাসা করলেই ঝারি শুনতে হতো অন্যদিকে সেই কোম্পানির লোকজনকে কোনো বিষয় হাজারবার জিজ্ঞাসা করলে তারা হাজারবার বুঝিয়ে দিতো। দুই-একজন বর্ণবাদী বৃটিশ ও ভারতীয় ছাড়া সবাই ছিল অতি ভদ্র ও হাসিখুশি। সে কোম্পানিতে এক দিনের গড় বেতন রেস্টুরেন্টের দ্বীগুন, কখনো কখনো চার গুণ বেশী পাওয়া যাচ্ছিলো। তবে ব্রিটিশ কোম্পানিটিতে আমার নিয়মিত কাজের কোনো নিশ্চয়তা ছিল না। সাধারণত তাদের ওখানে সপ্তাহে দুই দিন কাজ করার সুযোগ ছিল।

কিন্তু লোকবল সঙ্কটের কারণে তাদের ওখান থেকে মাঝে মাঝে চারদিন বা পাঁচদিন পর্যন্ত কাজে ডাকা শুরু করেছিলো। আর ইউনিভার্সিটির টিউশন ফিয়ের বাকি টাকাটাও মোটামুটি গুছিয়ে এনেছিলাম। কিন্তু কাজের চাপে পড়াশোনার সময় পাচ্ছিলাম না। সে মুহূর্তে আমার কাছে টাকার চেয়ে পাশ করাটাই জরুরী মনে হচ্ছিলো। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম আর রেস্টুরেন্ট নয়।

কয়েকজন বন্ধুকে বললাম, আর রেস্টুরেন্টে কাজ করবো না। তারা অনেকেই মানা করলো। কারণ যতো বেশী কাজ ততো বেশী আয়। কিন্তু রেস্টুরেন্টের উপর থেকে আমার মন একেবারেই উঠে গিয়েছিলো। পরদিন ঘুম থেকে উঠে রেস্টুরেন্টের মালিককে ফোন করে জানালাম, আপনার সাথে একটু দেখা করতে চাই।

তিনি পরদিন গাড়িতে করে যখন রওনা দিবেন এমন একটা সময়ে তার বাসায় ডাকলেন। বাসার সামনের রাস্তায় দাড়িয়েই কথা হলো। আগের দিন রাতে আমার পকেটে ভুলক্রমে রেস্টুরেন্টের একটা চিমটা রয়ে গিয়েছিল। সেটা ফেরত দিলাম আর আগামী সপ্তাহ থেকে কাজ করতে চাই না, এমন কথা জানালাম। এভাবেই আমার ছয় মাসের রেস্টুরেন্ট জীবনের অবসান হলো।

এই ছয় মাসে আমার অভিজ্ঞতাটা্ও কম হয়নি। চাকরি ছাড়ার পর আর কখনো সেই রেস্টুরেন্টে যাওয়া হয়নি। তবে কয়েকজন কর্মচারীর সাথে রাস্তাঘাটে দেখা হয়েছে। সহকারী শেফের সাথে তার কয়দিন পরে দেখা হয়েছিলো। তিনি জানালেন যে, তাদের খারাপ ব্যবহারের কারণে চাকরিটা তিনিও ছেড়ে দিয়েছেন।

কাজ ছাড়ার পর তাদের সাথে আর কখনো দেখা করতে যাইনি। কারণ দেখা করতে গেলেই হেড ওয়েটার ও অন্য কয়েকজন সম্ভবত আমার সাথে খারাপ ব্যবহারের কারণে দুঃখ প্রকাশ করবে। সাধারণত কোনো কারণে লোকজন চাকরি ছাড়ার পর এরা তা করে। আমি অবশ্য তাদের সে সুযোগ দেইনি। আগের পর্বগুলো: রেস্টুরেন্টের দিনগুলি-১ রেস্টুরেন্টের দিনগুলি-২ রেস্টুরেন্টের দিনগুলি-৩ রেস্টুরেন্টের দিনগুলি-৪ রেস্টুরেন্টের দিনগুলি-৫


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.