আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্লগার রাজিবের প্রতি ঘৃণা ও শ্রদ্ধা...।

........................ সামু এখন আমার মত অনেক ক্ষুদ্র জ্ঞানের মানুষের জন্য আস্তে আস্তে কেন যেন পর হয়ে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। কিছু বললে ও না জানি কখন ছাগুর উপাধি পেতে হয়। তবু ও ব্লগার " থাবা বাবা" ওরফে স্তপতি রাজিব হায়দার চৌধুরী কে নিয়ে কিছু লেখার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। রাজিব হায়দার আমাদের শাহাবাগ আন্দোলনের অন্যতম একজন আয়োজক বলে জেনেছি। গতকাল কে তার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের খবর দেখার পর তাকে প্রথম চিনেছি।

এর আগে তাকে চিনতাম না। তার হত্যার খবর রক্তে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল। আমার মত অনেক এরই রক্ত গরম হয়ে গিয়েছিল, যা ব্লগ এর অনেকের পোস্ট এবং মন্তব্য দেখে বুঝতে পেরেছি। কিন্তু সংশয় দেখি তখনি, যখন দেখলাম ব্লগার রাজিবের ইসলাম বিদ্বেষই কুরুচি পূর্ণ পোস্ট গুলো পরে অনেক ব্লগার দ্বিধান্বিত হয়ে পড়ছেন। আমি যখন রাজিবের মৃত্যুর পোস্ট দেখি ব্লগ এ, আমি বেথিত হয়েছিলাম।

আবার তার পোস্ট গুলো দেখে একজন মুসল্মান হিসেবে খুব হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। আমার মনে হচ্ছিল যে রাজিব কে মেরে ফেলা খুব ভাল কাজ হয়েছে। কিন্তু আমার কথাই আমাকে কষ্ট দিচ্ছিল। কারন আমার ইসলাম কখনই এক জন মানুষ কে হত্যার অনুমতি দেয় না। শাহাবাগ এর অনেক যোদ্ধা ব্লগার রাজিবের ইসলাম বিদ্বেষী পোস্ট এর ব্যাপারে কিছু বলতে গেলেই ছাগুর উপাধি পাচ্ছেন।

আমরা এটা কেন বুঝতে পারছি না যে আমাদের মাঝে বিভাজন সৃষ্টির জন্য খুঁজে খুঁজে একজন নাস্তিক ব্লগার কে হত্যা করা হয়েছে। সংখ্যা গরিষ্ঠ মুসলমান এর আমাদের এ দেশে আমরা যেন আন্দোলন নিয়ে দ্বিধান্বিত হয়ে পরি যে আমরা আমাদের ধর্মের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি না তো? আমাদের এই দ্বিধার সুযোগে কিছু সুযোগ সন্ধানি মানুষ, ব্লগের ভাষায় " ছাগু" বা অন্য যেই গোত্রেরই হোক, তারা রাজাকার, যুদ্ধাপরাধি দের বিচারের দাবি তে আন্দোলন কে বানচাল করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। অপর দিকে, শিবির জামাত গোষ্ঠীর বক্তব্য অনুযায়ী অন্তরকন্দল এ ব্লগার রাজিব খুন হয়েছেন। রাজিবকে কারা খুন করেছে আমি জানি না। একজন মুসলমান হিসেবে আমি তাকে ঘৃণা করি।

তার ইসলাম বিদ্বেষী পোস্ট গুলো আমার কাছে যথেষ্ট সচেতন বুদ্ধিমত্তার পরিচয় বলে মনে হয় নি। কিন্ত ধর্ম নিয়ে রাজিবের জীবন আদর্শ কে এই ঘৃণা করলে ও আমি তার দেশ এর আদর্শ কে সম্মান করি। তিনি লাখো বাঙালি কে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে এক কাতারে নিয়ে আসার পেছেনের এক অগ্র পথিক ছিলেন। আমরা শাহাবাগ এ একত্রিত হয়েছি দেশের কলঙ্ক মোচন করার জন্য। আমরা দল মত নির্বিশেষে মানবতা বিরোধী সকল রাজাকারের ফাঁসি চাই।

আমরা চাই জামাত শিবির কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হোক। আমরা সাধারন জনগন সারা জীবনী এক শ্রেণীর রাজনিতি বিদ দ্বারা শোষিত হয়ে আসছি। আমরা তাদের খেলার পুতুল ছিলাম। আমরা তাদের দ্বারা বারবার ব্যাবহার হয়েছি। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ৪২ বছর পর এই প্রথম আমরা এক হয়েছি আমাদের নিজেদের স্বার্থে, আমাদের দেশের স্বার্থে।

নতুন প্রজন্মের জন্য এক রাজাকার মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্তয় নিয়ে। আমরা বাঙ্গালিরা এক হতে শিখে গেছি। ব্লগার রাজিব নাস্তিক হলে ও তিনি আমাদের অন্যতম একজন বিপ্লবি। তাকে কারা হত্যা করেছে আমি জানি না। কিন্তু রাজিবের মৃত্যু কে উত্তপ্ত আন্দোলন কে পুঁজি করে কোন গোষ্ঠী অন্য সকল বেরথতা কে মুছে ফেলে নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধি করতে চাইছে কিনা, বা কোন গোষ্ঠী নিজেদের বাচাতে আন্দোলন বানচাল করতে চাইছে কিনা সেদিকে আমাদের ভাবতে হবে।

৪২ বছর পর আমরা এক হয়েছি। আমরা আর নোংরা রাজনিতির পুতুল হতে চাই না। আর একটি ব্যাপার হচ্ছে, ব্লগার রাজিব নাস্তিক ছিলেন। তার যেহেতু ধর্মে বিশ্বাস ছিল না। তাই তার মৃত্যু পরবর্তী সৎকার কে তার শেষ কৃত্য অনুষ্ঠান বললে মানুষ হিসেবে যেমন রাজিবের আদর্শ কে শ্রদ্ধা করা হয়, তেমনি অনেক মুসলমান আন্দোলন কারি দের ধর্মীয় অনুভুতির স্বার্থ ও রক্ষা হয়।

আমি আওয়ামি , বি এন পি, জামাত কাউ কে চিনি না। আমি বাঙালি মুসলিম। দেশপ্রেম আমার ইমানের অঙ্গ। আমার দেশ কে আমি ভালবাসি। আমার দেশের যারা মুক্তিযুদ্ধে বর্বর পাশবিকতার ঘৃণ্য দৃষ্টান্ত রেখে গেছে, সেই সকল রাজকারের ফাঁসি চাই।

আমাদের এই রাজাকার বিরোধী আন্দোলন কে বানলাল করতেই হোক, আর এ আন্দোলন থেকে যে স্বার্থ উদ্ধারেই রাজিব কে হত্যা করা হোক। তার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। এবং এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। পরিশেষে বলতে চাই, আমি কোন লেখক নই। আমি বাঙালি মুসলমান হিসেবে আমার মনের কিছু কথা বলার চেস্তা করেছি।

কারও পক্ষ নেই নি। তবু ও এমন স্পর্শ কাতর বিষয় নিয়ে লেখার সাহস করতে গিয়ে যদি কোথাও আমার কোন ভুল হয় টা অনিচ্ছাকৃত। ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, রাজাকারের ফাঁসি চাই.। .। ।

। ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই.। .। । ।

রাজিব হত্যাকারীর ফাঁসি চাই। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.