আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধাবমান জীবনের গল্প



ফকরুল চৌধুরী শিল্প কী? এ এক উত্তরহীন প্রশ্ন। এর কোনো সঠিক জবাব নেই। তবে মহৎ শিল্পের কতিপয় লক্ষণ আমরা বুঝতে পারি। মহৎ শিল্পের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে মানুষ। মানুষের ফিগর।

এই মানুষকে যতটা সময়, স্পেস ও মহাকালের পরিপ্রেক্ষিতে দৃষ্টিগ্রাহ্য করা যায়, তা ততটাই আমাদের কাছে শিল্প হয়ে ওঠে। এর জন্য দরকার পড়ে দৃষ্টিবৈভব। চারপাশের হাজারো মোটিভ, বস্তু, সম্ভাবনা থেকে সঠিক জিনিস শিল্পীকে নির্ণয় করতে হয়। অতঃপর নির্ণয়কৃত উপলক্ষকে যথার্থভাবে দৃষ্টির গোচরীভূত করা। এ কৌশল যে যতটা রপ্ত করতে পারেন, তিনিই তত বড় শিল্পী হয়ে ওঠেন।

এর জন্য প্রথমেই দরকার পড়ে অভিজ্ঞতা। অভিজ্ঞতা দিয়ে মানুষ তার দৃষ্টিগোচরতায় অস্তিত্ব সংলগ্ন বাস্তবতাকে নিজস্ব অনুভবে আনেন। অর্থাৎ এখন আমরা বুঝতে পারছি, শিল্পের সঙ্গে চৈতন্যের একটি যোগ রয়েছে। অতএব বলতে পারি, শিল্প একটি সাধনার বিষয়। তবে কিছু কিছু ঘটনা সাধনাকে হঠাৎ ত্বরান্বিত করে, শিল্পের জিয়নকাঠি সহজেই শিল্পীর হাতে তুলে দেয়।

এমনই একটি ঘটনা হলো আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ। এই যুদ্ধ আমাদের শিল্পের পরতে পরতে স্পর্শ করেছে, বাঙালি শিল্পীর অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করেছে। এই সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতাকে ধারণ করে যেসব শিল্পীর উত্থান ঘটেছে তাদের মধ্যে একজন হলেন মুক্তিযোদ্ধা শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ। শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ বড় ক্যানভাসে গতিশীল মানুষের ছবি আঁকেন। মোটা দাগে এই পরিচয়ে আমরা তাঁকে চিনি।

তাঁর পূর্বসূরি হিসেবে এরূপ সবেমাত্র একজন বাঙালি শিল্পীকে আমরা পাই। তিনি হলেন শেখ মোহাম্মদ সুলতান। নড়াইলের সাধারণ মানুষের কাছে যিনি লাল মিয়া নামে পরিচিত। এই লাল মিয়া বাঙালির হাজার বছরের চিত্র-ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় শিল্পে নতুন এক সংযোজন ঘটান। বাঙালির নিজস্ব আধুনিকতার সংজ্ঞা আমরা তাঁর শিল্পের মধ্যে পাই।

তিনি বাঙালির এমন এক কাম্য জগতের কথা ভাবেন, যা বাঙালির মধ্যে সুপ্ত রয়েছে। তিনি উঠন্ত বৃক্ষের মতো বাঙালির উত্থান চান। বাঙালি কৃষকের স্বরাজ চান। সুলতানের এই চাওয়াটা একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে বলশালী হয়। শিল্পী শাহাবুদ্দিনও একাত্তরের সংগ্রাম থেকে উত্থিত শিল্পী।

বড় ক্যানভাস আর পেশল ধাবমান মানুষের ফিগর নিয়ে তার কারবার। এবং বলা যায়, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে দৃশ্যরূপ দিতে তিনিই সবচেয়ে সফল হয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের সজীব উপস্থাপনা, চিরকালীনতায় একে প্রতিস্থাপন সার্থকভাবেই করতে পেরেছেন শিল্পী শাহাবুদ্দিন। শাহাবুদ্দিনের ছবিতে ইউরোপীয় চিত্র-ঐতিহ্যের অনুরণন, শিল্পের মিথস্ক্রিয়তা ও অনুপ্রেরণা লক্ষণীয়। কিন্তু মোটিভ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্বদেশীয়।

বলা যায় প্রতীচ্যের চিত্র-ঐতিহ্য বাঙালির জনজীবনের সঙ্গে মিলিয়ে-মিশিয়ে উতরে যেতে পেরেছেন তিনি। কবি রবীন্দ্রনাথ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে ‘দেবে এবং নেবে’ আদান-প্রদানের যে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছিলেন বলা যায় শিল্পী শাহাবুদ্দিন তার এক উদাহরণ হয়ে আছেন। বাকী অংশ পড়তে

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.