আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশী দেখা

আল বিদা

আমি দেশের বাইরে গিয়েছি মাত্র দুইবার। আর তার মধ্যে একবার দার্জিলিং। দুই জায়গাতে পরিচিত কোন প্রবাসীর সাথে বা বাংলাদেশী পর্যটকের সাথে তেমন দেখা না হলেও অল্প বিস্তর কিছু মজার অভিজ্ঞতা হয়েছে যা বলছি। প্রথমেই বলছি সিঙ্গাপুরের কথা। আমি প্রথম দেশের বাইরে যাই সিঙ্গাপুর।

গিয়েই এই দেশী চোখ দিয়ে খুজতে থাকি বাংলাদেশী ভাইদের। রাস্তার পাশে কন্সট্রাকশনের কাজ করছে কিছু লোক। তাকিয়ে থাকি যদি কোন অভাগা দেশী ভাইকে দেখি এই আশায়। প্রথমেই আশাহত হতে হয়। আর এমন কিছু লোক দেখলাম যারা কেন যেন চোখাচোখি হতে ভয় পায়।

প্রথম বাংলাদেশী দেখলাম সিঙ্গাপুরের মুস্তাফা সেন্টারে। সেরাঙ্গুনের এই এলাকা বাংলাদেশ, ভারত আর শ্রীলংকার মানুষে ভরা। এমনকি এই এলাকায় ১জন সিঙ্গাপুরিয়ানও পাওয়া যাবে না। আবার এই উপমহাদেশের গরীব, অভাগা কর্মীদেরই দেখা যায় যারা ভাগ্য বদলাতে গিয়েছে। তাদের চোখে মুখে তাই হতাশার এক কাহিনী ফুটে উঠে।

এখানেও খুজতে থাকি বাংলাদেশী। পেয়েও যাই। আমার কিছু জড়তা আছে। নিজে থেকে সেধে কারও সাথে কথা বলতে পারি না। তবুও নিজেই গেলাম তাদের কাছে যারা এক টেবিলে বসে আড্ডা মারছিল।

বললাম আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। ভাবলাম এই কথা বললে আমাকে জড়িয়ে ধরবে আর ডিনার করিয়ে দিবে। কিন্তু তারা পাত্তাই দিল না। শুনলাম তারা চট্টগ্রাম থেকে গিয়েছে। আমার দেশের বাড়ী কোথায় জেনে জানালো যে ঐ এলাকার আরও কিছু লোক আছে।

তারা আমাকে তাদের কাছে যেতে বলল। আমি বললাম যে আমি তাদের সাথে দেখা করতে উদগ্রীব না। হঠাত তাদের একজন জানতে চাইল আমি 'স্কিল' ভিসায় গিয়েছি কিনা। আমি আমার যাওয়ার কারন তাদের বললাম। তাদের কাছে পাত্তা না পেয়ে মন খারাপ করে ফিরে আসলাম।

ভাবলাম প্রবাসে তারা দেশী একজনকে পাত্তাই দিল না? সেদিন আর বেশী সময় থাকলাম না। পরেরদিন আবারও গেলাম। সেদিন ছিল শনিবার। গিয়ে দেখি বাংলাদেশী গিজগিজ করছে মুস্তাফা সেন্টারের এলাকা। এত্ত এত্ত বাংলাদেশী।

তারা জটলা বেধে আড্ডা মারছে। কে কি করল, কার কি অবস্থা, কে কিভাবে ঠক খেল। সর্বত্রই বাংলাদেশী। আমি বুঝলাম কেন একজন বাংলাদেশী দেখে তারা আর শিহরিত হয় না। দার্জিলিং গিয়ে বাংলাদেশী তো প্রচুর দেখলাম।

আর এত এত বাঙ্গালী যে আলাদা করে আর বাংলাদেশী দেখে চেনা যায় না। আর তেমন কোন পার্থক্যও বুঝা যায় না। যারা বাংগালী না তারাও বেশ ভাল বাংলা বলে। তাই ভারতে বাংলাদেশী দেখে আমি আর শিহরিত হই নাই।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.