আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দেশ-বিদেশের চা - প্রথম পর্ব

হেথায় কিছু লিখব বলে চায় যে আমার মন, নাই বা লেখার থাকল প্রয়োজন!

লিবিয়ানদের চা খাওয়ার নিয়মটাকে মোটামুটি অদ্ভুতই বলা যায়। অধিকাংশ লিবিয়ানই চা খায় দিনে ২০ থেকে ২৫ কাপ। বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যার সীমা ৩০ থেকে ৪০। ব্যাপারটা অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি। এটা সম্ভব হয় এ কারণে যে, লিবিয়ানদের চায়ের কাপগুলো হচ্ছে একেবারে যাকে বলা যায় মাইক্রো কাপ।

এসব কাপে যদি চা সম্পূর্ণ ভর্তি করা হয়, তা হলেও এক আউন্স হবে কি না সন্দেহ। তারপরেও তারা যদি কাপ পূর্ণ করে চা খেত, তা হলে না হয় একটা কথা ছিল। কিন্তু কাপ পূর্ণ করে খাওয়া তো দূরের কথা, এর তিন ভাগের এক ভাগও তারা পূর্ণ করে না। প্রাথমিক ভাবে তারা অবশ্য প্রায় পুরো কাপ পূর্ণ করেই চা ঢালে। এর পরে যত কাপ চা খেতে হবে বা পরিবেশন করতে হবে, তার চেয়ে দুটো বা তিনটে কাপ বেশি নেয়।

এরপর সবগুলো কাপে গণহারে চা ঢালাঢালি করতে শুরু করে। এর ফলে কিছুক্ষণের মাঝেই প্রতিটি কাপে চায়ের চেয়ে ফেনার পরিমাণ বেশি হয়ে যায়। সেই ফেনিল চা-ই হচ্ছে লিবিয়ানদের প্রিয় পানীয়। মাত্র আড়াই বছর বয়স থেকে আমি লিবিয়াতে পড়ে আছি। কাজেই বাংলাদেশ সম্পর্কে আমার ধারণা খুব একটা স্পষ্ট নয়।

তবে মানুষের কাছে যতটুকু শুনেছি তাতে আমার ধারণা হয়েছে বাংলাদেশে চা বলতে প্রধানত দুধ চাই বোঝানো হয়। মজার ব্যাপার হচ্ছে, লিবিয়াতে কিন্তু দুধ চা এবং লাল চা ছাড়াও আরেক প্রকার চা আছে। এর নাম হচ্ছে শাহী আখদার বা সবুজ চা এবং এই সবুজ চা-ই হচ্ছে লিবিয়ানদের কাছে তিন প্রকার চায়ের মধ্যে সবচেয়ে প্রিয়। লিবিয়ানদের চা বলতে প্রধানত সবুজ চা-কেই বুঝানো হয়। তবে সবুজ হোক আর লালই হোক, তাদের চায়ের সাথে যে জিনিষটি অবধারিত ভাবে থাকবেই, তা হল নানা তথা পুদিনা পাতা।

তাদের ধারণা, পুদিনা পাতা মিশ্রিত চা শরীরের জন্য বেশ উপকারী। বিদেশে থাকার কারণে বাংলা সাহিত্য সম্পর্কে আমার খুব একটা ভালো ধারণা না থাকলেও এটা খুব ভালো ভাবেই জানা আছে যে, হুমায়ূন আহমেদ এবং মুহম্মদ জাফর ইকবালের গল্প-উপন্যাস গুলোতে বিস্বাদ চা-কে ইঁদুর মারার বিষের সাথে তুলনা করা হয়ে থাকে। আমার এই লেখা পড়ার পর কোন অত্যুৎসাহী পাঠক যদি পুদিনা মিশ্রিত সবুজ অথবা ফেনা যুক্ত লাল চা খেতে আগ্রহ প্রকাশ করেন, তবে তাকে ইঁদুর মারার বিষ; এবং কেউ যদি ইঁদুর মারার বিষ চেখে দেখতে চান, তবে তাকে পুদিনা মিশ্রিত সবুজ অথবা ফেনা যুক্ত লাল চা খাওয়ার আমন্ত্রণ জানাতে আমি মোটেই দ্বিধা করব না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।