নৌকা আর ধানের শীষে ভোট দিয়ে সোনার বাংলার খোয়াব দেখা আর মান্দার গাছ লাগিয়ে জলপাইর আশা করা একই! বিস্ময়ের ব্যাপার হল দিনের পর দিন আমরা তাই করছি!!
পৌনে তিন বছর ধরে চলমান মহাসুখের চাকরিটা শেষতক ছেড়েই দিলাম। আজ শেষ কর্মদিবস স্মৃতিবহুল অফিসটায়। কোম্পানীর মফস্বল কার্যালয়। কার্ড পাঞ্চ করার ফ্যাকড়া নেই। হেলেদুলে ১০ সোয়া ১০টা নাগাদ ডেস্কে পৌছালেও যথেস্ট সিনসিয়ারিটি দেখানো হয়।
কাজ বলতেও আহামরি কিছুনা। কিছু ইমেইল চেক, ফরওয়ার্ড বা রিপ্লাই। রসদ হিসেবে সাথে এক্সেল এটাচমেন্ট; কিছু কুরিয়ার সেন্ড বা রিসিভ করা; কিছু এসএমএস চালাচালি।
বাদবাকী সময় একান্তই নিজের। ডেস্কের উপর ল্যাপটপ সাজাতে সাজাতে হাঁক দিই এসিস্ট্যান্টকে ''....ভাই, চা খাওয়ান।
'' হাতে ১টি বাংলা ও আরেকটি ইংরেজি 'সুশীল' পত্রিকা। ফাঁকে ফাঁকে দাপ্তরিক কাজ। কিছুক্ষন বাদে ফাইন্যান্সের বাড়তি টেবিলে পশ্চাৎদেশ ঠেকিয়ে ৪/৫ জনের মহাগুরুত্বপূর্ন গোলটেবিল বৈঠকের প্রভাতী অধিবেশন। বিশ্বমন্দা, টপম্যানেজমেন্টের ধারাবাহিক অদক্ষতা, বোনাসের আকাল, প্রমোশনে কোন নিয়মকানুন নেই ...থেকে নারীযুক্ত অফিস চাই আন্দোলন। এ করতে করতে দ্বি-প্রহর।
ভাতের সময়। ৩মিনিটের হাঁটার দুরত্বে বাসা। চল যাই খাই। ও খেয়ে দেয়ে দিবানিদ্রা।
শেষবেলায় আরেকবার নাএলেই নয়।
তাই আরেকটু ইন্টারনেট ব্রাউজিং। আবার হাঁক "......ভাই, চা খাওয়ান। '' তারপর টেবিলটেনিস। ওটাও অফিসের আয়োজনেই! রাত ৮টা (বা ৯টা) নাগাদ বাসায় গমন।
আর আছে মিটিং মিটিং খেলা।
পাক্ষিক, মাসিক, বিশেষ নানাবিধ মিটিং। জনাদশেক কলিগ ডিম্বাকৃতির টেবিলের চারধারে বসে গেজাঁনো। সাথে অবশ্যই পাওয়ার পয়েন্ট প্রজেক্টর, যা নাহলেও চলে। হাসি তামাশা, চা, বিস্কুট ও অবশ্যই এ সুবাধে লাঞ্চ/ডিনার।
আছে ট্রেনিং, সেমিনার, ওয়ার্কশপ।
এ তিনটির পার্থক্য এখনো বুঝিনি। তবে মনেহয় ওয়ার্কশপে কিছু কুতকুত খেলা হয়! যা অন্য ক্ষেত্রে হয়না। কথা পুরানা। বাহারি পাওয়ারপয়েন্ট স্লাইড প্রদর্শনী ও বুঝেও না বুঝা অনেক প্রশ্নের উত্তর। দু;বেলা চা বিস্কুট ও একবেলা ভাত।
ভালোই। বিষয়েরও অভাব নেই- ব্যবসায়িক যোগাযোগ, দল গঠন, চাপ ব্যবস্থাপনা, প্রাথমিক সংযোজন, তথ্য সচেতনতা, হেপাটাইটিস বি আরো কত কি! একদল কলিগতো এসব করেই খাচ্ছে।
এভাবেই কেটে যাচ্ছিল মহাসুখের দিনগুলো! তবুও শেষতক সইলনা। বেশী সুখের চাপ আবার সইতা রি না। ছেড়ে দিলাম শেষতক।
গুডবাই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।