আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নিভৃত পল্লীতে ব্যক্তিচালিত সেলাই কারখানা

এই ব্লগে জামাত-শিবির শুয়োরের বাচ্চারা ভুলেও নাক ডুবানোর চেষ্টা করবি না
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য কর্মসংস্থান একটি বড় সমস্যা। দেশটিতে সস্তা শ্রম আছে কিন্তু নেই কাজের সুযোগ। এমন কোন দিন নেই যেদিন কাজের আশায় গ্রাম থেকে মানুষ কাজের আশায় রাজধানীর দিকে ছুটে আসছে না। কিন্তু সেখানেও নেই কোন কাজ। দেশের একটি বড় শ্রমবাজার গার্মেন্টস ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হলেও এর উপরও রয়েছে নানা প্রতিবন্ধকতা৷ সঠিক কাজের পরিবেশের অভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অনেক প্রতিষ্ঠান।

আবার কোন প্রতিষ্ঠান বিশ্বমন্দার চাপ সামাল দিতে কমিয়ে দিচ্ছে উৎপাদনের পরিমাণ। তবে পরিস্থিতির এখন পরিবর্তন হচ্ছে। বাংলাদেশের অনেক নিভৃত পল্লীতে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু ব্যক্তিচালিত প্রতিষ্ঠান। যা একদিকে দারিদ্র্য সীমার নীচে বেঁচে থাকা মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে সহায়তা করছে, অন্যদিকে দেশের রপ্তানি বাণিজ্যে রাখছে মোটা দাগের প্রভাব। এই যেমন বাংলাদেশের নরসিংদি জেলায় ব্রিটিশ উদ্যোক্তা সামান্থা মোরশেদের সেলাই কারখানা।

আকার বা আয়তন বাংলাদেশের অন্যান্য বড় গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানের মতো না হলেও উৎপাদন এবং আয় কোনটাই কম নয়। তাঁর প্রতিষ্ঠান নরসিংদি জেলার একটি গ্রামের বাজারে অবস্থিত। যেখানে ৩০/ ৩৫ জন মহিলা কাপড় সেলাই করেন। সামান্থা মোরশেদ-এর তত্ত্বাবধানে এখন বাংলাদেশের অনেক গ্রামেই ঘরে বসে কাজ করছেন সাড়ে তিন হাজার মহিলা। যারা মাসে তিরিশ হাজারেরও বেশি গার্মেন্টস পণ্য উৎপাদান করছে।

আর তা কিনছে লন্ডনের জো জো মামানবেবে ও টপশপ-এর মতো কোম্পানি। সামান্থা বলছেন , ‘বাংলাদেশে শ্রম অনেক সস্তা। আর এখানে রয়েছে কাজ করার প্রচুর সম্ভাবনা। আমি আমার কাজ দিয়ে প্রমাণ করতে চাই যে গ্রামে থেকেও কর্মসংস্থান তৈরি করা যায়'। বাংলাদেশে বর্তমানে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

তবে দ্রুত সম্প্রসারিত গার্মেন্টস শিল্প অনেকসময়ই বাধার মুখে পড়ে যখন কাজের পরিবেশ নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। পণ্যের উৎপাদন মূল্য কমাতে গিয়ে গার্মেন্টস শ্রমিকরা কাজের সুস্থ পরিবেশ থেকে বঞ্চিত হন। আর সে-খবর প্রকাশিত হবার পর, বন্ধ হয়ে যায় অনেক গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ হারাতে থাকে তার বাজার। অবশ্য পরিস্থিতি আস্তে আস্তে পরিবর্তিত হচ্ছে।

আর তারই প্রমাণ সামান্থা মোরশেদের সেলাই কারখানা। বাংলাদেশে গার্মেন্টস কারখানার মালিক ডেভিড মেয়র বাংলাদেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলের গ্রামিণ এলাকায় গার্মেন্টস কর্মীদের জন্য একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তুলেছেন। তিন মাসের কোর্স সেখানে। সেলাই-এর পদ্ধতি, কিছু অংক, ইংরেজি ভাষার কিছুটা এবং জীবন চালানোর কিছু কৌশল শেখানো হয় মেয়েদের। এই প্রশিক্ষণ শেষ হলে মেয়র-এর কারখানাতেই ঐ মেয়েরা পায় শিক্ষানবিশির কাজ।

তারপর চাকরিও পেয়ে যায় তাদের বেশির ভাগ ঐ কারখানাতেই। গার্মেন্টস কারখানার মালিক মেয়র বলছেন, শ্রমিকরা যে পোশাক তৈরি করে তা যেমন বিক্রির জন্য গুরুত্বপূর্ণ তেমনি গুরুত্বপূর্ণ শ্রমিকের কাজ করার পরিবেশ। কারণ এখনজন ভালো শ্রমিক একটি ভালো পোশাক তৈরি করে। যার লাভ কারখানার হিসাবের বাক্সেই যোগ হয়। বাংলাদেশে করপোরেট প্রতিষ্ঠানের সামাজিক দায়বদ্ধতা নিয়ে উপদেষ্টার কাজ করেন রডনি রিড।

তিনি বলছেন, যদি একজন শ্রমিকের স্বাস্থ্য ভাল থাকে এবং তাঁকে কাজের জন্য ন্যয্য মজুরি দেয়া হয় তবে সে অবশ্যই ভালো পণ্য উৎপাদন করবে। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের বেকার সমস্যার সমাধানের জন্য বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা গার্মেন্টস শিল্প বিশেষ সহায়তা করতে পারে। আলাদা ভাবে বিশ্বে প্রতিষ্ঠাও করতে পারে। তিনি বাংলাদেশে গার্মেন্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, কম মজুরি এখন বাংলাদেশের গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানগুলোর টিকে থাকার জন্য সবচেয়ে বড় কারণ হলেও মনে রাখা উচিত আফ্রিকার অনেক দেশ আছে যেখানে শ্রমের মজুরি অনেক কম, যা বাংলাদেশের জন্য হুমকি হতে পারে। তথ্যসূত্রঃ
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।