আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হঠাৎ হিরো টেলিফোন

 

ইদ্রিস বাংলা সিনেমার জবরদস্ত ভক্ত। এ পর্যন্ত বাংলা সিনেমায় যতগুলো নায়িকা এসেছে, সবার নাম সে বলে ফেলতে পারে এক নিঃশ্বাসে। এর মধ্যে কতিপয় নায়িকার নাম তার মনে লেগে আছে সুপার গ্লুর মতো। চাইলেই মন থেকে সে তাদের আলাদা করতে পারে না। এ ছাড়া আলাদা করতে চাইবেই বা কেন।

নায়িকার নাম মনে লেগে থাকা মানেই বিস্তর শান্তি। ইদ্রিসের মনে লেগে থাকা নায়িকাদের মধ্যে অন্যতম একজন নায়িকা হচ্ছেন মুনমুন। কিন্তু যখন থেকে মুনমুন ছবি করা কমিয়ে দিয়েছেন, তখন থেকে ইদ্রিসও খানাদানা কমিয়ে দিয়েছে। মন খারাপ থাকলে খাবার পেটে যায়? কম করে খেতে খেতে সে এখন ক্যাটরিনার চেয়েও স্লিম হয়ে গেছে। তার একটা প্যান্টের কোমরও লাগছে না।

সব ঢিলে হয়ে গেছে। কোনোরকমে কোমরে ঝুলিয়ে রাখার জন্য বেল্টে অতিরিক্ত ছিদ্র করতে হয়েছে। আহারে! প্রিয় নায়িকা অভিনয় কমিয়ে দেওয়ার পর ইদ্রিসও ছবি দেখা কমিয়ে দিল। সিনেমা হল বাদ দিয়ে সে কলেজ ক্যাম্পাসে বেশি সময় দিতে লাগল। আর এ সময় তার পরিচয় হয় মুনের সঙ্গে।

পরিচয়ের কয়েকদিনের মাথায়ই প্রেমের সূত্রপাত। ইদ্রিস মুনের প্রেমে দ্রুত পটে যাওয়ার কারণ হচ্ছে, প্রিয় নায়িকা মুনমুনের নামের সঙ্গে তার নামের মিল আছে। তবে কিছুদিন যেতে না যেতেই তাদের মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দিতে লাগল। মনোমালিন্যের কারণ_ ইদ্রিস নাকি মুনকে 'মুনমুন' নামে ডেকে ফেলে। মুন ক্ষুব্ধ হয়ে জিজ্ঞাসা করে_ বলো এই মুনমুনটা কে? নিশ্চয়ই তোমার এঙ্ গার্লফ্রেন্ড? ইদ্রিস ঢোক গিলতে গিলতে বলে, আসলে আমি তোমাকে মুনমুন বলে ডাকিনি।

ডেকেছি মুন বলেই। মুনকে মুনমুন শোনা যাওয়ার কারণ, মনে হয় মুন বলার পর শব্দটা প্রতিধ্বনিত হয়েছে। ইদ্রিসের এই খোঁড়া যুক্তি মুন মেনে নেয়। তবে এরপর থেকে মুন আর বদ্ধ জায়গায় ডেটিং করতে রাজি হয় না। ডেটিং করে খোলা জায়গায়।

কারণ খোলা জায়গায় ডেটিং করলে 'মুন' প্রতিধ্বনিত হয়ে 'মুনমুন' হওয়ার আশঙ্কা নেই। এভাবে খোলা জায়গায় ডেটিং করতে করতে মুন আর ইদ্রিসের কপালও খুলে গেল। অর্থাৎ আশপাশের অনেকের প্রেম ভেঙে গেলেও তাদের প্রেম অক্ষত থাকল। শুধু তাই নয়, ইদ্রিসের কাছে মুন এখন এতটাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গেছে যে, তার পরিবারের অনেক বিষয়েই মুনকে সে মধ্যস্থতা করতে দেয়। আর মধ্যস্থতাটা মুন মূলত ফোনের মাধ্যমে করে।

কিছুদিন আগের ঘটনা। সম্পত্তি বণ্টনকে কেন্দ্র করে ইদ্রিসের আত্দীয়ের মধ্যে ব্যাপক কোন্দল শুরু হলো। আর এই কোন্দলের অবতারণা হয় একটা চেয়ারকে ঘিরে। চেয়ারটা বেশ দামি। নকশা করা।

সরস কাঠের তৈরি। শেষে অবস্থা এমন দাঁড়াল যে, চেয়ারটা নিজের ভাগে নেওয়ার জন্য তারা মোবাইলে কল দিতেও রাজি আছেন। বিষয়টা মুনের কানে যেতেই সে নিজের কানে মোবাইল চেপে ধরল। তাদেরকে ফোন করে চেয়ারের ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্তে পেঁৗছানোর লক্ষ্যে আলোচনায় বসার জন্য অনুরোধ করল। মুনের ফোনের পরপরই শুধু হয়ে গেল আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।

কেউ কেউ কাটকাট মন্তব্য করে বসল- মুন তো এই পরিবারের কেউ নয়। তাহলে সে এই পরিবারের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কেন নাক গলাল। একজন তো বলেই ফেলল- ওর নাক গলানোর বদঅভ্যাস আছে বলেই ওর নাক এমন বোঁচা। তাদেরকে মন্তব্য করলে যেহেতু সেটা মুনের কান পর্যন্ত পেঁৗছবে না তার গ্যারান্টি নেই। এদিকে ইদ্রিসের প্রেম নিয়ে টানাটানি পড়ে গেছে মুনের কানে এই টানাটনির খবর না গেলেও সে তো বড় বড় কথা বলে সবার কান ঝালাপালা করে দিল।

অনেককে বলতে লাগল, দেখলা, তিনি কত ইম্পোর্ট্যান্ট? প্রেমের মধ্যে পড়ে হিরো হয়ে গেল ব্যাটা টেলিফোন। ওদিকে কত ঝগড়াঝাঁটি, সে খবর রাখে কে। পরে এটা নিয়ে ফয়সালা করা যাবে। আগে প্রেম না ঝগড়াঝাটি? তাই ফয়সালা হোক বা না হোক হঠাৎ করে হিরো বনে গেল টেলিফোন। কোথায় হিরো হবে ইদ্রিস।

তা আর হলো না। ওই দিকে মুন পড়ে আছে মুনমুনকে নিয়ে, প্রতিধ্বনি কোথা থেকে আসে সে হিসাব আজও মিলে না। টেলিফোনের হিরো হয়ে যাওয়ায় মুনকে নিয়ে ভালোই টানাপড়েনে দিন যাচ্ছে ইদ্রিসের। সে খবর কে রাখে আর।

 

 



সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।