আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হঠাৎ এক পলক

কোথাও যদি হারিয়ে আমি যাইগো কোন দিন , যেও ভুলে , আমায় যেও ভুলে

সাথী গর্জে ওঠল, দাড়ান , আপনি কি চোখে দেখেন না? না মেয়ে দেখলেই ইতরামী করতে ইচ্ছা করে? দেখে তো মনে হচ্ছে উচ্চ ফ্যামিলির শিক্ষিত ছেলে। ইতরামী করতে লজ্জা করে না? তারপর তার আপাদমস্তক একবার চোখ বুলিয়ে নিয়ে বলল , গায়ের রংয়ের মতো মনটাও কালো কুৎসিত। হাসান শাহবাগের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকের ফুটপাথ থেকে নেমে পূর্ব দিকে তাকিয়ে রাস্তা পার হতে যাবে , ঠিক তখনই সাথীর কথা গুলো শুনে থমকে দাড়িয়ে পড়ল। তারপর ঘুরে দেখল, সালোয়ার কামিজ পরা একটা সুন্দরী যুবতী তার দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। গালাগালি শুনে যতটা অপমানিত হয়েছিল, তাকে দেখে তার চেয়ে অনেক বেশী অবাক হল।

প্রায় ছ'ফুট লম্বা----- দুধে আলতা গায়ের রং---- দোহারা শরীর----- চিকন কটি ও সুচাগ্র বক্ষ। সব মিলিয়ে তাকে বসরার গোলাপ বলে মনে হয়। হাসান দেখতে কালো বলে ছোট বেলা থেকে কারো কাছ থেকে অনাদার না পেলেও ঘনিষ্ঠতা পায়নি। তবে আজ পর্যন্ত কেউ তাকে কালো বললেও কুৎসিত বলেনি। তবু বোধ হবার পর থেকে সবার কাছ থেকে দূরে দূরে থেকেছে।

বিশেষ করেস্কুল কলেজে ও ভার্সিটিতে এমনকি বিদেশে যে কয়েক বছর লেখা পড়া করেছে, সে সময়ও কোন দিন কোন মেয়ের সন্ঙে মেশে নি। আজ এই মূহুর্তে সাথীর মুখে কুৎসিত কথাটা শুনে আঘাত পেলেও তাকে দেখে মুগ্ধ হয়ে কয়েক পলক তার মুখের দিকে তাকিয়ে রইল। তার পর অগ্নিকণ্যার পায়ের কাছে তার উড়নাটা পড়ে থাকতে দেখে ভাবল, তা হলে কী আমার কারনে ওড়নাটা পড়ে গেছে? আর সে কারণে ই মনে হয় গালাগালিটা হয়েছে। তারাতারি ওড়না তুলে, ধুলো ঝেড়ে সাথীর দিকে বাড়িয়ে বলল, এক্সট্রিমলি সরি, প্লীস এক্সকিউস মী। যা ঘটেছে অজান্তেই।

তার পর ওড়নাটা তার কাধের উপর রেখে রাস্তা পার হয়ে চলে গেল। সাথী হাসানের চলে যাওয়ার দিকে চেয়ে রইল। অদৃশ্য হয়ে যেতে সেও রাস্তা পার হয়ে বংঙবন্ধু মেডিকেল বিশ্বমিদ্যালয়ে ঢোকার সময় চিন্তা করল, ছেলেটাকে ওভাবে গালাগালি করাটা বোধ হয় ঠিক হয়নি। হয়তো আমার ওড়নার একদিক মাটিতে ঝুলে গিয়েছিল, আর ছেলেটা না দেখে পাড়া দিতে টান খেয়ে পড়ে গেছে। এরকম ঘটনা ক্লাসেও কয়েকবার ঘটেছে।

কথাটা মনে হতে নিজেকে অপরাধী মনে হলো। হঠাৎ মনে হলো ছেলেটা দেখতে খারাপ হলেও ভদ্র। গালাগালি খেয়েও ভদ্র ব্যবহার করল। প্রিয় কেউ একজন যাকে আগলে রেখেছি বন্ধুর বন্ধুত্বে, বোনের ভালবাসায় আর দিন রাত্রের পার্থ্যকে। যার জন্য এই লেখা লিখছি।



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।