আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম ছাত্রনেতা রাউফুন বসুনিয়ার মৃত্যুদিনে তাঁকে স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধায়

আমি সত্য জানতে চাই ‘তোমার মৃত্যুতে তিন ভাগ জল -অশ্রু হয়ে গেছে, রাজপথ হয়েছে আজ সাহসী মিছিল। .. . .. ১৯৮৫ সালের স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম ছাত্রনেতা রাউফুন বসুনিয়া। ১৯৮৫ সালে গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যমনি ছিলেন তিনি। স্থানীয় জন প্রশাসনকে অকার্যকর করার লক্ষ্যে স্বৈরাচারের নীল নঁকশা বাস্তবায়নের তীব্র বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল ছাত্র জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। সেই আন্দোলনের অগ্রভাগে থেকে বসুনিয়া রাজপথে স্বৈরশাসকের মসনদ কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন।

সামরিক স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী প্রথম বড় ধরনের আন্দোলন দানা বেঁধে ওঠে ১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি, যা মধ্য ফেব্রুয়ারির আন্দোলন হিসেবে পরিচিত। আর এদিন থেকেই শুরু হয় সামরিক স্বৈরাচার এরশাদ আমলের রক্ত ঝরার ইতিহাস। এদিন মজিদ খানের শিক্ষানীতি বাতিল এবং সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্রদের বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের গুলিতে নিহত হন কাঞ্চন, জাফর, জয়নাল, আইয়ুব, দিপালী ও ফারুক। স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের সকল ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হলে আন্দোলন দমনে স্বৈরাচারের লেলিয়ে দেয়া পেটোয়া বাহিনীর গুলিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের মেধাবী ছাত্র রাউফুন বসুনিয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত্যুবরন করেন। ১৯৮৫ সালের বসন্ত দিন ১৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় এরশাদ নিয়োজিত সন্ত্রাসীদের দ্বারা নিহত হন স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা, জাতীয় ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক রাউফুন বসুনিয়া।

বসুনিয়া ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের মিছিলে সেদিন নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন বসুনিয়া। মিছিলটি যখন মহসিন হল পার হয়ে মূল রাস্তায় উঠছে তখন এফ রহমান হল থেকে শুরু হয় গুলিবর্ষণ। মুহূর্তেই রাউফুন বসুনিয়ার রক্তে ভেসে যায় রাজপথ। ফাগুনের রাজপথ রাঙা হলো বসুনিয়ার রক্তে।

এরশাদ গঠিত "নতুন বাংলা ছাত্র সমাজ" এর গুন্ডাবাহিনী সেদিন কেড়ে নিয়েছিলো রাউফুন বসুনিয়ার প্রাণ। কিন্তু কজন চেনে এই বসুনিয়াকে? বসুনিয়া যে মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন, সেই মিছিলেই ছিলেন তৎকালীন আরেক ছাত্রনেতা মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান। খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন বসুনিয়ার মৃত্যু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বসুনিয়া তোড়ন আছে, আছে তাঁর আবক্ষ মূর্তি। এখনকার তরুণরা সেই তোড়নে ও মূর্তির গায়ে হেলান দিয়ে প্রেম করে ১৩ আর ১৪ ফেব্রুয়ারিসহ সারাবছর।

এই আপাত নিরিহ ভালোবাসা দিবস যে আমাদের এত বড় একটা তাৎপর্য্যপূর্ণ দিনকে প্রতিস্থাপন করে ফেলছে আর তথা কথিত পন্ডিতজনেরা বসে বসে গন মাধ্যমগুলোতে তাল দিচ্ছে ভাবতেই কেমন অবাক লাগছে! আজ এই ছাত্র নেতার মৃত্যুদিন। মৃত্যুদিনে তাঁকে স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধায়।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.