আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লাকী আক্তার এর উপর হামলার নেপথ্য কাহিনী...

বাঙ্গালী জাতির গৌরবময় ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় সংস্কৃতির জন্য অপমানজনক কোনকিছু এই ব্লগে লেখা যাবে না। ঘটনাটি ফেসবুক থেকে ব্লগার অমি রহমান পিয়ালের পোষ্ট থেকে প্রাপ্ত, পুরো লেখাটি হুবহু নিচে তুলে দিলামঃ যাক, পরিস্থিতি ঘোলাটে করার যে প্রয়াসটা নেওয়া হয়েছিলো তা ঠেকানো গেছে। এ ব্যাপারে অভিবাদন রইলো ছাত্র ইউনিউনের যোদ্ধাদের উপলব্ধিবোধ ও প্রাপ্তমনস্কতাকে। একাত্তরের মতোই তারা এবারও আত্মত্যাগের মাধ্যমেই রক্ষা করেছেন আন্দোলন ও ঐক্য। যদিও শুরুটা ঠিক এরকম ছিলো না।

লাকি সকালের দিকেই অসুস্থ্য হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন বারডেমে। তাকে সে সময় দেখতে যায় গণসংহতি নেতা জোনায়েদ সাকি। তারপর চত্বরে এসে সে মাইক নিয়ে বক্তৃতা দেয়। এটা নিয়ে আপত্তি তোলে ছাত্র ইউনিয়ন, কারণ রাজনৈতিক নেতৃত্বের বক্তৃতা দেওয়ার বিষয়ে একটা সমঝোতা ছিলো। তারা নিয়ে আসে এমএম আকাশকে।

দলীয় নেতৃবৃন্দের বক্তৃতাবাজির শোধবোধ তোলে তারা। তোফায়েল আহমেদ ও বাদল ভাই যখন মঞ্চে আসেন সে সময় লাকি বারডেম থেকে ফিরে এসেছে, সে এসব কিছুই জানে না, মানে সাকি-আকাশ বৃত্তান্ত। এবং আওয়ামী নেতৃবৃন্দকে কিছু বলতে দেওয়ার বিরুদ্ধে সে আন্দোলনের আগের সিদ্ধান্তটাই জানায় । এ সময় ছাত্রলীগের ছেলেরা প্রতিবাদ করে। লাকীর হাত থেকে মাইক কেড়ে নেওয়া হয়, নেয় নাজমুল।

এসময় পেছন থেকে চেচামেচি শুরু করে সুযোগ সন্ধানীরা। লাকিকে ঘিরে ধরে বারডেমে নিয়ে যাওয়া হয়। এবং গুজব ছড়িয়ে পড়ে লাকির উপর হামলা করেছে ছাত্রলীগের ছেলেরা, তার মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। অথচ নাজমুলের অবস্থান, লাকির অবস্থান এবং ছাত্রলীগের ছেলেদের অবস্থান মোটেও লাকির পেছন দিকে নয়। এই সময়টায় আমার কাছে ফোন আসে কামাল লোহানীর।

বলেন লাকির উপর ছাত্রলীগ হামলা করেছে, তার সামনেই করেছে। ক্ষুদ্ধ হয়েই একটা স্ট্যাটাস দিই আমি তখন। কারণ আন্দোলন ঠেকাতে মরিয়া জামায়াত একটা বড় অংকের ইনভেস্টমেন্ট ততক্ষণে করে ফেলেছে। আমার কানে চলে এসেছে ব্লগারস অন লাইন অ্যাকটিভিস্ট নামে একটা প্যারালাল সংগঠনের কমিটি গঠন এবং সাত দফা ঘোষণার। এটাও জানা হয়ে গেছে সেই সংগঠনের মাধ্যমেই শাহবাগে দলে দলে জায়গা নিতে শুরু করবে ছাত্র শিবির।

সংঘর্ষ সময়ের ব্যাপার মাত্র। ...রা আন্দোলনটা স্রেফ বিক্রি করে দিলো। ফেসবুকে ততক্ষণে লাকির উপর হামলার পোস্ট পড়ে গেছে। লাকিকে দুদিন আগেই পতিতা বানিয়ে দেওয়া পেইজে ছাত্রলীগের ন্যাক্কার আক্রমণের বৃত্তান্ত। এ মুহূর্তের চরম বিপনন, ছাত্রলীগ মানেই তো একটা কুৎসিত ব্যাপার তাই না? অতএব, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে আলাদা আন্দোলন করা যেতেই পারে।

সেখানে যোগ করা যেতে পারে ছাত্রলীগের আরো অতীত কীর্তি, বিশ্বজিতকে যোগ করা যেতে পারে, তাহলে সোনায় সোহাগাই হয়। এবং ইটিভিতে ততক্ষণে নিউজ প্রচার হয়ে গেছে, আমাকে উত্তেজিত রাজীব দাস ফোন করে জানায় ঘটনা। সবচেয়ে চমকে দেয় নিউ এইজ, তাদের অনলাইন ভার্সানে এটা সর্বকালের রেকর্ড ভেঙ্গে ব্রেকিং হয়। এই ফাদটা অবশ্য কদিন ধরেই পাতা হচ্ছিলো। যেখানে লাকি নিজের মুখে বলে তার পরিবারে হুমকি দিয়েছে শিবির, সেখানে কিছু সাংবাদিক (এদের বন্ধুবলয়টা আমার পরিচিত) অগ্নিকন্যা বিষয়ক প্রতিবেদনে টেকনিকালি হাইলাইট করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে লাকির উপর ছাত্রলীগের হামলার।

ছাত্র ইউনিয়নের কৃতিত্বটা এখানেই, সবচেয়ে ক্রুশিয়াল মুহূর্তে তারা সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্ঘাতের এই ফাদে পা না দেওয়ার। সেলিম ভাইকে ধন্যবাদ, ধন্যবাদ জলিকেও। তাদের ঠাণ্ডা মাথার হিসেবনিকেষের। লাকি এসে বিবৃতি দেয় পুরো ব্যাপারটা ভুল বোঝাবুঝি। তবে এও জুড়ে দেয়, তার মাথায় কারা মেরেছে সে দেখেনি।

এই ছুড়ে মারার চর্চাটা মুখচেনা একটা চক্রই গত কয়দিন ধরে করে যাচ্ছে চত্বরে, আন্দোলনের স্বার্থে তাদের কেউ কিছু বলেনি। এখন নাজমুলকে মারতে গিয়ে ভুলে লাকির গায়ে লাগলো নাকি নাজমুলকে ফাসাতেই ইচ্ছে করে লাকিকে মারা হলো সেটা হয়তো কখনও আমরা জানতে পারবো না। কিন্তু আন্দোলনের মূল ঐক্যটা এখনও অটুট আছে। চীন-পাকিস্তান ভাই ভাই শ্লোগানধারীদের উত্তরসূরীরা টাকাটা হালাল করতে পারলো না। আফসুস।

কিন্তু আতাত তত্ব ছড়িয়ে জামাতের সঙ্গে সত্যিকার আতাতকারীদের মরিয়া আরো কামড় অপেক্ষা করছে শাহবাগে। প্রিয় প্রজন্ম, নিজের উপর বিশ্বাস রাখো। এই যুদ্ধটা তোমরা হারবে না। তোমরা সৎ আছো। লোভীদের মুখোশ এবং ল্যাজ দুটোই বেরিয়ে পড়েছে।

তাদের নিশ্চিহ্ন হওয়াটা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। জয় বাংলা। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.