আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রবীন্দ্রনাথ ও আমরা

বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্‌উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ
রবীন্দ্রনাথ তাঁর সমস্ত শিল্পকর্ম দিয়ে একটি কথাই যেন বলতে চেয়েছেন-জীবন সুন্দর। রবীন্দ্রনাথের এই কথাটি কি সত্য? কেননা, চোখ মেললেই চারপাশে অজস্র অ-সুন্দর চোখে পড়ে; তারপর ইতিহাসের উষালগ্ন থেকেই যুদ্ধ বিগ্রহে লিপ্ত রয়েছে মানুষ । আজও সেই রক্তঘোর কাটল না।

আজও আফগান উপত্যকায় যুদ্ধবাজ দেশের বিমান হামলায় নিহত হয় শতাধিক বেসামরিক মানুষ। বিদেশ থেকে প্লেনভরতি করে আসে শ্রমিকের লাশ। পাটকলগুলি বন্ধ হয়ে গেলে খুলনার শ্রমিক পরিবারগুলো পতিত হয় নরকে। তা হলে জীবন কোথায় সুন্দর? অথচ, রবীন্দ্রনাথ নির্দ্বিধায় বলেছেন- জগতে আনন্দযজ্ঞে আমার নিমন্ত্রণ ধন্য হল ধন্য হল মানবজীবন। এই দুঃখদুর্দশায় পরিপূর্ন জগতে জন্ম নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ধন্য।

আশ্চর্য! তা হলে জীবন সুন্দর-এই কথাটির মানে সম্ভবত জীবনকে সুন্দর করা যায়। হ্যাঁ, তাইই হবে। এবং জীবনকে সুন্দর করে তুলতেই রবীন্দ্রনাথের জীবনভর সাধনা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। আমরা লক্ষ করেছি- তাঁর উপার্জনের প্রায় সবটুকুই তিনি ব্যয় করেছেন বাংলার হতদরিদ্র মানুষের শিক্ষাবিস্তারের জন্য; কেননা, জীবনকে সুন্দর করা যায়। তিনি জানতেন বাংলার জীবন মূলত কৃষিজীবন।

কাজেই, সেই আঠারোশো পচানব্বুই সালেই রবীন্দ্রনাথের উদ্যেগেই স্থাপিত হয়েছিল কৃষিব্যাংক । জীবনকে সুন্দর করা যায়- এই রবীন্দ্রনাথের মূলশিক্ষা। তার আগে বিশ্বাস করতে হবে - শত দুঃখকষ্টগ্লানি সত্ত্বেও জীবন সুন্দর। জীবন সুন্দর-এই অনিবার্য মন্ত্রটিতে অবিচল বিশ্বাস ব্যতিরেকে জীবনকে কখনোই সুন্দর করা যাবে না। আমাদের অনেক অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে।

আমাদের অনেক অনেক পরিবর্তন সাধিত করতে হবে। আমরা যেন মনে না করি যে - জীবন সুন্দর নয়। সেরকম মনে করলেই আমাদের শীর্ষে পৌঁছবার পথ আরও দুর্গম হয়ে উঠবে। রবীন্দ্রনাথকে অগ্রাহ্য করবার কোনও অধিকার আমাদের নেই! ২ রবীন্দ্রনাথের শিল্পকর্ম আসলে অতীব সূক্ষ্ম অনুভূতির বিষয়। অনেকক্ষেত্রেই হয়তো আপামর জনমানুষের বোধের অতীত।

তারপরও রবীন্দ্রজগৎ থেকে বিচ্যূত হয়ে কেবলমাত্র টেকনোলজি-নির্ভর সমাজ নির্মান করে কী লাভ? কেননা, মানুষের তাকাতে হয় পূর্নিমার আকাশের দিকে। প্রতি মুহূর্তের আশঙ্কা ভুলে তার গাইতে হয়- আজ জোছনারাতে সবাই গেছে বনে। ভবিষ্যতের যুদ্ধগুলি সংঘটিত হওয়ার মুহূতের্ও রবীন্দ্রনাথের প্রার্থনাবাক্য ধার করে আমাদের বলতেই হবে- বরিষ ধারামাঝে শান্তির বাণী।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.