আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইন্টারভিউ বোর্ডে ভাল করার কিছু উপায়।

আমার এই পথ চলাতেই আনন্দ...

ইন্টারভিউ বোর্ডের কথা শুনলেই মনে হয়, রাশভারী প্রশ্নকর্তারা জটিল জটিল সব প্রশ্ন রেডি করে বসে আছেন। একটু পা ফসকে গেলেই চাকরীটা হাতছাড়া হবার সম্ভাবনা শতকরা ৯৯ ভাগ। ব্যাপারটা কিন্তু তেমন জটিল নয় যেমন করে আমরা ভাবি। ইন্টারভিউ বোর্ডকে আপনি সহজেই মুগ্ধ করতে পারেন। আর প্রতিযোগিতার এই বাজারে চাকরীটা হাতের মুঠোয় নিয়ে আসাটাও খুব কঠিন কিছু নয় যদি আপনি ইন্টারভিউ বোর্ডে ভালো করতে পারেন।

আপনারই জন্যে রইলো দারুণ কিছু টিপসঃ • পরিপাটি হয়ে যানঃ একদম পরিপাটি হয়ে তবেই ইন্টারভিউ বোর্ডে যান। কেননা আগে ‘দর্শনধারী পরে গুণ বিচারী’ কথাটা নিশ্চয়ই শুনেছেন। তাই হেয়ারস্টাইল থেকে শুরু করে পায়ের জুতো পর্যন্ত সব কিছুতেই যেন পরিস্কার পরিচ্ছনতা আর রুচির ছাপ থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। আগের রাতেই সবকিছু রেডি করে রাখুন যাতে সকাল বেলা কোন কিছু খুঁজে পেতে দেরী না হয়ে যায়। অলংকার পরতে চাইলে খুব হাল্কা ধরনের অলংকার পরুন।

ছোট্ট টপ, গলায় হাল্কা চেইনের সাথে ছোট্ট লকেট থাকতে পারে। হাতে চুড়ি পরতে চাইলে একটি করে পরুন, যাতে শব্দ না হয় আর নূপুর পরার দরকার নেই। চুলগুলো বেঁধে রাখতে পারেন আর খোলা রাখতে চাইলে অন্তত সামনের চুলগুলো ক্লিপ দিয়ে আটকে রাখুন। আর ছেলেদের জন্যে ফর্মাল লুকই ভালো লাগবে। ক্লিন শেভড হয়ে যান।

ভালো দেখাবে। • পোষাকের ব্যাপারে সচেতন থাকুনঃ মেয়েরা হাল্কা রঙের পোষাক নির্বাচন করুন। খেয়াল রাখবেন পোষাক যাতে খুব টাইট বা অশালীন না হয়। পরতে পারেন শাড়ি বা সালোয়ার কামিজ। খেয়াল রাখবেন, আপনি স্বচ্ছন্দ্য বোধ করেন এমন পোষাকই পরুন।

ছেলেরা ফর্মাল শার্টে হাল্কা রঙের পাশাপাশি যদি টাই পরেন তবে খেয়াল রাখবেন সেটির রঙ যাতে বেশী উজ্জ্বল না হয়। কালো বা নেভি ব্লু রঙের টাই ইন্টারভিউ বোর্ডের জন্যে পারফেক্ট। সুগন্ধি ব্যবহার করতে চাইলে হাল্কা ধাঁচের ব্যবহার করুন। পারফিউমের বদলে বেছে নিতে পারেন বডি স্প্রে!ঘামের গন্ধ ঠেকাতে ডিওডোরেন্ট তো অবশ্যই! • শব্দ করে হাঁটবেন নাঃ শব্দ করে বা মেঝেতে পা ঘষে ঘষে হাঁটবেন না। হাঁটার সময় শব্দ হয় এমন ধরনের জুতো পরিহার করুন।

• বসার আগে অনুমতি নিনঃ রুমে ঢুকে চেয়ারে বসার আগে প্রশ্নকর্তাদের অনুমতি নিন। বসার সময় আস্তে বসুন। শব্দ করে চেয়ার টেনে বসবেন না। সবকিছুতে যেন একটা বিনয়ী ভাব প্রকাশ পায় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। • ভাষার দিকে লক্ষ্য রাখুনঃ প্রশ্নকর্তা বাংলায় না ইংরেজীতে প্রশ্ন করছেন সেটা খেয়াল রাখুন।

যে ভাষায় প্রশ্ন করা হচ্ছে সে ভাষাতেই উত্তর দিন। ইংরেজীতে যদি দূর্বল হয়ে থাকেন তবে বিনয়ের সাথে বলুন যে, আপনাকে যদি বাংলায় উত্তর দেবার অনুমতি দেয়া হয়, তবে আপনি আরো গুছিয়ে বলতে পারবেন। বিদেশী কেউ থাকলে যতটা সম্ভব তার প্রশ্নের উত্তর ইংরেজিতেই দিতে চেষ্টা করুন। • ভালোভাবে শুনুনঃ অনেকে প্রশ্ন ভালোভাবে না শুনে, না বুঝেই হড়বড় করে উত্তর দেয়া শুরু করে। এটা করবেন না।

আগে ভালোভাবে শুনুন। বুঝতে চেষ্টা করুন প্রশ্নকর্তা আসলে কি জানতে চেয়েছেন। তারপর জবাব দিন। প্রশ্নকর্তার প্রশ্নের মাঝখানে কথা বলবেন না। যা বলবেন ভেবে বলুন।

কয়েকটি প্রশ্ন থাকলে এক এক করে উত্তর দিন। কোন প্রশ্ন বুঝতে না পারলে, ‘সরি’ বলুন। আর কোন প্রশ্নে কনফিউশন থাকলে বলতে পারেন, ‘আমি যদি আপনার প্রশ্নটি সম্পূর্নভাবে বুঝতে পেরে থাকি, তাহলে আমার উত্তর হল...’ • অশোভন মুখভঙ্গী করবেন নাঃ কোন প্রশ্নের উত্তর না জানলে অযথা মাথা চুলকানো, নখ কামড়ানো, নাক চুলকানো, তোতলানো বা মুখে হাত ঘষাঘষি করা থেকে বিরত থাকুন। • নিজেকে প্রকাশ করুনঃ নিজেকে প্রকাশ করুন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রশ্নকর্তারা প্রথমেই আপনার নিজের সম্পর্কে বলতে বলেন।

এর মাধ্যমে তারা আপনার বাচনভঙ্গী, আত্মবিশ্বাস ও ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে একটা প্রাথমিক ধারণা পেতে চেষ্টা করেন। এটাতে কিন্তু আপনার চাকরি পাবার সম্ভাবনা অনেকখানি নির্ভর করে। • অতিরিক্ত কথা বলবেন না্ঃ অতিরিক্ত কথা বলবেন না। যতটা আপনার কাছে জানতে চাওয়া হয় ঠিক ততটাই বলুন। বেশি কথা বলা মানেই কিন্তু নিজেকে বেশি যোগ্য প্রমাণ করে ফেলা নয়।

• নির্ভুল সিভি ও ছবি সাথে রাখুনঃ আগে হয়তো পাঠিয়েছেন। কিন্তু নির্ভুল একটি সিভি ও ১ কপি রঙ্গিন ছবি সাথে রাখুন। দেখবেন এসব ডকুমেন্ট রাখার ফাইলটি যাতে স্বচ্ছ ও নতুন হয়। • প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে কিছুটা জেনে রাখুন আগেইঃ ইন্টারভিউ দিতে যাবার আগেই প্রতিষ্ঠানটি ও আপনার কাংক্ষিত পদ সম্পর্কে কিছুটা হলেও জেনে রাখুন। ওই প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট ও বিজ্ঞাপনটি ভালোভাবে পড়ুন।

• জটিল প্রশ্নের উত্তরে সতর্ক থাকুনঃ জটিল প্রশ্নের উত্তরে সতর্ক থাকুন। যেমন প্রশ্ন হতে পারে ১) কেন আপনি আগের চাকরী ছেড়ে এলেন? ভুলেও ঐ প্রতিষ্ঠানের সমস্যার কথা তুলে না ধরে বলতে পারেন আরো ভালো সুযোগ সুবিধা পাবার জন্যে। এবং এই প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে আপনি অনেক শুনেছেন এবং এখানে তাই কাজ করতে চান। ২) কি ভালো সুযোগ পেলে অন্য কোথাও চলে যাবেন? সরাসরি ‘হ্যাঁ’ না বলে বলুন, এ প্রতিষ্ঠানে চাকরী পাওয়াটা অনেক সৌভাগ্যের ব্যাপার আপনার জন্যে। আপনি চেষ্টা করবেন যতদিন সম্ভব এখানে থাকার এবং একটা বড় সময় জুড়ে থাকার।

এবং আপনার ওপর অর্পিত দায়িত্বকে একটা নির্দিষ্ট পর্যায়ে পৌঁছেই আপনি অন্য কোথাও যাবার কথা ভাববেন। তার আগে নয়। • বেতনের ব্যাপারে যুক্তি দেখানঃ বেতনের ব্যাপারে বর্তমান বেতনের চেয়ে বেশী চাইতেই পারেন। এক্ষেত্রে বলুন যে আপনি আপনার কাজের ব্যাপারে সৎ, আত্মবিশ্বাসী আর আপনি এটা পাবার যোগ্যতা রাখেন। ইন্টারভিউর সবচেয়ে বড় কথা হল আত্মবিশ্বাস রাখুন।

আপনার আত্মবিশ্বাস আর একটু সতর্ক পদক্ষেপই আপনাকে নিয়ে যাবে আপনার ক্যারিয়ারের সিঁড়ির সর্বোচ্চ ধাপে। মূল লেখাঃ http://www.priyo.com/2013/08/31/29247.html


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।