আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আবারো লুঙ্গি কথন



সামহোয়্যার ইন ব্লগে লুঙ্গি নিয়ে বেশ কিছু লেখা পোস্ট করা হয়েছে। এগুলো পড়ে লুঙ্গি সংক্রান্ত আমার কিছু অভিজ্ঞতা সবার সঙ্গে শেয়ার করতে ইচ্ছে করছে। ১. যখন আমি অনেক ছোট, তখন হাফপ্যান্ট পড়তেই ভালো লাগতো। কিন্তু একটা সময় পর হাটু বের হয়ে থাকা বা অন্য যে কোন কারনেই হোক, আম্মা এটা পছন্দ করত না (উল্লেখ্য, আমি গ্রামের ছেলে)। একদিন আম্মার উপর রাগ করে আমার সবকটি হাফপ্যান্ট ছিড়ে ফেল্লাম এবং লুঙ্গি পড়া শুরু করলাম।

রাতে ঘুমাতে গেলাম লুঙ্গি পড়ে। মাঝরাতে হঠাৎ মনে হল, আমার গায়ে কাঁথা দুইটা। ফলে একটা ফেলে দিলাম। সমস্যা হলো সকালে। সবাই বিছানা ছাড়লেও আমি ছাড়তে পারছি না।

কাঁথা গায়ে শুয়ে আছি। শেষ পযর্ন্ত আম্মা এসে জিজ্ঞাসা করলেন, এখনো কেন ঘুম থেকে উঠছি না। বললাম লুঙ্গি খুজে পাচ্ছি না। আম্মা সেই লুঙ্গি খুঁজে দিলেন বিছানার নিছ থেকে। আসল ঘটনা হলো, রাতে দুইটি কাঁথা মনে করে যেটি ফেলে দিয়েছিলাম সেটি ছিলো আমার লুঙ্গি।

২. সারাদিন লুঙ্গি ছাড়া কাটিয়ে দিতে পারলেও ঘুমানোর সময় আমার লুঙ্গি চাই-ই চাই। তাই কোথাও বেড়াতে গেলে আমি লুঙ্গি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। একদিন এক খালার বাসায় বেড়াতে গেলাম কিন্তু লুঙ্গি নেইনি। আসলে থাকার কোন ইচ্ছাই ছিলো না। কিন্তু খালা আসতেই দিলেন না।

রাতে ঘুমানোর আগে খালা আমাকে লুঙ্গি দিতে ভুলে গেলেন, যদিও তিনি আমার লুঙ্গি প্রীতির কথা জানেন। আলাদা এক রুমে আমার থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আমি কোনো উপায় না দেখে শেষ পর্যন্ত কাঁথাটিকে লুঙ্গির মতো পড়ে নিলাম। দুধের স্বাধ ঘোলে মেটানোর চেষ্টা আর কি! তবে কাথা দিয়ে কিন্তু ঘোলের স্বাধও মিঠেনি। (তবে, অন্তত প্যান্টের চেয়ে ভালো মনে হয়েছে।

) ৩. ছোটবেলায় পুকুরে গোসল করেছি দিনে দুই-তিনবার। আসলে পুকুরে গোসল করাটা ছিল আমাদের একটা খেলা (গ্রামের ছেলেদের একটা বিনোদনের মাধ্যম)। নানার বাড়ীতে গেলে নদীতে গোসল করেছি। লুঙ্গি না হলে কি আর গোসলের পূর্ণতা পায়! লুঙ্গির এক প্রান্ত কোমরে বাধা থাকত, আর অন্য প্রান্ত দিয়ে বিশেষ কৌশলে বাতাস ঢুকিয়ে সারাদিন ভেষে থাকা যায়। অবশ্য তা নির্ভর করে আপনার শরীর কতক্ষণ পানিতে ভিজে থাকতে পারে তার উপর।

৪. এই পোস্টে যতবার লুঙ্গি লিখতে চেয়েছি, ততবারই ভুলে লুঙ্ড়ি লেখে ফেলেছি। পরে আবার ঠিক করে নিতে হয়েছে। আরো অনেক কাহিনী আছে এখানে দেবার মতো। কিন্তু লেখা বড় হয়ে যাওয়ার ভয়ে আর লিখছি না। তবে অন্যদের কাছে তাদের অভিজ্ঞতা জানতে চাই, তা নেগেটিভ হোক আর পজেটিভ হোক।

সবশেষেঃ দুঃখের বিষয় ভাই, আমরা এখন পর্যন্ত আধুনিক হতে পারলাম না শুধু লুঙ্গি পড়ার কারনে। কিন্তু যে ছেলেটি প্যান্ট বানাতে চাইলে আমাকে নিয়ে টেইলার্সে যেত, সে আজ আধুনিক। আর মেয়েরা (সবাই না) আমাদের ক্ষেত বলে লুঙ্গি পড়ার কারনে। আপা গো, লুঙ্গিতে তো একটা সেলাই থাকে, শাড়ীতে তো তাও থাকে না। শাড়ীও তো একটা পুরানা পোষাক।

কিন্তু শাড়ী পড়লে কোন মেয়ে ক্ষেত হয় না! বরং যারা এম্নিতে শাড়ী পড়ে না তারা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে শাড়ী পড়ে যায়।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।