আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মৌসুমি

আমি, আমার ছেলে, আমার স্বামি এই আমার রাজ্য, আমার রাজ্যে আমি রানি

আমার খুব কাছ থেকে দেখা একটি মেয়ে। হাসি খশি চন্চল, উচছল মেয়ে। এক গুচছ কোকড়া চুল ছেড়ে যখন আমার সামনে এসে হাসে, মনে হয় একটি সড়ল প্রতিমা আমার সামনে। মাঝে মাঝে তাকে বলতে হয় আস্তে হাস, বাধ ভাঙা তার হাসির শব্দ। বুকভরা তার ভাল বাসা।

এই ভাল বাসার টানেই সদ্য H.S.C পাশ করা উচছল মেয়েটা ভালবাসার হাত ধরে রাজধানির বুকছেড়ে চলে গিয়েছিল পল্লি গ্রামে। সবার আমতেই বিয়ে করেছিল সে। তার মা মনখারাপ করেই সপেছিল তাকে জোয়ার ছুটে আসে রাজধানির দিকে। উন্নত জিবনের আসায়, আরাম আয়েসের আসায়, রঙিন জিবনের আশায় সবাই যখন শহর মুখি, মৌসুমি তখন ভালবাসার টানে ছুটে গিয়েছিল গ্রামে। বাবা মা ভাই বোন সব পরে রইলো শহরে।

জিবনের ১২টি বছর দুবাই শহরে কাটিয়ে বাবার চাকরির কারনে তারে ঢাকায় ফিরে আসে। বিয়ের পর ও হয়ে যায় পল্লি বধু। ও ভালবাসতে শুরু করে গ্রামকে, স্বামির সংসারকে। একে একে কাটতে লাগল বছর ১বছর, ২বছর, ৩বছর,৪বছর. ও কেবল মৌসুমিই রয়ে গেল। ও সংসার কে সব দিয়ে যাচিছল ভালবাসা শ্রম দায়িত্ব কত`ব্য সব, কেবল একটি সন্তান ছাড়া।

কত আকুতি কত চিকিৎসা কত ঝারফুক চলল তার হিসাব নেই। একসময় সবাই ধরেই নিল মৌসুমি মা হওয়ার জগ্য না। মৌসুমি জানলো ওর স্বামি আসলে বাবা হওয়ার জগ্যনা। সবাই জানলো। তবুও আমাদের সমাজ কিন্তু ওকে ক্ষমা করলোনা।

মা হতে না পারার সব দায় দায়িত্ব ওকেই নিতে হল। ধিরে ধিরে ফিকে হতে লাগল ওর সব অবদান। তোমার যেহেতু ছেলেপুলে নেই সেহেতু তোমার দায়িত্ব হল আন্যদের ছেলেপুলের দেখাশুনা করা। ও তাই করল। একসময় ওর স্বামির কাছেও ওর চিকিৎসার খরচটা বাজেখরচ বলে গন্য হতে লাগল।

চলে গেল ১৫টি বছর। আজ যখন পেছন ফিরে তাকায়, নিযের প্রাপ্তির হিসাব করতে যায় আবগ্গ্যা বন্চনা তাচিছল্য ছাড়া কিছুও নেই তার প্রাপ্তি। শুধু একটি সন্তান দিতে না পারার আপরাধে সমাজ তাকে কোন স্হান দিতে আগ্রহি না। তার স্বামি রাজি তার সাথে কোন ভবিষ্যৎ পরিক্লনা করতে। ১৫ বছর পর তারা ঢাকায় ফিরে এল।

মেয়েটা ভাগ্যগুনে একটা চাকুরেও পেল। ১৫ বছর পর আয়নায় আবার নিযেকে দেখার চেষ্টা করলো। আজ যখন সে নিযের জন্য হাসে নিযের জন্য বাচতে চায়, তার স্বামি কিন্তু তা সহজ ভাবে গ্রহন করতে পারে না। যে স্বামিকে ভালবেসে মেয়েটা জিবন বদলে ফেলেছিল, সেই স্বামি আজ তাকে হাসতে দেখলে সনদেহ করে। ণোংরা ভাষায় তার নতুন পথ চলাকে বন`না করে।

হায়রে জিবন। রস্তায় কত শিশু গড়াগড়ি করছে। কেন্টনমেন্ট দিয়ে যাওয়ার সময় দেখে এক মহিলা ৩ টা প্রায় সমবয়সি বাচচা নিয়ে ভিক্ষা করছে। মৌসুমি তাকিয়ে থাকে বলে এ রকম একটি শিশু যদি আমার থাকতো আমার জিবনটা আন্য রকম হতো। আমি নিরবে শুনি...... নিরবে কাদি....



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।