আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সেনাবাহিনীকে দুর্বল করে ফেলা আমাদের জাতিরাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকারক

I love politics. I want death of those who killed our Army officers.

পিলখানায় যখন বিদ্রোহের নামে হত্যাযজ্ঞ চলছিল ২৫ এবং ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০০৯ তারিখে তখন গোটা দেশবাসী ভেতরে কি হচিছল সে ব্যপারে অন্ধকারে ছিল। আর এমনই একটি অবস্থায় দেশের মিডিয়াগুলো যেসব প্রচার চালিয়ে যাচ্ছিল তা কার্যত দেশের সেনাবাহিনআaকে কলঙ্কিত করছিল। সবার কাছে এটাই প্রতিভাত হচিছল যে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী দুর্নীতিগ্রস্থ। আর এটিই তথাকথিত বিদ্রোহের মূল কারণ। শুধু তা-ই নয় কি ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে তা যখন প্রচার হয়ে পড়ল তখনও অনেককে ব্যক্তিগতভাবে নানা বিরূপ মন্তব্য করতে শুনেছি।

একজনতো আলোচনা প্রসঙ্গে বলছিলেন আমাদের সেনাবাহিনীর দরকার কি? সৈন্যরাতো শুধু খায় আর ঘুমায়, আর কোন কাজ করেনা। মালদ্বীপেরতো সেনাবাহীনি নাই, আমাদের না থাকলে ক্ষতি কি? যে এই কথা বলেছে সে অতিশয় সাধারণ মানুষ, তার চিন্তার গভীরতা একদমই নেই। কিন্তু সাধারণ মানুষের মধ্যে এমনসব আত্মঘাতী চিন্তা ঢুকবার একটি কারণ হতে পারে দেশের কিছু সুশীল (?) বুদ্ধিজীবীরা সেনাবাহিনী সম্পর্কে কিছু নেতিবাচক চিন্তা করছেন এবং প্রচার করছেন। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যানের কথা। তিনি বলছিলেন, �যারা মারা গেল, প্রচার করা হচেছ তারা মেধাবী।

অথচ আমার মনে প্রশ্ন জাগে সত্যিই কি তারা মেধাবী? একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের সহজ বিষয়টি বোঝা উচিত যে সেনাবাহিনী দুর্বল হলে আমাদের পার্শ্ববর্তী যে কোন দেশই যে কোনভাবে এর বেনিফিট নেবার চেষ্টা করতে পারে। এ প্রসঙ্গে পাঠকদের জ্ঞাতার্থে বেশ একটু পেছনে ফিরে যেতে চাই। বাংলাদেশের যখন অভ্যুদয় ঘটছিল সে প্রেক্ষাপটে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত চেয়েছিল বাংলাদেশের কোন নিজস্ব সেনাবাহিনী না থাকুক। অলি আহাদ তার �জাতীয় রাজনীতি ১৯৪৫ থেকে ৭৫� বইতে বলেন, �১৯৭১ সালের অক্টোবর মাসে ভারত সরকারের সাথে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার প্রশাসনিক, সামরিক, বাণিজ্যিক, পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা বিষয়ে একটি সাতদফা গোপন সমঝোতা চুক্তি সম্পাদন করেন। চুক্তিগুলো নিম্নরূপ: ১. প্রশাসনিক বিষয়ক: যারা সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে শুধু তারাই প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে নিয়োজিত থাকতে পারবে।

বাকীদের জন্য জায়গা পূরণ করবে ভারতীয় প্রশানিক কর্মকর্তাবৃন্দ। ২. সামরিক বিষয়ক: বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভারতীয় সৈন্য বাংলাদেশে অবস্থান করবে। ১৯৭২ সালের নভেম্বর মাস থেকে আরম্ভ করে প্রতিবছর এ সম্পর্কে পুনরীক্ষণের জন্য দু’দেশের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ৩. বাংলাদেশের নিজস্ব সেনাবাহিনী বিষয়ক: বাংলাদেশের নিজস্ব কোন সেনাবাহিনী থাকবেনা। অভ্যন্তরীণ আইন-শৃংখলা রক্ষার জন্য মুক্তিবাহিনীকে কেন্দ্র করে একটি প্যারামিলিশিয়া বাহিনী গঠন করা হবে।

৪. ভারত-পাকিস্তান সর্বাত্মক যুদ্ধ বিষয়ক: সম্ভাব্য ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে অধিনায়কত্ব দেবেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান। এবং যুদ্ধকালীন সময়ে মুক্তি বাহিনী ভারতীয় বাহিনীর অধিনায়কত্বে থাকবে। ৫. বণিজ্য বিষয়ক: খোলা বাজার ভিত্তিতে চলবে দু’দেশের বাণিজ্য। তবে বাণিজ্যের পরিমাণের হিসাব নিকাশ হবে বছর ওয়ারী এবং যার যা প্রাপ্য সেটা র্স্টার্লিং এ পরিশোধ করা হবে। ৬. পররাষ্ট্র বিষয়ক: বিভিন্ন রাষ্ট্রের সংগে বাংলাদেশের সম্পর্কের প্রশ্নে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংগে যেগাগাযোগ রক্ষা করে চলবে এবং যতদুর পারে ভারত বাংলাদেশকে এ ব্যাপারে সহায়তা দেবে।

৭. প্রতিরক্ষা বিষয়ক: বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বিষয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করবে ভারত। � (অলি আহাদ রচিত �জাতীয় রাজনীতি ১৯৪৫ থেকে ৭৫�, বাংলাদেশ কোঅপারেটিভ বুক সোসাইটি লি: প্রকাশিত, চতুর্থ সংস্করণ ফেব্রুয়ারী ২০০৪, পৃষ্ঠা-৪৩৩,৪৩৪) এই গোপন চুক্তির বিষয়টির সত্যতার স্বীকারোক্তি পাওয়া যায় জাতীয় সংসদের সাবেক স্পীকার মরহুম হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর কাছ থেকে। অলি আহাদ লিখেন: � বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুজিবনগর সরকারের সাথে ভারত যে ৭ দফা গোপন চুক্তি করে সে ব্যাপারে জনাব মাসুদুল হক রচিত �বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে র এবং সি.আই.এ� শীর্ষক গ্রন্থে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে দিল্লীতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে রাষ্ট্র দূতের দায়িত্ব পালনকারী জনাব হুমায়ূন রশীদ চৌধুরীর একটি সাক্ষাতকার ছাপা হয়। জনাব হুমায়ূন রশীদ চৌধুরী পরবর্তীতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাপতি, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতীয় সংসদের স্পীকার ছিলেন। ১৯৮৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর জনাব চৌধূরীর-এ সাক্ষাতকারের সংশ্লিষ্ট অংশ উক্ত গ্রন্থের প্রথম সংস্করণের ১৬৩ থেকে ১৬৬ পৃষ্ঠা হুবহু নীচে তুলে ধরা হলো:...� (প্রাগুক্ত পৃষ্ঠা - ৪৩৪) এরপর অলি আহাদ সাক্ষাতকারের সংশ্লিষ্ট অংশটি পুরোপুরি তুলে দেন।

আমরা এর বিশেষ বিশেষ অংশ তুলে ধরছি: �....১৯৭১ সালের অক্টোবর মাসে ভারত সরকারের সঙ্গে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার এক লিখিত চুক্তিতে প্যাক্ট নয় - এগ্রিমেন্টে আসেন। এই চুক্তি বা এগ্রিমেন্ট অনুসারে.....বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভারতীয় সৈন্য বাংলাদেশে অবস্থান করবে (কতদিন অবস্থান করবে তার সময়সীমা নির্ধারন করা হয়না)। ১৯৭২ সালের নভেম্বর মাস থেকে আরম্ভ করে প্রতিবছর এ সম্পর্কে পুনরীক্ষণের জন্য দু’দেশের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশের নিজস্ব কোন সেনাবাহীনি থাকবেনা। আভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য মুক্তিবাহিনীকে কেন্দ্র করে একটি প্যারা মিলিশিয়া বাহিনী গঠন করা হবে।

এই লিখিত সমঝোতাই রক্ষীবাহিনীর উৎস। আর ভারত পাকিস্তান সর্বাত্মক যুদ্ধবিষয়ক সমঝোতাটি হল: সম্ভাব্য ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে অধিনায়কত্ব দেবেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান। মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক নন। এবং যুদ্ধকালীন সময়ে মুক্তিবাহিনী ভারতীয় বাহিনীর অধিনায়কত্বে থাকবে। চুক্তির এই অনুচ্ছেদটির কথা মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীকে জানানো হলে তীব্র ক্ষোভে তিনি ফেটে পড়েন।

এর প্রতিবাদে রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পন অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত থাকেন না। ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমান সাধারণ কথাবার্তার মাঝে প্রধানমন্ত্রী মিসেস ইন্দিরা গান্ধীকে অপ্রস্তুত করে দিয়ে বলেন: ‘আমার দেশ থেকে আপনার সেনাবাহিনী ফিরিয়ে আনতে হবে। ’ শেখ মুজিব এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এত সহজভাবে তুলতে পারেন, ভাবতেও পারেননি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী। তার এই অপ্রস্তুত অবস্থার সুযোগ নিয়ে শেখ মুজিব নিজের কথার পুনরাবৃত্তি করে বলেন, ‘এ ব্যপারে প্রধানমন্ত্রীর আদেশই যথেষ্ট। ’ অস্বতিস্তকর অবস্থা পাশ কটাতে মিসেস গান্ধীকে রাজি হতে হয় এবং জেনারেল মানেকশকে বাংলাদেশ থেকে সৈন্য প্রত্যাহরের দিনক্ষণ নির্ধারণের নির্দেশ দেন।

..... এই চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম। চুক্তি স্বাক্ষরের পর মুহুর্তেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। ভারত সরকারের সঙ্গে অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার গৃতীত এই পুরো ব্যবস্থাকেই অগ্রাহ্য করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ কারণে আমি বিনা দ্বিধায় বলতে পারি যে, ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১-এ বাংলাদেশ পাকিস্তান সৈন্যমুক্ত হয় মাত্র। কিন্তু স্বাধীন-সার্বভৌম হয় ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারীতে।

যেদিন শেখ মুজিব পাকিস্তান জেল থেকে মুক্ত হয়ে ঢাকা আসেন। বস্তুত: শেখ মুজিব ছিলেন প্রকৃত সাহসী এবং খাটি জাতীয়তাবাদী। � (প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা: ৪৩৪ - ৪৩৬) হুমায়ূন রশিদ চৌধুরী ঠিকই বলেছেন। আসলে সে সময় শেখ মুজিবের দৃঢ়তা ও জাতীয়তাবাদী মনোভবের কারণে বাংলাদেশ সিকিমের মত একটি রাষ্ট্র হওয়া থেকে বেচে গেছে। বলা হয়ে থাকে সিকিমের নিজস্ব সেনাবাহিনী না থাকার কারণেই সিকিমকে ভারতের অঙ্গরাজ্য হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা সহজ হয়েছে।

অথচ দু:খ হয় আজও বাংলাদেশে কিছু মানুষ আছে, কিছু বুদ্ধিজীবী আছে যাদের মধ্যে জাতীয় স্বার্থ বোধ ও দেশপ্রেমের অভাব আছে বলে মনে হয়। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় তারা চান দুর্বল সেনাবাহিনী, চান সেনাবাহিনী নানাভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হোক। এভাবে তারা কাদের স্বার্থ রক্ষা করতে চাচেছন তা বোঝা মুশকিল। গত দুই বছরের ঘটনাপ্রবাহের মাধ্যমে সেনাবাহিনী নানাভাবে আলোচনায় চলে এসেছে এবং প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে, যা দেশের জন্য লংটার্মে ক্ষতিকর হয়েছে। অথচ ১/১১ ঘটার জন্য দায়ী মূলত রাজনীতিবিদদের জেদাজেদি ও হানাহানি, সুশীল সমাজ এবং বাংলাদেশে কর্মরত কিছু বিদেশী কূটনীতিকদের ভূমিকা।

অন্যদিকে ঐ বছরই আগষ্টে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে তুলকালাম বেধে যায়, তাতে ছাত্র-সেনাবাহিনী মুখোমুখি দাড়িয়ে যায়। এটিও আমাদের জাতির জন্য ক্ষতিকর হয়েছে। সবশেষে পিলখানার ঘটনাকে কেন্দ্র করে একদিকে যেমন প্রাথমিকভাবে মিডিয়ার নেতিবাচক প্রচারণা সেনাবাহিনীর ইমেজকে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে অন্যদিকে এতগুলো অফিসারের মৃত্যুতে সেনাবাহিনী এবং জাতির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। এদের মধ্যে এমন অনেক অফিসার রয়েছেন যাদের অভাব হয়ত কখনো পূরণ করা সম্ভব হবেনা। অপরদিকে পিলখানা ঘটনার ফলে একরাতের মধ্যে বিডিআরের কমান্ড স্ট্রাকচার ভেঙ্গে গিয়ে দেশের সমগ্র সীমান্ত এলাকা কার্যত অরক্ষিত বা দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে অনেক সামরিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মনে করছেন।

বিডিআরের দুর্বল হওয়া মানে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা দুর্বল হওয়া। কেননা বিডিআরকে বলা হয় দেশের ফ্রন্ট লাইন ডিফেন্স। এই বিডিআরের পূনর্গঠন সহজ কাজ হবেনা। এজন্য সংশ্লিষ্টদের অনেক চিন্তাভাবনা এবং শ্রম সময়ের প্রয়োজন হবে। দেশের স্বার্থে সকলকে এ বিষয়গুলো গভীরভাবে বিবেচনা করা প্রয়োজন।

পিলখানা হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার হওয়া প্রয়োজন যাতে ভবিষ্যতে এমন বিপর্যয় দেশে আর কেউ ঘটাতে না পারে। দেশের বুদ্ধিজীবিদের সেনাবাহিনী সম্পর্কে অযথা নেতিবাচক মনোভব পোষণ বাদ দিতে হবে যাতে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না হতে পারে। সেনাবাহিনীকে রাজনীতির উর্ধ্বে রাখতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা রাজনীতিবিদদের আত্মঘাতী কালচার পরিত্যাগ করে দেশের স্বার্থে কাজ করতে হবে। সেনাবাহিনীকে নিজেরাই দুর্বল করলে, রাজনীতিবিদরা ইচ্ছাকৃতভাবে হানাহানি বাড়ালে পাশ্ববর্তী কোন দেশ যদি এর সুযোগ নিতে চেষ্টা করে তবে এর জন্যতো তাকে দায়ী করা যায়না।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.