আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডাক্তারদের দোষ এবং ভিটামিন ই

ডা: শাহরিয়ারের পোষ্ট

ধন্যবাদ কৌশিক, বড় বিলাই, আন্ধার রাত এবং বিপ্লব কান্তি কে আগের পোষ্ট মন্তব্যের জন্য। আন্ধার রাত বলেছেন প্রাইভেট মেডি: কলেজে "ম্যানেজ" করে কোন কোন বিষয়ে পাশ করা যায়। বর্তমানের নতুন ডাক্তারদের তাই আমার বড়ই ভয়। এরা যতটা ভাব দেখায় ঠিক ততটাই ভেতর ফাঁকা। এটি একটি অসাড় যুক্তি।

প্রাইভেট মেডিঃ কলেজের পরীক্ষা সরকারী মেডিঃ এর একই প্রশ্নে, একই সাথে হয়। পরীক্ষার খাতা সরকারী মেডিঃ একই পরীক্ষকরাই দেখেন। ভাইভা পরীক্ষাও একই পরীক্ষকগন নেন। আপনার হয়ত ধারনা ছিল প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মত প্রাইভেট মেডিক্যালের পরীক্ষা ওই মেডিঃ'এর শিক্ষকরাই নেন। এটি ভুল ধারনা।

বহিরাগত পরীক্ষকদের ম্যানেজ করা সরকারী মেডিঃ যেমন অসাধ্য প্রাইভেটেও তাই। ভাব ধরার ব্যাপারটি ব্যাক্তিবিশেষের নিজস্ব ব্যপার। বিপ্লব কান্তি বলেছেন গত বছরের একটা ঘটনা বলি, জুলাই মাসে একজন ২৫ বছরের লোক পান্হপথের হেলথ এন্ড হোপ হসপিটালে যায়, জনৈক মেডিসিনের ডাক্তারের কাছে, জ্বর ১০৩ ১ দিন ধরে । ঐ ডাক্তার এন্টিবায়োটিক, প্যারাসিটামল দেয়, আর কিছু টেষ্ট, রাতে জ্বর কমে না, সকালে ঐ ডাক্টারকে ফোন করলে তার ক্লিনিকে ভর্তি করে দিতে বলে। বিকেলেই টাইফয়েডের একটা এন্টিবায়োটিক ইনজেকসন দিতে শুরু করে।

টাইফয়েডের টেস্ট কিন্তু করে নাই। দু-দিনে জ্বর কমে না, তারপর সে আরেক মেডিসিনের ডাক্তারকে নিয়ে আসে। সেই ডাক্টার কুইনাইন ইনজেকসন দেয় স্যালাইনের সাথে। দুইটা জীবন নষ্ট করা ইনজেকসন চলছে কিন্তু কোন কারন ছাড়া !!!!!!!!!!!!! তারপর এক-দুদিন পর জ্বর ছেড়ে যায়। রোগি বাড়ি চলে যায়, পরিচিত মেডিসিনের ডাক্তারকে দেখায়।

সেই ডাক্টার প্রথমেই ভুল ধরিয়ে দেয়, বলে ওষধগুলো কোন কারন ছাড়া দেয়া হয়েছে/। এটা ছিল ভািরাস জ্বর এবার উত্তর দেন । আপনি যে অভিযোগ করেছেন সেটা সত্যি দুঃখজনক। কিছু ডাক্তার এ রকম ভুল করে থাকে কিন্তু তার মানে বাংলাদেশে ভাল ডাক্তার নেই সেটা ভাবা ঠিক নয়। এবং সব ডাক্তারই যে পড়াশোনা বাদ দিয়ে ফেলে সেটাও সত্যি নয়।

আগের পোষ্টে আমি সে কথাটাই বলেছি। বলেছি বাংলাদেশে অবশ্যই ভালো ডাক্তার আছে এবং অনেক ডাক্তারই পড়াশোনা চালিয়ে যান। কারন দেখুন আপনি নিশ্চয়ই ওই ভুল করা ডাক্তারের কাছে আর যাবেন না এবং এরকম ভুল করে যেতে থাকলে ওই ডাক্তারও আর রোগী পাবেন না। পেশাগত কারনেই তাকে সঠিক চিকিৎসা দিতে হবে। এছাড়া আর একটি বিষয় আছে সেটি রোগীদের অতিরিক্ত বাড়াবাড়ী।

যেমন আপনার উল্লেখিত রোগী ১ দিনের জ্বরে মাত্র ২দিনের ওষুধ খেয়েই ডাক্তারকে আবার ফোন করেছে। এবং ৩য় দিন পুনরায় দ্বিতীয় একজন চিকিৎসকের পরামর্শও নিয়েছে। ধর্য্য ধরে পূর্ন মাত্রার ওষুধ খাবার ধর্য্য আমাদের রোগীদের একেবারেই নেই। রোগীরা চান ডাক্তার ম্যাজিকের মত একদাগ ওষুধ খাইয়ে তাকে সুস্থ করে দেবেন। ওই ডাক্তার যদি আপনার রোগীকে ভাইরাস জ্বরের কথা বলে শুধু প‌্যারাসিটামল দিয়ে যেতে দিতেন তাহলে আপনার রোগী কি সেই ডাক্তারকে বিশ্বাস করত? না ভাবত ডাক্তার কিছু জানে না, ওষুধ দেয় না, ভালো ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।

রোগীদের অকারন চাপে অনেক ডাক্তার বাধ্য হয়ে অকারন চিকিৎসা করেন। দুঃখিত লম্বা উত্তরের জন্য এবার মূল প্রসঙ্গ ভিটামিন ই ( E ) ভিটামিন ই মানব দেহের গুরুত্বপূর্ন একটি ভিটামিন। মূলত এর কাজ এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে দেহের জন্য ক্ষতিকর উপাদান ( ফ্রী রেডিকেল ) ধ্বংস করা। এছাড়া দেহের গঠন এবং রোগ প্রতিরোধে ভিটামিন ই'র ভুমিকা আছে। উদ্ভিদজাত তেল, বাদাম, সবুজ সব্জি, পালং শাক, ডিমের কুসুম এবং সয়াবিনে ভিটামিন ই বেশী পাওয়া যায়।

মানব দেহে সাধারনত ভিটামিন ই'র ঘাটতি হয় না। তবুও কোন কারনে ভিটামিন ই'র ঘাটতি হলে নানা রকম স্নায়বিক রোগ লক্ষন দেখা যায়। তেল ছাড়া দেহ ভিটামিন ই খাবার থেকে শোষন করতে পারে না তাই ভিটামিন ই যুক্ত খাবার সামান্য তেলে রান্না করে খেতে হয়। সে কারনেই শিশুদের রান্না করা খিচুড়ীতে সামান্য তেল দিতে বলা হয়। ভিটামিন ই গ্রহনের জন্য সামান্য জিংক ( Zinc ) ও প্রয়োজন।

ভিটামিন ই'র কিছু গুনাগুন এখনও গবেষনার পর্যায়ে আছে। ধারনা করা হয় ভিটামিন ই হৃদরোগ, ক্যান্সার এবং চোখের ছানি প্রতিরোধ করে। এছাড়াও ত্বকের লাবন্য , চুলের যত্নে, যৌন সুস্থতা এবং বার্ধক্য প্রতিরোধে ভিটামিন ই খাওয়ার কথা বলা হয়। দেহের প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভিটামিন ই দেহেই জমা থাকে তাই নিয়মিত ভিটামিন ই খাবার প্রয়োজন হয় না। অতিরিক্ত ভিটামিন ই পেটের সমস্যা করতে পারে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.