আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঘুড়ে এলাম কক্সসস বাজার থেকে

ঈদের বাসি মুবারক :)

অন্যকদিন পর একটা লম্বা ছুটি নিয়ে ঘুড়ে এলাম কক্সসস বাজার থেকে, পরিকল্পণা ছিলনা বল্লেই ভাল । হঠাত মনে হল কথাও যাওয়া দরকার, জানতাম তখন আমার বন্ধুদের সময় হবে না । কারণ আমার বন্ধুদের আফিস আছে আর কারও পরীক্খা আছে আর স্কুল কলজের গুরুপটার আবার ইন্টারন করতে ডুকছে নানান ব্যাংকে । তাই ঠিক করলাম নিজেই গিয়ে ঘুড়ে আসব । যদিও একবার একা ঘুড়ার অভিগতা আছে ।

যেই কথা সেই কাজ, সোহাগ বাসের টিকেট কেটে আসলাম এক শুক্রবার এ । মনে হয় ৮৫০ টাকা পরেছে ডাইরেক্ট কক্সসস বাজার যাত্রা শুরু হলে রাতে ১১.৩০ টায়, খুবি খারাপ শিক্খা হইছে এত বাজে বাসে ভ্রমণ আর জীবনে করি নাই কই ভাবলাম পাশে পরবে এক সুন্দরী রুপবতী যার সাথে হালাকা পাতলা কথা বলে সময় আরামেই কেটে যাবে হে হে কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ন ভিন্ন পেলাম এক বুড়ি সাথে এক ছোট নাতনী । ভোর ৭/৮ টায় নেমে গেলাম কক্সসস বাজার এর কলাতলী বিচের কাছে । বাস থেকে নেমে প্রথম কাজ হল হোটেল ঠিক করা । গেলাম সীক্রাউন এর রিসিপশনে, ওরা আমাকে একটা সুন্দর দেখে হীল সাইড বিউ রুম দিল, এক রাত ৮৪০ টাকা, বড় টিভি, ডিশ এবং সুন্দর একটা টয়লেট আছে ।

রুমটা ভালই লাগল, গোসল করে রওনা দিলাম সমুদ্রের পানে । (হোটেলে বসে কফি আর পানি কিনলাম ) তখন বটে ১০ টার মত বাজে। বার বার ভুল করে মনে হচ্ছিল, সমুদ্র যেন আমায় ডাকছে তাই তারাতারি সমুদ্রের কাছে গিয়ে একটা বসার জায়গা ২০ টাকা পার ঘন্টায় ভাড়া নিলাম । এই ছবির বাচ্ছাটাকে দেখলাম দৌড়া দৌড়ি করতে । এক ঘন্টা বসে এখান থেকে উঠলাম ।

তারপর রুমে গিয়ে কিছু সময় ধরে কারটুন দেখে বের হলাম দুপুরে খাবারের জন্য । ঠিক করলাম যাব ঝাউবন রেস্তারায়, শেষ বার যখন এসেছিলাম ঔটা খুবই ভাল লাগেছিল । যেই রিক্সাওয়ালা কেই জিগ্গাস করি ঝাউবন যাবেন কতে? রিক্সাওলা বলে ২৫ টাকা । আমি ঠিক করলাম আজকে হেটেই যাব । বটে হেটে হেটেই গেলাম, পেট ভরে খেলাম তারপর আবার ফিরলাম হেটে হেটে ।

বেশ ভালই লাগল সেই দিন তেমন কিছুই কাজের হয় নাই, সন্ধা পর্যন্ত অপেক্খা করে চলে গেলাম আমার রুমে । বিকালের এই দৃশ্যটা খুবই ভাল লেগেছে । সে রাতে যে কই খেলাম মনে করতে পারছি না, মনে হয় কিছুই খেতে মনে ছিলনা । ত পরের দিন শুরু হল, সকালে হোটেলের ফ্রি নাস্তায় । তাই ভাল ভাবে নাস্তা সেরে ফেল্লাম ।

আমার যেহেতু এডভান্স বুক করা ছিলনা তাই রুম ছাড়তে অথবা পরিবর্তন করতে হবে । আর কোন রুম না পেয়ে নিলাম একটা ৩ বেডের রুম এটা বটে সমুদ্রের একটা পাশের বিউ পেয়েছি, দাম ও বেশী ১৪০০ টাকা । জিনিস পত্র সরিয়ে তারপর আবার বের হলাম । দেখা হল হটেলের রেস্তোরার ক্যাশিয়ার সাথে, সে বটে আমাকে ছিনে ফেলছে । আমারা বটে গত বছর যখন এসেছিলাম তখন এক রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিয়েছিলাম সে সময় সে আমাদের সংগ দিয়েছিল কফি আর ফ্রান্চ ফ্রাই করে ।

তার নাম হাসান । কেন জানি দুনিয়ার ভাল মানুষ গুলোর নাম হাসান হয় সেদিনও বটে গেলাম ঝাউবন রেস্তরায়, আগের দিনের মত খেলাম ইলিশমাছ, বিবদ তরকারি, ভাত, ডাল আর ভর্তা । যদিও গত দিন শুটকি নিয়ে ছিলাম কিন্তু আজ নেই নাই কারন অত ওয়াও না । ও বলতেই ত ভুলে গেছি যে একটা রিক্সাওলা পেয়েছি নাম সুমন, যিনি ওখানকারই স্থানীয় । অতি উত্তম মানুষ যদিও আমাকে ড্রিংস ফ্রিংস এর জন্য প্রথম সেধেছিল যখন দেখছে আমি সিগারেটই খাইনা তখন সে তার ভুল বুঝতে পারে ।

সে বটে ১৫ টাকা ভারা নিয়েছে ঝাউবন যাবার জন্য । ত খেয়ে দেয়ে ফিরার পথে জিগাস করলাম সুমন ভাই আপনাদের এখানে এই বাশ ফাটা রোধে কই ঘুরতে যাওয়া যায় ? সে বলে চলেন নাজির টেক যাই, সেখানে শুটকি উতপন্ন হয় । ত আমিও আগ্রহ দেখালাম । আমি আরকি আনেক সময় পর পৌছালাম ঐতজ্যবাহী নাজির টেক শুটকির ফেক্টোরি এলাকায় । এখানকার বাসিন্দারা সাধারন্ত অনান্য এলাকার মানে কক্সসস বাজারের না ।

ত অনেক হাটা হাটির পর পেলাম একটা মজার ব্যাপার, ব্যাপার টা আরকি "যেখানে হাগে সেখানেই শুটকি ধোয়া মোছা করে আরকি" । এরপরও যদি শুটকি খান সেই দায় আপনাদের এ যায়গা ঘোড়ার পর ফিরলাম হোটেেল । রিক্সওয়ালা কে দিলাম ১০০ টাকা মনে হয় খুশি হইছে বেচারা ভাল লোক পড়া লেখা করে উন্মুক্ত ইস্কুলে । ইস্কুলের ক্লাস নাকি সাপ্তায় সাপ্তায় হয় । হোটেলে ফিরে একটা ঘুমিয় পরলাম, এত ভাল লাগল ঘুমটা তা কল্পনাতীত ।

সন্ধায় উঠে নামাজ কালাম পড়ে বের হলাম, প্লান ছিল কোন প্লান নাই হাটা হাটি করব । বের হয়ে সমুদ্রর কাছের রেস্তোরায় বসতেই দেখা হাসানের সাথে । আমি বটে কফি খাচ্ছিলাম, আর হাসান ভাই আমার জন্য নিয়ে এনেছে প্পকর্ন । তারপর বল্ল চলেন ঘুড়ে আসি । ত বের হলাম হাসান ভাই এর সাথে ।

নানান গল্প করতে করতে জানলাম হাসান ভাই আমার জুনিয়র ২০০৬ এ ইন্টার পাস করে এখন হোটেল ম্যন্জেমেন্ট নিয়ে পড়া লেখা করছে ওর করতে ইচ্ছুক এমন একটা কিছু হবে হয়ত । তার বটে ফারমেসিটিউকাল ব্যবসায় খুবই ইচ্ছা আছে কারণ এর আগে ফারমেসিতে কাজ করেছে । তাকে একটা আইডিয়া দিলাম, সমুদ্র বিচে ফার্সট এইড বক্স এর ব্যবস্থা করার জন্য । আনেকেই হাত পায় কেটে ফেলা তারা তখনই পেয়ে যাবে ফার্সট এইড । এতে তাদের ফারমেসির ব্রান্ডিং করার সম্ববনা আছে ।

যাই হউক, তার বটে আইডিয়াটা পছন্দ হইছে বলেই মনে হল । ঘুরতে ঘুরতে গেলাম মারমিডি ক্যাফে নামক এক ক্যফেতে । খাওয়া দাওয়ার পর মনে হল দামের তুলনাই খাওয়ার পরিমাণ খুবই স্বল্প ছিল । কিন্তু ক্যাফেটা বড়ই সুন্দর, ছবি প্রমাণ । রাত ১০টার দিকে আমার বের হলাম, বাইদাওয়া একটা টিপ: ভুলেও হটেল থেকে পানি কিনবেন না, কারন দাম প্রায় দিগুন, কাছেই দোকান পেলাম কিনে নিলাম পানি, চিপস, চানাচুর ।

এসব জিনিস রুমে রেখে এসে আমার বের হলাম রাত ১০টার দিকে । উদ্যেশ বড় বিচে যাব, হাটতে হাটতে ভুল করে চলে গেলাম কক্সসস বাজারের শহীদ মিনারে । পরিচয় হল এক ফুলের দোকান ধারের সাথে । বেচারা নিজেকে পরিচয় করিয়ে দিল ছোট ফুল দোকানের মালিক হিসাবে । আবার হেটে হেটে ব্যাক করলাম হোটেল ।

তারপর মুভি দেখলাম এইচবিও তে, দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পরলাম । সকালে উঠলাম ১০টায় । উঠে গসল করে বের হলাম, হোটেলের ফ্রি নাস্তা করে ঠিক করলাম আজ রাতেই বাসায় ফিরে যাব, কারণ কেমন জানি একা একা লাগছে আর যেহেতু আমার একটু বেশী হোম সিকনেস আছে । তাই ঘুম থেকে উঠেই ডিশিসন নিয়ে নিলাম । বাস যেহেতু রাতে তাই এখনও একটা রুম রাখা দরকার ।

যেহেতু ওদেরকে বলে রাখছিলাম একটা ৮৪০ টাকার রুম রাখতে । ত জিগ্গাস করতেই ওরা দিয়ে দিল । হাসান ভাই আমাকে টাটকা কফি খোওয়াল । তারপর গেলাম ভাল বাসের সন্ধানে । পেলাম গ্রিন লাইনের ভোলভ ।

৯৪০ টাকা মনে হয় পরেছিল । পেলাম আরেক ভাল রিক্সাওলা যেহেতু বাসওলা ক্রডিট কার্ড এলাও করে না তাই আবার রুমে এসে টাকা নিয়ে গেলাম, এবার বটে সংগ দিল রিক্সাওলা । রিক্সাওয়ালাকে জিগ্গাস করলাম, ভাই কই ঘুড়া ঘুড়ি করা যায় বলেনত । যেহুতু বাস রাতে এখন সময় কাটানো লাগব । ত রিক্সাওলা বল্ল চলেন সীভিউ পার্ক এ যাই ।

ত সেখানে গিয়ে, দেখলাম সুন্দর সুন্দর ঝর্না, গুহা আর পরিচয় হল ছোট টু্র গাইড মরিয়মের সাথে । সব শেষে ফিরলাম হোটেল । এবার বটে রিক্সাওয়ালাকে ২০০ টাকা দিতে হয়েছে । আমার কাছে বটে ফেয়ারই মনে হইছে কারণ বেচারা খুবই ভাল সাপর্ট দিয়েছিল । ফিরে রেস্ট নিয়া বিকালে বের হলাম আবার, ত দেখলাম সমুদ্রের ক্রন্দন মনে হল সমুদ্র বলছে আয় সমুদ্রে নেমে পর ।

ত এবার সমুদ্রের পানি স্পর্ষ করি নি কারণ অনেক ঝামেলা সন্ধা হতে না হতেই দেখি মাথার উপর এক ঝাক মশা দেখেন ক্যামেরা কিভাবে ধরছে । আবার হাসান ভাই এর সাথে দেখা, গেলাম একটা লোকাল হোটেলে উনি খাওয়াল সবজী দিয়ে তেলে বাজা একটা কি জেনিস নাম এখন মনে নাই । তারপর সমুদ্র ঘুড়া ঘুড়ি করে সমুদ্রকে বিদায় জানিয়ে ফিরলাম হোটেলে । তারপর রাতে রিক্সা নিয়ে চলে গেলাম বাসের কাউন্টারে । এভাবেই সমাপ্ত হল একটা ইউনিক ভ্রমণ, সারা জীবন মনে থাকবে ।

এখানে আমার ভ্রমণের ছবি গুলো পাবেন ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.