আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আখের রস এবং পানীয় জাতীয় খাবার।

I am fine

ঢাকা শহরে অনেক খাবারের মধ্যে আখের রস একটি অন্যতম খাবার হিসাবে ব্যবহার করতে দেখা যায়। বিশেষ করে রাস্তায় যে সমস্ত খাবার কিনতে পাওয়া যায় তাদের মধ্যে আখের রস অন্যতম একটি। শহরের প্রায় সব এলাকেতেই আখের রস বিক্রি হতে দেখা যায। এবং অনেক মানুষ তা কিনে খাচ্ছে তাও দেখা যায়। অনেকে এটা খুব পছন্দ করে।

প্রাকটিক্যাল চিত্র দেখে তা সহজে অনুমান করা যায। অবশ্য আমরা যে আখের রস খাই না তা বলতে পারবো না। তবে সেটা রস হিসাবে গ্লাসে করে নয়। সেটা খাই আখ কিনে এবং দাঁতে চর্বন করে খাই। আর এই আখের রস নিয়েই যত কথা।

যারা এটা খাই তারা এটার পক্ষে নানা যুক্তি দেখান। যেমন, এটা স্বাস্থের জন্য খুব ভালো। নানা কথা। কিন্তু আমরা এই রসের বিপক্ষে কিছু বলতে চাই। আখের রস ভালো ,তবে সেটা অবশ্যই সবার জন্য নয়।

এবং এটা যে ভাবে রাস্তার মধ্যে খোলা জায়গায় অত্যন্ত নোংড়া, ধূলা-বালি, মশা-মাছি,কফ-থুথু,এবং নাম না জানা হাজার রকম রোগের পরিবেশ যুক্ত পরিবেশে প্রসেসিং করা হচ্ছে তাতে কোন উপকার তো হয়ই না বরং আমরা না জেনে না শুনে নিজের অজান্তে বহু প্রকার রোগের জীবানু প্রতিনিয়তই নিজের শরীরে অবাধে ঢুকতে দেবার ব্যবস্তা করে দিচ্ছি যা আমরা কেও জানিনা। খেয়াল করলে সহজেই দেখতে পাওয়া যাবে যে, যারা রস বিক্রি করছে তাদের পোশাক-আশাক, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, চুল,হাত নোখ,বলতে গেলে তারা খুবই নোংড়াএবং অপরিচ্ছন্ন। নিজের হাত দুটোকে পর্যন্ত তারা কোন সময় ওয়াশ করে না। এবং এদের বসবাস বেশির ভাগই ঢাকার বিভিন্ন স্লাম এরিয়াতে। যা অত্যন্ত নোংড়া।

এরা নিজের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বলতে কিছুই জানে না। এবং স্বাস্থ সচেতনতা বলতে এদের কোন জ্ঞাণ নেই বলল্লেই চলে। তারপর আসা যাক, পরিবেশের কথায়। মশা-মাছি,ধূলা-বালি সহ বাতাসে প্রবাহিত যত রোগের জীবাণু আছে সবই তা বহন করে ফেলছে সেই আখের উপর। দেখা যাই হাজার হজার মাছি আখের উপর বসে আছে।

এই মাছি বিভিন্ন মল-মুত্রে,কফ-থুথুতে বসে আবার তারা বিভিন্ন খাবারে বসচ্ছে এবং তাতে ডিম পাড়ছে। যা আমরা চোখে দেখি না। এবং যে মেশিনে ভাঙ্গানো হচ্ছে সেই মেশিনও অত্যন্ত পুরানো এবং জং ধরা। সেই মেশিনও নানা রকম জীবানু বহন করছে। এবং যে গ্লাসে রস পরিবেশন করা হচ্ছে সেই গ্লাস অত্যন্ত নোংড়া একই পানিতে বার বার কোন রকম ধুয়ে একই গ্লাসে সবাইকে খেতে দিচ্ছে যা সবার স্বাস্থের জন্য খুবই হুমকি স্বরুপ।

মানুষের হাত থেকে ছড়ানো নানা রোগ,এবং মশা-মাছি ও পানি বাহিত অনেক রোগের কথা আমরা জানি। যার মধ্যে ডায়রিয়া, আমাশয়,কলেরা, ক্রিমি অন্যতম। এদের বাহক,উৎস এবং এই রোগের কারণ সম্পর্কেও কমবেশি অনেকের ধারণা আছে। আমাদের দেশে এই সমস্ত রোগের প্রাদুভাব খু্বই বেশি এবং প্রতি বৎসর বহু মানুষ বিশেষ করে বহু শিশু আমাদের দেশে এই রোগে মারা যায়। শুধু মাত্র সামান্য অসচেতনতার কারণে।

সেই সাথে ইদানিং আর একটি বিশেষ রোগের নাম যুক্ত হয়েছে তা হচ্ছে জন্ডিস বা হেপাটাইসিস। যদিও এই রোগ মোটেই নতুন নয়, শুধু আমাদের না জানার কারণে এটা আমাদের কাছে এখনও নতুন রোগ। যদিও জন্ডিস নিদিষ্ট একক কোন রোগ না। এটা রোগের লক্ষণ মাত্র এবং এটি একটি লিভারের রোগ। এই জন্ডিস নিয়েও আমাদের দেশে নানা কুসংকার জড়িয়ে আছে।

ভাইরাল হেপাটাইটিস বা জন্ডিস আমাদের দেশে একটি অতি পরিচিত রোগ। এই জন্ডিসের প্রধাণ কারণ হলো কয়েক প্রকার ভাইরাসের সংক্রমণ। এই ভাইরাসগুলো হেপাটাইটিস এ,বি,সি, ডি,এবং ই নামে পরিচিত। হেপাটাইটিস 'এ' এবং 'ই' আমাদের দেশে প্রায়ই মহামারী আকারে দেখা দেয়। এই মহামারী ঘটে বন্যা কিংবা বন্যার পরবর্তী সময়ে।

এছাড়া সারা বছর ধরে দূষিত পানি, খাবার এবং মলের মাধ্যমে ছড়ায় এবং তা মুখ ও পায়ু পথে বিস্তার লাভ করে। আমাদের দেশে পানি বাহিত বিভিন্ন রোগ- ব্যাধি বিস্তারের জন্য প্রধাণত দায়ী # বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের অভাব # স্বাস্থ্যসন্মত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকা # স্বাস্থ্য/খাদ্য অভ্যাস। # আবহাওয়া এবং পরিবেশ গত কারণ। একটু ব্যক্তিগত সচেতনতার ফলে আমরা ইচ্ছা করলেই এই রোগ গুলি থেকে নিরাপদ থাকতে পারি। যেমনঃ ব্যক্তিগত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার উন্নতি সাধন, নিরাপদ পানি ব্যবহার,নিরাপদ পয়ঃনিষ্কাশন প্রণালী এবং খাদ্যাভাস পরিবর্তনের মাধ্যেম এগুলো থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

আর সেজন্য সবার আগে আমাদের বাইরের খোলা যে কোন খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। এক্ষেত্রে শুধু আখের রসের কথা বললে ভূল হবে। যে কোন পানীয় জাতীয় খাবার এবং খোলা খাবার। এক্ষেত্রে বলা যায় যে কোন শরবত,কাটা শশা,গাজর, তরমুজ ইত্যাদি। যা নিয়ে লিখা শুরু করেছিলাম তা হচ্ছে আখের রস।

এই রস না খেয়ে যদি আমরা সরাসরি আখ খাই তবে তা হবে স্বাস্থ্য সন্মত কারণ আখ দাতের জন্য খুব একটা উপকারী উপাদেয়। যেমন আখ খেলে দাঁতের গোড়া শক্ত হয়, দাঁত পরিষ্কার হয়। সুতরাং বলা যেতে পারে আর নয় আখের রস ,খোলা খাবার কিংবা পানি,রস জাতীয় কোন খাবার।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।