আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আওয়ামী লীগ কি জনগনের স্বার্থে মাফিয়া-সিন্ডিকেট চক্র ধ্বংস করতে পারবে?

বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্‌উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ

পৃথিবীর প্রতিটি দেশেই রয়েছে মাফিয়াচক্র। এই কুখ্যাত চক্রটি যেমন নৃশংস পদ্ধতিতে অহরহ খুনখারাপি করে, তেমনি মজুতদারী করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বাড়িয়ে সীমিত আয়ের মানুষের জীবনকে করে তোলে দুর্বিষহ। বাংলাদেশও এর ব্যাতিক্রম নয়।

বিগত ৪দলীয় জোট সরকারের আমলে বাংলাদেশি মাফিয়াদের অমানবিক আচরণ সাধারণ জনগনের নাভিশ্বাস উঠেছিল-যা এবারের ভোটের ফলাফলকে প্রভাবিত করেছে বলেই আমার বিশ্বাস। আমরা জানি, দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতির নানা কারণ আছে। যেমন: আর্ন্তজাতিক বাজারের আচরণ। তবে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতির অভ্যন্তরীণ কারণের মধ্যে মজুদদারী যে অন্যতম সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। সাধারণত মাফিয়া-সিন্ডিকেটরা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বাড়িয়ে সীমিত আয়ের মানুষের জীবনকে করে তোলে দুর্বিষহ।

বিগত ৪দলীয় জোট সরকারের আমলে বাংলাদেশ মাফিয়াদের জন্য হয়ে উঠেছিল স্বর্গরাজ্য। কী এর কারণ? আমার তো মনে হয় ৪দলীয় জোট সরকারের শ্রেণিচরিত্রের কারণেই বাংলাদেশ মাফিয়াদের জন্য হয়ে উঠেছিল স্বর্গরাজ্য। কথাটার সামান্য ব্যাখ্যা করি। গ্রামীন মানুষের স্বার্থে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু যে আমূল ভূমিসংস্কারের নীতি গ্রহন করতে যাচ্ছিলেন তারই প্রতিক্রিয়া সরুপ বাংলাদেশে ভূস্বামীদের প্রতিনিধি হিসেবে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদীদের উত্থান ঘটে। যার পরিপ্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়।

বি এন পি আসলে প্রথম থেকেই ভূস্বামী শ্রেণিরই প্রতিনিধি। এবং তাদের উগ্র ডানপন্থা ও ধর্মীয় সংশ্লিষ্টতার ব্যাখ্যাও এটি। বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদীরা বাংলাদেশের ভূস্বামী শ্রেণির প্রতিনিধি হওয়ায়, লক্ষ্য করে থাকবেন, “তৃণমূল” শব্দটা আওয়ামী লীগের পক্ষে যতটা মানানসই বি এন পি-র ক্ষেত্রে ততটা নয়। এবারের নির্বাচনে এই তৃণমূল পর্যায়ের অব্যাহত গনঃসংযোগই ভোটের ফলাফলের পক্ষে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে বলেই প্রতীয়মান হয়। যা হোক।

যে কোনও দেশেই মাফিয়া-সিন্ডিকেটের উত্থান ঘটে সে দেশের উচ্চবিত্ত ধণিকশ্রেণির বলয় থেকেই- যে কারণে অভিন্ন শ্রেণিভূক্ত হওয়ায় ৪দলীয় জোট সরকারের আমলে মাফিয়া-সিন্ডিকেটদের দমন করা সম্ভবপর হয়নি। পক্ষান্তরে, আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক অবস্থান, আবেগ ও শ্রেণিচরিত্র খানিকটা ভিন্ন হওয়ায় দলটি মাফিয়াসিন্ডিকেট চক্রে নির্মম আঘাত হানতে পারবে বলেই আমার বিশ্বাস। বাংলাদেশের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের মুখে দিকে চেয়ে এই ঝুঁকিটি তাদের গ্রহন করতেই হবে। কেননা, সমাজের অসাধু ব্যবসায়ীদের নানান গর্হিত কর্মকান্ড সমূলে নিশ্চিহ্ন করতে এবং সৎ ব্যবসায়ীদের পৃষ্টপোষকতা করার জন্যই টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া অবধি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ এবার বি এন পি-কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটকে এমন অকল্পনীয় হারে ভোট দিয়েছে। কাজেই, আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎও এই অনিবার্য সিদ্ধান্তটির ওপর অনেকাংশেই নির্ভরশীল।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.