আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুক্তিযুদ্ধে ঠাকুরগাঁও, পর্ব ২.১১ (একটি কথ্য ইতিহাস-উইং কমান্ডার (অব.) এস. আর. মীর্জা )

mahbub-sumon.com

প্র: প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ-এর নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে যে সব অরগানাইজেশন গড়ে তোলা হয়- সে সব সংগঠন কিভাবে কাজ করেছিলো,কতটা করতে পেরেছিলো ? উ: মুজিবনগর সরকার গঠনের পর কয়েকটি মন্ত্রণালয় গঠিত হয়। যেমন- অর্থ মন্ত্রণালয়,প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়,স্বাস্হ্য মন্ত্রণালয়,ত্রাণ ও সাহায্য মন্ত্রণালয়- এ রকমভাবে প্রপার একটা অরগানাইজেশন গড়ে তোলা হয়। এ সব মন্ত্রণালয়ের প্রতিটির জন্য একজন করে সেক্রেটারি নিযুক্ত করা হয়। এর নিচের ধাপে উপ-সচিব,তারপর সহকারী সচিব- এ ভাবে একটা প্রপার প্রশাসন খাড়া করা হয়। এ ছাড়াও মুজিবনগর সরকার আর একটি বিষয় করেছিলেন- তা হলো ‘জোনাল কাউন্সিল’।

পুরো বাংলাদেশ এলাকাকে কয়েকটি জোনে ভাগ করা হয়। এ সব জোনাল কাউন্সিলের ভার দেয়া হয় আওয়ামী লীগ এম.এন.এ. ও এম.পি.এ.-দের উপর। যুদ্ধ পরিচালনায় সেক্টর যেভাবে ভাগ করা হয়েছিলো- তেমনিভাবেই এই কাউন্সিলও ভাগ করা হয়। জোনাল কাউন্সিলে নির্বাচিত জন প্রতিনিধিদের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয়। তাদের দায়িত্ব ঠিক কি ছিলো- এখন আর তা বলতে পারবো না।

মুজিব নগর সরকারের অসুবিধা ছিলো অনেক। প্রপার অফিস ছিলো না,বসার জায়গা তেমন ছিলো না। অন্যান্য সংকটও ছিলো প্রচুর। তারপরও বলবো যথাসাধ্য চেষ্টা করা হয়েছে আমাদের লজিস্টিক সার্পোট দেয়ার জন্য। সহযোগিতা করা হয়েছে একটা প্রপার অরগানাইজেশন চালাবার জন্য।

একদিকে শরণার্থী সমস্যা,অন্যদিকে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা,অন্যদিকে আবার ভারতের সঙ্গে সু-সম্পর্ক বা যথাযথ সমঙর্ক বজায় রাখা,আন্তর্জাতিক সম্পর্ক,আওয়ামী লীগ দলীয় নানা কোন্দল ইত্যাদি বিষয়গুলো সফলভাবে মোকাবিলা করে আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে কাক্মিখত লক্ষ্যে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন মুজিবনগর সরকার- আর সে সরকারের প্রধান ছিলেন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ। প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ সত্যিই একজন বিচক্ষণ,ধিরস্হির সহনশীল মানুষ ছিলেন। যদি তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রী না হতেন- তাহলে এই যুদ্ধের পরিণতি কি হতো তা বলা মুস্কিল। ১০ এপ্রিল আগরতলাতে মন্ত্রিসভা গঠিত হয়। সেখানে খন্দকার মোশতাক আহমদ প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন।

সেটা হতে পারেননি বলে তিনি ভীষণ ক্ষুব্ধ ছিলেন। অনেক বুঝিয়ে তাঁকে মন্ত্রিসভায় অনর্ভুক্ত করা হলেও তিনি কখনোই তাজউদ্দীন আহমদ-কে মেনে নিতে পারেননি। প্র: বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রথম কমিশনপ্রাপ্ত অফিসারদের পাসিং আউট হয় ১৯৭১ সালের ৯ অক্টোবর। অস্হায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্যারেডে সালাম গ্রহণ করেন। এরপর দ্বিতীয় ব্যাচের প্রশিক্ষণও শুরু হয়।

এই দ্বিতীয় ব্যাচের অফিসার সিলেকশনে আপনার ভূমিকা ছিলো। এ সম্পর্কে কি আপনি কিছু বলবেন ? উ: সেপ্টেম্বর মাসে আর্মির দ্বিতীয় অফিসার্স ব্যাচ ট্রেনিংয়ের জন্য সদস্য নির্বাচনে কর্নেল ওসমানী এবং প্রফেসর ইউসুফ আলীর অনুমতি নিয়ে আমাকে পাঠানো হলো সেক্টর ৬ এবং ৭ নম্বরে। আমার দায়িত্ব ছিলো ৬ নম্বর এবং ৭ নম্বর সেক্টর কমান্ডারদ্বয় যাদের নির্বাচন করেছেন সেই তালিকা অনুযায়ী সদস্যদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়ন করে ফোর্সেস হেড কোর্য়াটারে উপস্হাপন করা। ৭ নম্বর সেক্টরের সদস্যদের জমা করা হয়েছিলো মালদহতে। আর ৬ নম্বর সেক্টরের সদস্যদের জমা করা হয়েছিলো তেঁতুলিয়া ডাক বাংলাতে।

আমি তাদের সাক্ষাৎকার নিয়ে চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়ন করি। আমি দু’টি সেক্টর থেকে ৩০ জনের একটি চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়ন করি এবং সেটি ফোর্সেস হেড কোয়ার্টারে উপস্হাপন করি। চলবে...........

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.