আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শিল্প ওকে যেনো আলিঙ্গণ করে উন্মুক্ত করে



বাংলাদেশের মানুষ সাংস্কৃতিকমনা। এই কথাটি কিন্তু সকলের জানা। যতই মাথায় টুপি পরে ধর্মের দোহাই দিয়ে বাংলার সংস্কৃতির উপর আঘাত আসুক না কেনো; এদেশের মানুষের রক্তে মিশে আছে সংস্কৃতি। কিংবা মুক্ত চিন্তাধারা। সেটা হয়তো আমরা অনেকেই জানি না কিংবা বুঝি না।

একটি ছোট্ট চা দোকানে যে আড্ডা বসে সেখানে কিন্তু রাজনৈতিক সমালচনাটাই বেশী হয়। সেই আলোচনা কিংবা সমালোচনাটা কিন্তু মুক্ত চিন্তা-ধারা থেকেই আসে। গ্রামের মানুষ ধর্ম সম্পর্কে খুবই সচেতন। তাও আমরা জানি। কিন্তু তাদের গিয়ে একটু গান গাইতে বলুন; দেখবেন অসাধারণ সুর দিয়ে তারা কোনো একটি বাউল গান গেয়ে শুনিয়ে দেবে।

আবার একটি হোটেলের টিভিতে বাংলা সিনামা চলতে থাকলে দেখবেন সেখানে মানুষের ভিড়। এ থেকেই কিন্তু বোঝা যায় বাংলার মানুষ নিজের অজান্তেই দেশীয় সংস্কৃতিকে আকড়ে ধরে আছে। আমি যদি বলি দেশের কয়জন লেখক আছেন। তার জবাবে হয়তো অনেকে কিছু পরিচিত লেখকের নাম বলেই শেষ করে দিবেন। কিন্তু একটু গভীর থেকে চিন্তা করলেই দেখতে পারবেন, এ দেশে বহু মানুষ লেখালেখি করেন।

সবার লেখা হয়তো প্রকাশ হয় না। কেউ হয়তো লেখা প্রকাশ হওয়ার স্বপ্ন দেখতে দেখতে এক সময় অনুভব করেন, মৃত্যুর সময় হয়ে গেছে। আবার অনেকে শুধু নিজের জন্যই লিখে জীবন পার করে দেন। তাও যদি বাদ দেই; তাহলে শুধু মাত্র যেই ব্যক্তিটি ডাইরী লিখেন, তিনিও কিন্তু একজন লেখক। একই ব্যাপার একজন গায়ক, নৃত্য শিল্পী, অংকন শিল্পীর জন্যও।

বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্তে কতো হাজার প্রতিভা লুকিয়ে আছে তা বলা মুশকিল। কত প্রতিভাশালী মানুষ হয়তো জানেই না যে তার মধ্যে ঈশ্বর দান করেছেন শিল্পের অপার সৌন্দর্য। সেই না জানা মানুষগুলো হয়তো আলোচনার মাঝে আসতে পারেন না। প্রচার পান না। আসবেন বাইবা কেন! শিল্প চর্চাতো আর তারা প্রচারের জন্য করেননি।

তেমনই এক প্রতিভাবান মানুষের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্যই আমার এই পোষ্ট। ছেলেটার নাম ফারহাত রহমান খান। বয়স খুব একটা বেশী না। মাত্র ২৩ বছরের এই যুবকের সাথে আমার পরিচয় ভার্সিটির একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করতে গিয়ে। আমরা একজন মেইল সিঙ্গার খুজছিলাম।

তখন শান্ত-শিষ্ট একটি ছেলে এসে হাজির হয়। গানের গলা আমাদের মুগ্ধ করে ফেলে। বিশেষ করে আমরা আরও মুগ্ধ হই যখন আমাদের একটি পোষ্টার বানানোর জন্য কার্টুনিস্ট খুজতে যাই। আচমকা সে নিজেই একটি কার্টুন একে পোষ্টারটা বানিয়ে দেয়। মুগ্ধ হই বার বার।

আবার মঞ্চ নাটকে তার অভিনয়ের পারদর্শীতা আমাকে অবাক করে। ভেবে পাই না বিধার শিল্পের সমস্ত রুপ যেনো তাকেই দান করে দিয়েছেন। শিল্প মানুষকে তার প্রয়োজন মতো উন্মুক্ত করে দেয়। শিল্পের সেই অপার সৌন্দর্য যেনো শুধু তাকে ঘিরেই রয়েছে। কিছুদিন আগে শুনলাম আগামী ফেব্রুয়ারীতে একটি মিক্সড অ্যালবামে তার একটি গান যাচ্ছে।

ওদের ব্যান্ডের গান। ব্যান্ডের নাম, স্টোরী টেলারস। যার অর্থ দাড়ায় ওরা গল্প বলতে এসেছে। সত্যিই ওরা হয়তো গল্প বলবে। গানের মধ্য দিয়ে হয়তো ওরা গল্প বলবে।

মানুষকে যাতে ওরা গল্প বলে মুগ্ধ করতে পারে সেই দোয়া করি। শুধু কি তাই! উটো এডিটিংয়েও তার পারদর্শিতা। আমার ব্লগ প্রফাইলের ছবিটি অনেকেই বলেন সুন্দর ছবি। আসলে একটি অসুন্দর ছবিটিকে ফারহাত এডিট করে অসাধারণ করে দিয়েছে। আমাকে প্রায়ই বলে, শেরিফ ভাই আমি লিখতে চাই।

কেমনে লিখতে হয়? এমন প্রশ্ন আমিও এক সময় অনেক কেই করেছি। কিন্তু উত্তর পাইনি। সবার একই কথা, লিখতে থাকো। যা মনে চায় তাই লেখো। তাই আমি লিখেই যাচ্ছি।

যা মনে চায় তাই লিখে যাচ্ছি। লেখার মাথা মন্ডু কিছুই হয় না; তাও লিখছি। যাই হোক, আমিও ফারহাতকে বললাম, ফারহাত যা মনে আসে তাই লেখো। তাহলেই একটা লেখা হয়ে যাবে। আজ হঠাৎ একটি কবিতা সে ফেইসবুকে দিয়েছে।

আর আমাকে বলেছে, শেরীফ ভাই বাংলায় তো টাইপ করতে পারি না। তাই ফেইসবুকেই দিছি। কেমন হইছে একটু কইয়েন। আমাকে ছেলেটি আবার মুগ্ধ করলো। কবিতা অন্তত আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে।

একজন শিল্পী যখন কোনো সৃষ্টিশীল কাজ করেন, তখন তার মগ্নতায় যা উঠে আসে তা হয় অস্তিত্ব। আমি দোয়া করি এই ছেলেটির বহুমুখী সৃষ্টিকর্ম যাতে মানুষের মাঝে উঠে আসে। তার অস্তিত্ব যাতে প্রকাশ পায় সকলের কাছে। বিধাতার যে সৌন্দর্য তাকে দিয়েছেন, সেই সৌন্দর্য যাতে সে পৃথিবীময় ছড়িয়ে দিতে পারে। দোয়া করি শিল্প ওকে যেনো আলিঙ্গণ করে উন্মুক্ত করে।

এবং এই প্রতিভাবান শিল্পীর জন্য আমার রইলো শুভকামনা। ফারহাত রহমান খানের লেখা কবিতা; ক্ষণ আবার ফিরে যাই আজ স্মৃতির ফেলে আসা সেই মেঠো পথে। চেনা মুহূর্তরা খেলা করে আমায় ঘিরে, হাত বাড়িয়ে দেই স্পর্শ করবো বলে পারিনি ছুঁতে..... শূণ্যে মিলিয়ে যায় ধোঁয়া হয়ে; কাঁদিয়ে আমায়। আমার পথের বাঁকে ঝরে থাকা কিছু শুকè পাতা সরে যায় মাতাল হাওয়াতে; আমি চেয়ে দেখি পাতার শরীরে সব চেনা দুঃখরা করছে উপহাস। আমিও হাসি তাদের দেখে।

সরে যাওয়া পাতার নিচে কিছু মিথ্যে স্বপ্ন হাত বাড়িয়ে ডাকে আমায়। স্বাদ জাগে আলিঙ্গণ করি তাদের; তবুও থেমে যাই ভাবি একলা মনে পৃথিবীটা পাথরের, স্বপ্নগুলো কাঁচের। ঝরা পাতাগুলো যেমন সরে যায় মুহূর্তগুলো চলে যায় মহাকালের অতল কোনো এক কালোতে। আমার বৃথা চেষ্টা ধরে রাখার চলে যাওয়া ক্ষণগুলো যারা ছিল কখনো হাসি কখনো অশ্রু হয়ে.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।