আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জার্মান ট্রেড শো...২০০৮[এ এক বিরাট ইতিহাস...!!!]

পথ বাঁধতে চেয়েছিল বন্ধনহীন গ্রন্থি...

৬, ৭, ৮ নভেম্বর, এই তিন দিন কাজ করলাম gtz এর হয়ে German Trade Show 2008 এ...কাজটা পাই হঠাত করেই আমার বান্ধবী আদিবার কাছ থেকে, বেঁচারা বিপদে পড়ে আমাকে ওর হয়ে কাজটা করতে বলে। ওর আর ওর খালাতো বোন gtz এর volunteer হবে তাই ঠিক ছিল কিন্তু হঠাত তিথির quizএর date পড়লো ৮ এ...gtz কাজ নিয়ে খুব strict তাই ও আমাকে ওর বদলে করতে বলল, আর কাজ করবে নর্থসাউথেরই একটা পিচ্চি, নাম চৈতি...আমার ক্যামেরা ফান্ডে আরো কিছু টাকা জমলেতো আমার কোনই সমস্যা নাই তাই আমি রাজী হলাম। এর পরে ৪, ৫ তারিখে interview দিতে গিয়ে বুঝলাম কাজটা হল পুরাপুরি ছ্যাঁচরা কাজ, অবশ্য বেশীরভাগ পার্ট টাইমই তাই...একটু মেজাজ খারাপ হল, আরে দুদিন পর চাকরী করবো এখন কি এইসব কাজ মানায়?...শুধু আদিবা আর আভিন আপুকে কথা দিয়ে ফেলছি তাই নিমতেতো মুখে কাজের ফিরিস্তি শুনলাম। এখন চৈতির কথা একটু বলি, চৈতিকে দেখার ১০ মিনিটের মাঝেই আমার বেদম হাসি পেতে শুরু হল, কেন জানো?...চৈতি পিচ্চি তাতো আগেই বলেছি জানলাম ও মাত্র ২য় সেমিস্টারে, মানে আমার চেয়ে ৩ বছরের ছোটো্‌... আর সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল ওর আচার-ব্যাবহারের সাথে ৩ বছর আগের এই আমার মোটামুটি ৯৫% মিল...আমি আগে যেরকম ছিলাম ফার্স্ট ইয়ারে, চৈতি এক্কেবারে তাই...তখন একটু মনটা ভাল হল, যাক সময়টা অতটা খারাপ কাটবেনা... এখন gtz নিয়ে কিছু কথা, আমরা কাজ করেছিলাম gtz PROGRESS এর সাথে। এদের কাজ মূলত social compliance নিয়ে, অফিস গুলশান ২ এ, ঝকঝকে অফিস, ঢুকেই অবশ্য চমকালাম, কারন আমিনা ম্যাম যিনি আমার আর চৈতির interview নিবেন উনি বিশাল মহিলা, কিন্তু খুবই cute। ৫ তারিখে আবার গেলাম আমাদের i.d আর t-shirt নিতে, তখন উনি আমাদের অফিসের সবার সাথে পরিচয় করায় দিলেন, আর david কে দেখেই আমি আর চৈতি ঝপাত করে প্রেমে পড়েগেলাম... হায়...এত্তো জোশ দেখতে ডেভিড যে কি বলবো...অফিস থেকে বের হয়ে এরপর দুজনেই ছুটলাম দোজা মার্কেটের দিকে, কারন আমাদের দুজনেরই t-shirt এর সাইজ [জার্মান স্মল...তাও আমার বড় মামা {যিনি বিশালদেহী} আরামে পরতে পারবেন...!!!]ব্যাপক অপছন্দ হইছে, যাই হোক ঐ একটা কথা আছেনা যে মেয়েরা একসাথে মার্কেটে গেলে হৃদ্যতা বাড়ে...ঠিক তাই ই হল, দুজনে মিলে ঘুরে ঘুরে shopping করতে গিয়ে দেখলাম স্বভাবের মতই দুজনের পছন্দও খানিকটা একই রকম। যাই হোক, মোটমাট ৩টা শার্ট, একটা প্যান্ট, দুইটা t-shirt কিনে আর gtz এর দেয়া t-shirt টা সাইজ করে যখন বের হলাম তখন চৈতির হাড়ির খবর আমার জানা হয়ে গেছে...হাহাহা... ৬ তারিখে সকালে আমাদের কাজ শুরু হল, রওনা দিয়ে দেখি মহান হাসিনা বিবির গৃহ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে জনসাধারনকে বাঁশ দেবার বিরাট আয়োজন করা হইছে, ফলস্বরূপ সেই বনানী থেকে মানিক মিয়া এভেনিউ পর্যন্ত পুরা ব্লক। গাড়ি নিয়ে বের হইনাই দেখে আনন্দ হল... রিকশা করে চীন মৈত্রীতে পৌছাতে আমার লাগলো ৪০ মিনিট!!!...আমার বাসা মানিক মিয়াতে...তাহলে অবস্থা বুঝেন একবার... যাই হোক গিয়ে দেখলাম মোটামুটি মানুষ জন কেউই আসতেই পারেনাই জ্যামের জন্য... একা একা ঘুরলাম খানিকক্ষন...চৈতি তখনও পৌছায়নাই, আর আমাদের বুথে খালি নাসরিন আপু এসে পৌছাইসেন...আর শুনলাম মোরশেদ ভাই অনেক দূর গাড়ি রেখে হেটে রওনা দিসেন...কি অবস্থা...নাসরিন আপু আর মোরশেদ ভাই ৬ তারিখ বুথে থাকবেন ৭ এ আবার আরও দুইজন আসবেন। চৈতি এলো ১০টার কিছু পরে...এরপর থেকে মানুষজন আসতে শুরু করলো...আমাদের কাজ হল ঘুরে বেড়ানো আর মানুষজঙ্কে gtz progress এর কাজ বুঝানোর পর আমাদের বুথে একটা কুইজ হচ্ছে সেখানে তাদের ফরোয়ার্ড করা...আমরা কাজ শুরু করলাম...এবং দেখলাম প্রথম দিন বলে আজকে যারা আসছেন তারা সবাই বিগ শট এবং তারা সরাসরি কনফারেন্সে দৌড়াচ্ছেন...খানিকক্ষণ দৌড়াদৌড়িরত মানুষজনের সাথে কথা বলার ব্যর্থ চেষ্টা করে আমরা ক্ষ্যান্ত দিলাম...তারপরে ভাবলাম আরে আমরাওতো মানুষ...আমাদেরওতো সখ আহ্লাদ আছে[!]...তাই আমরা দুজনে একসাথে শুরু করলাম এই স্টল থেকে ঐ স্টলে ঘুরাঘুরি...[কাজের সময় আমাদের একসাথে থাকার কথা না...আমিনা ম্যাম পইপই করে বলে দিয়েছেন...হেহে!]...ঘোরার মত স্টল ছিল মাত্র দু'একটাই অবশ্য...মানে আমাদের জন্য আরকি...টি. কে এন্টারপ্রাইজ - যেখানে আছে চামড়ার তৈরী জিনিসপত্র [ ফ্রম জুতা টু বিরাট আজদাহা আয়না যার ফ্রেম চামড়ার...], পিকার্ড - যেখানে আছে লেডিস ব্যাগ [যেটা আমি আমার এই জন্মে কিনতে পারবোনা { মানে নিজের পয়সায়...আমার জামাই পয়সা দিলে আমিতো খুশি...হেহে...}...খালি ওয়ালেটগুলা আমাদের বাজেটের ভিতর [দাম শুরু ৮৫০টাকা থেকে...]...তবে এই ওয়ালেট কিনে ভিতরে এক দেড় হাজার টাকা না রাখতে পারলে কিনার কোন মানে হয়না তাই মানে মানে দীর্ঘশ্বাস ফেলে সড়ে আসাটাই ভাল হবে...আর আছে লাভলী থিংস - মূলত মুক্তার গয়না আর রাজশাহী সিল্কের জিনিসপাতি [মুক্তার গয়না গুলি সুন্দর কিন্তু আমি মুক্তা তেমন পছন্দ করিনা...আর রাজশাহী সিল্ক আমার পছন্দের হলেও এখানে পাওয়া যাচ্ছে খালি স্কার্ফ যার দাম ১২০০টাকা...{আরে আমার ঘাড়ের উপর মাথাটার দাম কি ১২০০টাকা?}...যে আমি ১২০০টাকার স্কার্ফ কিনব?...নাকি আমার টাকায় আমারে কামরাইতেসে...যত্তসব!!!]...আর ডার্মা কালার ক্যামোফ্লেজ সিস্টেমের একটা দোকান...[নাম ভুইলা গেসিগা...][বাপরে কি যে মেক আপের বাহার...সত্যই আমার চেহারা আমার বাপের লাহান করা যাইবো মনে হইসে...]...ঘোরার মত আদতে এই কয়টা স্টল মনে হলে কিহবে?...আমরা কি দমে যাবার মানুষ...?...মোটেই না...প্রথম দিন আমরা খুব সিরিয়াস ভাবে কাজ করতে গিয়েই বুঝলাম যে আসলে মানুষজনের সাথে হেসে কথা বলে তাদের বাংলাদেশের শ্রম আইন সম্পর্কে আগ্রহী করে তোলাই আমাদের কাজ...সেটা হতে পারে যেকোন কেউই...অন্যান্য স্টলের মানুষও বাদ যাবেনা...তাই যখন মানুষজনের ভিড় কম থাকতো আমরা দুজন শুরু করলাম বিভিন্ন স্টলের মানুষজনের সাথে গল্প গুজব... সে এক মজার কান্ড... [চলবে মনে হয়......এ এক বিরাট ইতিহাস...]

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.