আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নরকের জল্লাদ।। বন্ধু পরিবহন।।



নরকের জল্লাদ। । বন্ধু পরিবহন। । রামপুরা রোডে জ্যাম লাগে, রাত দশটার দিকে।

মেজাজ তখন খিঁচড়া যায়। উল্টা-পাল্টা রিকশা চলে। বাসগুলা দাঁড়ায় রাস্তার মাঝখানে। আর সবচে' দুর্বিনীত যার চলাফেরা, তিনি 'বন্ধু পরিবহন'। বাংলাভাষার পত্রিকাগুলাতে এর নাম দেয়া হইছে, হিউম্যান হলার।

এইটা একবার বামদিকে যায়, তো আরেকবার ডানদিকে। যে কোন জায়গাতেই থেমে যাওয়ার সম্ভাবনা সে রাখে। আমি এইটার গতিপথ বুঝতেই পারি না। রিকশাতে বইসা ধন্ধে পইড়া যাই। যে কোন সময়ই সে যে কোন রিকশাকে চাপা দিতে পারে অথবা নিজেও গোত্তা খাইয়া পড়তে পারে।

ধুম কইরা স্টার্ট নিয়া একেবেঁকে চলে সে। আবার থামেও ধুম কইরা। মাঝে মাঝে মনে হয়, এই শহরের মেয়র হইলে, এইগুলার ড্রাইভাররে ধইরা পাছায় ইচ্ছামতো বাড়ি লাগাইতাম। যদিও এর ভিতরে বসে থাকা মানুষগুলার জন্য খারাপ লাগে, কারণ এত চিপাচিপি কইরা বসে যে, দমবন্ধ হইয়া যাওয়ার অবস্থা। আমি পারতপক্ষে এতে উঠি না।

উঠতেও ঝামেলা, নামতেও ঝামেলা। তার দুর্দান্ত গতির ভিতর বসে আমার হয়তো মইরা যাইতে ইচ্ছা করবে! গতির এতো ভ্যারিয়েশন, শরীর আমার মানবে তো, এই সন্দেহও হয়!! যা-ই হোক, এতদিন, যন্ত্র হিসাবে ভীতিপ্রদ মনে হইলেও, ড্রাইভারের উপর আমার রাগ অব্যাহত ছিল। রিকশা কইরা ফিরতেছিলাম। রামপুরা বাজারের একটু আগে। ধুম কইরা একটা বন্ধু পরিবহন ডানপাশ দিয়া আইসা বামে ব্রেক কষলো।

মেজাজ পুরা বিলা হয়া গেলো। রিকশাওলা ভালো মানুষ। স্পিড কমাইয়া তারে বামদিকে রাইখা পাশ দিয়া যাইতেছিলো। তখন বন্ধু পরিবহন এর ড্রাইভাররে দেখলাম। ১৪-১৫ বছর বয়স।

ঘামে পুরা মুখ ভিজা। হাঁপাইতেছে, মনে হইলো। ভিতরে লোকজনের চেঁচামেচি। মানুষ নামতেছে, উঠতেছে, চেচাঁইতাছে হেল্পার। ড্রাইভারের এইসবকিছুতেই কোন খেয়াল নাই।

হাসফাঁস করতেছে আর সামনের দিকে তাকাইয়া আছে। মনে হইলো, সে যেন নরকের জল্লাদ। একবার বামে তাকানোর চেষ্টা করলো, হেল্পার এর আওয়াজ শোনার জন্য। তারপর সমানের দিকে তাকইলো। তার চোখ দেইখা মনে হইলো, স্টার্ট দিবার পর সামনে যে রিকশাটা পাইবো ওইটার পাছা বরাবর ঢুকাইয়া দিবো, গাড়িটা।

১৩.০৩.০৮ দুপুর ১২:১৩

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।